দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে টিকে থাকল পাকিস্তান!
সবুজদেশ ডেস্কঃ
দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয়ে টিকে থাকল পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার সিডনিতে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ৩৩ রানে জিতলেন বাবর আজমরা।
এই জয়ে চার ম্যাচে চার পয়েন্ট হলো পাকিস্তানের। ব্যাটে-বলে দুরন্ত খেললেন শাদাব খান। প্রথমে ঝোড়ো অর্ধশতক, পরে বল হাতে তুলে নিলেন দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। হলেন ম্যাচের সেরা।
প্রথম ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। ওয়েন পার্নেলকে চার মারার পরেই বোল্ড হয়ে যান ইনফর্ম মোহাম্মদ রিজওয়ান। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক বাবর আজমও। ধরে খেলে ইনিংস এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু লুঙ্গি এনগিদিকে মারতে গিয়ে আউট হন। পিছন দিকে অনেকটা দৌড়ে ক্যাচ নেন কাগিসো রাবাদা।
প্রাথমিক ধস সামলে অবশ্য পাকিস্তানকে বেশ কিছুটা এগিয়ে দেন মোহাম্মদ হারিস। চোট পাওয়া ফখর জামানের জায়গায় দলে সুযোগ পেয়ে এই ম্যাচে প্রথমবার বিশ্বকাপে নামলেন। শুরু থেকেই প্রোটিয়া পেসারদের ওপর আক্রমণ শুরু করেন তিনি। রাবাদা, এনরিখ নরকিয়া, পার্নেল- কাউকেই ছাড়লেন না। তবে বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি এই মারকুটে। নরকিয়ার বলে আড়াআড়ি ভাবে ব্যাট চালাতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন হারিস।
৯৫ রানে পাঁচ উইকেট হারানো পাকিস্তান যে তবুও চ্যালেঞ্জিং স্কোরে পৌঁছাল, তার পিছনে রয়েছেন দুই ব্যাটার- ইফতিখার আহমেদ এবং শাদাব খান। এর মধ্যে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন শাদাব। তিনটি চার এবং চারটি ছয়ের সাহায্যে ২২ বলে ৫২ রান করেন তিনি।
আর ইফতিখার করেন ৩৫ বলে ৫১ রান। তিনটি চার এবং দু’টি ছয় মেরেছেন তিনি। এই দুজনের ব্যাটেই মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে জয়ের জন্য ১৮৬ রানের লক্ষ্য দেয় পাকিস্তান।
যে রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ছন্দে থাকা কুইন্টন ডি’কক এবং রাইলি রুশো ফিরে যান শুরুতেই। ১৬ রানে ২ উইকেট পড়ে যায় প্রোটিয়াদের।
চলতি প্রতিযোগিতায় খারাপ খেলার পর এই ম্যাচে ছন্দে থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন টেম্বা বাভুমা। তবে তিনিও ফিরে যান ১৯ বলে ৩৬ করে, শাদাবের শিকার হয়ে। একই ওভারে পাক লেগ স্পিনার ফিরিয়ে দেন এইডেন মার্করামকেও (২০)। আর ওই দু’টি উইকেটই মূলত ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর যখন ৯ ওভারে ৬৯, তখনই নামে বেরসিক বৃষ্টি। ম্যাচ বন্ধ করতে বাধ্য হন আম্পায়ারদ্বয়। স্থানীয় সময় সাড়ে ৯টা পেরিয়ে যাওয়ায় ওভার যে কমবে, তা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে যে কঠিন লক্ষ্যমাত্রা থাকবে, সেটাও স্পষ্ট ছিল। এছাড়া ম্যাচ আর শুরু না হলে ১৫ রানে হারত তারা।
তবে খেলা পরে শুরু হওয়ায় এবং দক্ষিণ আফ্রিকা বেশি উইকেট হারানোর কারণে তাদের লক্ষ্যমাত্রাটাও বেড়ে যায়। ম্যাচ কমে দাঁড়ায় ১৪ ওভারে। যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ১৪২। অর্থাৎ পাঁচ ওভারে তাদের তুলতে হত ৭৩ রান।
হেনরিখ ক্লাসেন এবং ট্রিস্টান স্টাবস শুরুটা ভালোই করেছিলেন। প্রথম দু’ওভার থেকে প্রায় ৩০-এর কাছাকাছি রান আদায় করেন দুজনে। কিন্তু সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি প্রোটিয়ারা। পরের তিন ওভারে সবাই মারতে গিয়েই আউট হয়ে যান। দক্ষিণ আফ্রিকা থেমে যায় ১০৮ রানেই।
ফলে ৩৩ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাবর আজমের দল। সেইসঙ্গে টিকে থাকল তাদের সেমিফাইনালে যাওয়ার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনাও।