ঢাকা ১১:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে কারাভোগ শেষে ভারত গেল সুমনের পরিবার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৩৮:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২
  • ১৩৯ বার পড়া হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গাঃ

অবৈধ পথে বাংলাদেশে এসে ধরা পড়ে ১৮ মাস জেল খেটে অবশেষে নিজ দেশে ফেরত গেল এক ভারতীয় পরিবার। সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা বন্দর চেকপোস্টে অনুষ্ঠিত এক পতাকা বৈকের মাধ্যমে তাদের হস্তান্তর করা হয়।

জানা যায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হাবড়া থানার হায়দার বিলিয়া গ্রামের সুমন দে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্ব-পরিবারে যশোর জেলার রূপদিয়ায় মামা বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সঙ্গে ছিল স্ত্রী সুজাতা দে ও ছেলে শুভজিৎ দে। ভারতের ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা বন্দর এলাকা দিয়ে রাজু নামের এক দালালের মাধ্যমে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আসেন সুমন দে।  

সুমন দে বলেন, “পাসপোর্ট ছিল না। সেদিন ১৯ হাজার টাকার বিনিময়ে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয় দালাল রাজু। এরপর মামার বাড়ি যশোর জেলার রূপদিয়া পৌছে যায়। এক মাস ছিলাম মামার বাড়িতে। এরপর গত বছরের ২২ মার্চ নিজের দেশে বাড়িতে ফিরে যাবার উদ্দেশে দালাল ধরে চলে আসি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্তে। সেখানে শ্রীনাথপুর সীমান্ত এলাকায় বিজিবির হাতে ধরা পড়ি। এরপর ঠাঁই হয় কারাগারে।”

সুমন দে আরও বলেন, “আদালত অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৩ মাস কারাদণ্ড দেন। কিন্তু অভিবাসন জটিলতায় কারাভোগের মেয়াদ শেষ হলেও ১৮ মাস ১৮ দিন জেলে থাকতে হয়েছে। আজ দেশে ফিরতে পারছি। খুব ভাল লাগছে। বাড়িতে আমার আরও দুটি মেয়ে আছে। তাদের মুখটা দেখি না অনেকদিন।”

কাকাবাবু সুখেন্দ্র দের সঙ্গে দর্শনা সীমান্তে বাবা-মা-ভাইকে গ্রহণ করতে এসেছিলেন সুমন দের মেয়ে চিত্রা দে। দীর্ঘদিন পর মা-বাবা ও একমাত্র ভাইকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন মা-মেয়ে।

সুমন দের স্ত্রী সুজাতা দে বলেন, “একটি ভুলের জীবন থেকে প্রায় দুটি বছর ঝরে গেল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমার ছেলেটির। সে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। তাকেও এই ১৮ মাস জেলে থাকতে হয়েছে। বৈধ পথে পাসপোর্ট ভিসা করে বাংলাদেশে এলে এই ক্ষতিটা হতো না। আমাদের মতো কেউ যেন এমন ভুল না করে।”

হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন দু- দেশের বিজিবি-বিএসএফ, ইমিগ্রেশন পুলিশ, থানা পুলিশ, কারা কর্মকর্তা, ডিআইবি ও কাস্টমসের কর্মকর্তারা। 
সোমবার দুপুরে দর্শনা চেকপোস্টের ৭৬নং মেইন পিলারের কাছে শূন্য রেখায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

Tag :
জনপ্রিয়

বাংলাদেশে কারাভোগ শেষে ভারত গেল সুমনের পরিবার

Update Time : ০৮:৩৮:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২

চুয়াডাঙ্গাঃ

অবৈধ পথে বাংলাদেশে এসে ধরা পড়ে ১৮ মাস জেল খেটে অবশেষে নিজ দেশে ফেরত গেল এক ভারতীয় পরিবার। সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা বন্দর চেকপোস্টে অনুষ্ঠিত এক পতাকা বৈকের মাধ্যমে তাদের হস্তান্তর করা হয়।

জানা যায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হাবড়া থানার হায়দার বিলিয়া গ্রামের সুমন দে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্ব-পরিবারে যশোর জেলার রূপদিয়ায় মামা বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সঙ্গে ছিল স্ত্রী সুজাতা দে ও ছেলে শুভজিৎ দে। ভারতের ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা বন্দর এলাকা দিয়ে রাজু নামের এক দালালের মাধ্যমে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আসেন সুমন দে।  

সুমন দে বলেন, “পাসপোর্ট ছিল না। সেদিন ১৯ হাজার টাকার বিনিময়ে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয় দালাল রাজু। এরপর মামার বাড়ি যশোর জেলার রূপদিয়া পৌছে যায়। এক মাস ছিলাম মামার বাড়িতে। এরপর গত বছরের ২২ মার্চ নিজের দেশে বাড়িতে ফিরে যাবার উদ্দেশে দালাল ধরে চলে আসি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্তে। সেখানে শ্রীনাথপুর সীমান্ত এলাকায় বিজিবির হাতে ধরা পড়ি। এরপর ঠাঁই হয় কারাগারে।”

সুমন দে আরও বলেন, “আদালত অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৩ মাস কারাদণ্ড দেন। কিন্তু অভিবাসন জটিলতায় কারাভোগের মেয়াদ শেষ হলেও ১৮ মাস ১৮ দিন জেলে থাকতে হয়েছে। আজ দেশে ফিরতে পারছি। খুব ভাল লাগছে। বাড়িতে আমার আরও দুটি মেয়ে আছে। তাদের মুখটা দেখি না অনেকদিন।”

কাকাবাবু সুখেন্দ্র দের সঙ্গে দর্শনা সীমান্তে বাবা-মা-ভাইকে গ্রহণ করতে এসেছিলেন সুমন দের মেয়ে চিত্রা দে। দীর্ঘদিন পর মা-বাবা ও একমাত্র ভাইকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন মা-মেয়ে।

সুমন দের স্ত্রী সুজাতা দে বলেন, “একটি ভুলের জীবন থেকে প্রায় দুটি বছর ঝরে গেল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমার ছেলেটির। সে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। তাকেও এই ১৮ মাস জেলে থাকতে হয়েছে। বৈধ পথে পাসপোর্ট ভিসা করে বাংলাদেশে এলে এই ক্ষতিটা হতো না। আমাদের মতো কেউ যেন এমন ভুল না করে।”

হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন দু- দেশের বিজিবি-বিএসএফ, ইমিগ্রেশন পুলিশ, থানা পুলিশ, কারা কর্মকর্তা, ডিআইবি ও কাস্টমসের কর্মকর্তারা। 
সোমবার দুপুরে দর্শনা চেকপোস্টের ৭৬নং মেইন পিলারের কাছে শূন্য রেখায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।