ঢাকা ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীম ও তার ৭ দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন

Reporter Name

ঢাকা:

কথিত যুবলীগ নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তার সাত দেহরক্ষীকেও যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর গুলশান থানায় করা অস্ত্র আইনের মামলায় দেওয়া হয় এই দণ্ড। একই সঙ্গে সব আসামির লাইসেন্স করা অস্ত্র রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় জি কে শামীমকে।

যাবজ্জীবন পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মুরাদ হোসেন। এরা জি কে শামীমের দেহরক্ষী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পেশকার গোলাম নবী।

র আগে ২৮ আগস্ট মামলাটির যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করেছিলেন।

২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিজ কার্যালয়ে সাত দেহরক্ষীসহ গ্রেফতার হন জি কে শামীম। নিকেতন এ-ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১৪৪ নম্বর বাড়িতে তার অফিসে ১১ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র‌্যাব।

সেসময় তার কার্যালয় থেকে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরের ডলার, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর, অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।

পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থপাচার আইনে তিনটি মামলা করে র‌্যাব। মামলার এজাহারে শামীমকে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাগুলো বিচারাধীন।

এরপর ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১ এর উপ-পরিদর্শক শেখর চন্দ্র মল্লিক অস্ত্র মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগপত্র করে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই আদালত। এ মামলায় ১০ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি আমিনুল ইসলাম জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়েছে মর্মে ডকুমেন্ট দেখালেও তা যাচাইয়ে তার সঠিকতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ওই অস্ত্রের নকল কাগজপত্র নিয়ে ২০১৭ সালে প্রথমে এসএম বিল্ডাস কোম্পানিতে যোগদান করেন তিনি। পরে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি জি কে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে যোগদান করে কাজ করে আসছিলেন। তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্রটি ৭০ হাজার টাকায় ক্রয় করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করেন।

এছাড়া অন্যান্য আসামিরা নিরাপত্তার অজুহাতে অস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও তারা শর্ত ভঙ্গ করে অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করতেন। এর মাধ্যমে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসা করে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন।

About Author Information
আপডেট সময় : ০১:৪১:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
১৪৮ Time View

বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীম ও তার ৭ দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন

আপডেট সময় : ০১:৪১:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

ঢাকা:

কথিত যুবলীগ নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তার সাত দেহরক্ষীকেও যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর গুলশান থানায় করা অস্ত্র আইনের মামলায় দেওয়া হয় এই দণ্ড। একই সঙ্গে সব আসামির লাইসেন্স করা অস্ত্র রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় জি কে শামীমকে।

যাবজ্জীবন পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মুরাদ হোসেন। এরা জি কে শামীমের দেহরক্ষী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পেশকার গোলাম নবী।

র আগে ২৮ আগস্ট মামলাটির যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করেছিলেন।

২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিজ কার্যালয়ে সাত দেহরক্ষীসহ গ্রেফতার হন জি কে শামীম। নিকেতন এ-ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১৪৪ নম্বর বাড়িতে তার অফিসে ১১ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র‌্যাব।

সেসময় তার কার্যালয় থেকে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরের ডলার, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর, অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।

পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থপাচার আইনে তিনটি মামলা করে র‌্যাব। মামলার এজাহারে শামীমকে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাগুলো বিচারাধীন।

এরপর ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১ এর উপ-পরিদর্শক শেখর চন্দ্র মল্লিক অস্ত্র মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগপত্র করে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই আদালত। এ মামলায় ১০ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি আমিনুল ইসলাম জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়েছে মর্মে ডকুমেন্ট দেখালেও তা যাচাইয়ে তার সঠিকতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ওই অস্ত্রের নকল কাগজপত্র নিয়ে ২০১৭ সালে প্রথমে এসএম বিল্ডাস কোম্পানিতে যোগদান করেন তিনি। পরে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি জি কে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে যোগদান করে কাজ করে আসছিলেন। তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্রটি ৭০ হাজার টাকায় ক্রয় করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করেন।

এছাড়া অন্যান্য আসামিরা নিরাপত্তার অজুহাতে অস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও তারা শর্ত ভঙ্গ করে অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করতেন। এর মাধ্যমে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসা করে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন।