ঢাকা ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ মার্চ ২০২৫, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুইজনের ফাঁসি রাতে, খাওয়ানো হলো পছন্দের খাবার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:২৬:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অক্টোবর ২০২১
  • ২০২ বার পড়া হয়েছে।

যশোর:

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই বান্ধবী ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হবে আজ সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে। ফাঁসির রায় কার্যকর করতে ৬ জন জল্লাদ প্রস্তুত রয়েছে। তাদের পছন্দের খাবারও খাওয়ানো হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের দুই আসামি আজিজুল ওরফে আজিদ ওরফে আজিজ (৫০) ও মিন্টু ওরফে কালু (৫০)। আসামিদের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করানো হয়েছে।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান বলেন, আজ রাত ১০টা ৪৫ মিনিটেই আজিজ ও কালুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। এ সংক্রান্ত সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, সিভিল সার্জন, চিকিৎসক উপস্থিত থাকবেন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে ৬ জন জল্লাদ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারা হলেন- তেতু কামাল, মশিয়ার, লিটু ফকির, কাদের, আজিজুল ও রমজান। তারা প্রত্যেকেই ত্রিশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত।

তিনি আরও বলেন, দুইজনের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করানো হয়েছে। তারা রোববার ইলিশ মাছ, গরুর কলিজা, তন্দুল রুটি ও মুরগির গ্রিল খেয়েছেন। আজ (সোমবার) মুরগির মাংস ও দই খাওয়ানো হয়েছে। তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন।

জানা যায়, ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা থানার জোড়গাছা গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয় রায়লক্ষ্মীপুর মাঠে। এ ঘটনায় খুনের পরদিন নিহত কমেলা খাতুনের মেয়ে নারগিস বেগম আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুইজনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর দুজন হলেন একই গ্রামের সুজন ও মহি।

মামলা বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান আসামি মহি। ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সুজন, আজিজ ও মিন্টুকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। এরপর আসামিপক্ষের লোকজন হাইকোর্টে আপিল করেন। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ দুই আসামির রায় বহাল রাখেন এবং আরেক আসামি সুজনকে খালাস দেন। ২০ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান খালাসপ্রাপ্ত সুজন।

চলতি বছরের ২৭ জুলাই তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। আবেদন নামঞ্জুর সংক্রান্ত চিঠি গত ৮ সেপ্টেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষকে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ফাঁসির রায় কার্যকরের দিন নির্ধারণ করে কারা কর্তৃপক্ষ।

২০০৭ সালের ১০ জুলাই চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার থেকে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত এই দুই আসামিকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এতদিন এখানেই বন্দি আছেন তারা।

Tag :

দুইজনের ফাঁসি রাতে, খাওয়ানো হলো পছন্দের খাবার

Update Time : ০৮:২৬:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অক্টোবর ২০২১

যশোর:

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই বান্ধবী ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হবে আজ সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে। ফাঁসির রায় কার্যকর করতে ৬ জন জল্লাদ প্রস্তুত রয়েছে। তাদের পছন্দের খাবারও খাওয়ানো হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের দুই আসামি আজিজুল ওরফে আজিদ ওরফে আজিজ (৫০) ও মিন্টু ওরফে কালু (৫০)। আসামিদের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করানো হয়েছে।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান বলেন, আজ রাত ১০টা ৪৫ মিনিটেই আজিজ ও কালুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। এ সংক্রান্ত সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, সিভিল সার্জন, চিকিৎসক উপস্থিত থাকবেন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে ৬ জন জল্লাদ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারা হলেন- তেতু কামাল, মশিয়ার, লিটু ফকির, কাদের, আজিজুল ও রমজান। তারা প্রত্যেকেই ত্রিশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত।

তিনি আরও বলেন, দুইজনের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করানো হয়েছে। তারা রোববার ইলিশ মাছ, গরুর কলিজা, তন্দুল রুটি ও মুরগির গ্রিল খেয়েছেন। আজ (সোমবার) মুরগির মাংস ও দই খাওয়ানো হয়েছে। তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন।

জানা যায়, ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা থানার জোড়গাছা গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয় রায়লক্ষ্মীপুর মাঠে। এ ঘটনায় খুনের পরদিন নিহত কমেলা খাতুনের মেয়ে নারগিস বেগম আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুইজনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর দুজন হলেন একই গ্রামের সুজন ও মহি।

মামলা বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান আসামি মহি। ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সুজন, আজিজ ও মিন্টুকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। এরপর আসামিপক্ষের লোকজন হাইকোর্টে আপিল করেন। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ দুই আসামির রায় বহাল রাখেন এবং আরেক আসামি সুজনকে খালাস দেন। ২০ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান খালাসপ্রাপ্ত সুজন।

চলতি বছরের ২৭ জুলাই তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। আবেদন নামঞ্জুর সংক্রান্ত চিঠি গত ৮ সেপ্টেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষকে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ফাঁসির রায় কার্যকরের দিন নির্ধারণ করে কারা কর্তৃপক্ষ।

২০০৭ সালের ১০ জুলাই চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার থেকে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত এই দুই আসামিকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এতদিন এখানেই বন্দি আছেন তারা।