বারবার সাংবাদিকদের হুমকি-হত্যা, দমে যাননি নোবেলজয়ী সম্পাদক
সবুজদেশ ডেস্কঃ
বাকস্বাধীনতার পক্ষে সাহসী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসার সাথে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন রাশিয়ার সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতফ।
দিমিত্রি মুরাতফ রুশ সংবাদপত্র নোভায়া গ্যাজেট এর প্রধান সম্পাদক, যা চালু হওয়ার পর থেকে কয়েক দশক ধরে সরকারের সর্বোচ্চ স্তরের দুর্নীতির খবর বারবার প্রকাশ করে আসছে। নোবেল কমিটি এটিকে “বর্তমান সময়ে রাশিয়ার সবচেয়ে স্বাধীন সংবাদপত্র” হিসেবে এবং মুরাতফের কাজকে নিজ দেশের “গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা” বলে বর্ণনা করেছে।
রেডিও ফ্রি ইউরোপকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মুরাতফ বলেন, “আমরা দেশজুড়ে সব অঞ্চলেই কাজ করি। সারা দেশে আমাদের কয়েক ডজন ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। আমরা আমাদের জাতির সংবাদমাধ্যম।”
উল্লেখ্য, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির মহাসচিব এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভ পত্রিকাটির অর্থায়ন করেন। ১৯৯০ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। পুরস্কার থেকে পাওয়া অর্থ তিনি পত্রিকার কাজে ব্যয় করেন।
২০০৬ সালে পত্রিকাটির তারকা রিপোর্টার আনা পোলিটকোভস্কায়াকে হত্যা করা হয়।তিনি অবিরামভাবে চেচনিয়াতে নৃশংসতা এবং রাশিয়াজুড়ে দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করেছিলেন। মুরাতফ আনাকে হত্যার পরিকল্পনাকারীদের খুঁজে বের করতে নিজের অপারগতার কথা স্বীকার করেন।
নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আগের দিন মুরাতফ বলেছিলেন, “যারা রাশিয়ার সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে আগ্রাসী আচরণ করেন তারা ভাবেন যে তাদের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতো শক্তিশালী সহযোগী রয়েছে। সুতরাং, তারা যদি ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও হত্যা রহস্য উদঘাটন করতে না পারে তাহলে বুঝতে হবে তারা ঘটনাটা জানে, কিন্তু বলবে না।”
শুধু আনা-ই নন, নোভায়া গ্যাজেট এর আরো পাঁচজন সাংবাদিক এবং কন্ট্রিবিউটরকে হত্যা করা হয়েছে। আর সাংবাদিকদের হত্যার হুমকিতো দেয়া হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে।
রাশিয়ায় গণমাধ্যমের উপর যখন অত্যাচার চলছে তখনই মুরাতফের নোবেল বিজয়ের খবর এলো। অনেককেই এখন ‘বিদেশী এজেন্ট’ আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের বিধিনিষেধ জারি করা হচ্ছে।
বিবিসি জানিয়েছে- নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে মুরাতফ বলেছেনঃ
“আমরা রাশিয়ার সংবাদিকতার প্রতিনিধিত্ব করে যাবো যা এখন হুমকিতে। যাদেরকে ‘বিদেশী এজেন্ট’ বলা হচ্ছে, যাদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে, আমরা তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করবো।”