ঢাকা ০২:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে পাখি হত্যায় বর্বর কৌশল

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:১৫:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১২৩ বার পড়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

পাখি হত্যায় অমানবিক দৃশ্য যে কোন বর্বরতাকেও হারা মানায়। গম ক্ষেত তছরুপ করায় বিষ দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি হত্যার পর মৃতদেহ লাঠির আগায় বেঁধে ক্ষেতের মধ্যেই ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এমন বিভৎস্য দৃশ্য

বৃহস্পতিবার দেখো গেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাকড়ি গ্রামের। এই গ্রামে গমক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করে ৬০/৭০টি পাখি হত্যা করা হয়েছে। আর এই কান্ডটি ঘটিয়েছেন বাকড়ী গ্রামের গমচাষি মননু মিয়া। বিষ দিয়ে তিনি পাখি হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হননি, আর যাতে ক্ষেতে পাখি না বসে সে জন্য পাখির মৃতদেহ লাঠির আগায় বেঁধে ক্ষেতের মধ্যেই ঝুলিয়ে রাখা হয়।

গ্রামবাসি আব্দুর রহমান জানান, চাষি মননু ১৮ কাঠা জমিতে গম বীজ বপন করেন। ক্ষেতে শালিক ও ঘুঘুসহ অন্য পাখি বীজ খেয়ে ফেলায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে জমিতে কীটনাশক ছিটিয়ে দেন। ফলে বিষ মেশানো গম খেয়ে একের পর এক পাখি মারা যেতে থাকে। গ্রামবাসির ভাষ্যমতে, মৃত পাখিগুলোর পা দড়ি দিয়ে বেঁধে ক্ষেতেই ঝুলিয়ে রাখেন মননু। গত এক সপ্তাহ ধরে কৃষক মননু এই অমানবিক কাজ করে যাচ্ছেন। গম ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায় মৃত পাখিগুলো পচে গেছে। আবার অনেক পাখি শেয়াল কুকুরে নিয়ে গেছে। নির্দয়ভাবে পাখি হত্যার ঘটনায় এলাকাবাসি ক্ষুদ্ধ বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ উপজেলা বন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০১২ সালের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে, পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল ও এক লাখ টাকা জরিমনান। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে অপরাধীর দুই বছরের জেল, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। তিনি বলেন বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক দিয়ে পাখি হত্যা অবশ্যই অপরাধ। এ ঘটনায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা হতে পারে। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে তিনি জানান।

Tag :

ঝিনাইদহে পাখি হত্যায় বর্বর কৌশল

Update Time : ০৬:১৫:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

পাখি হত্যায় অমানবিক দৃশ্য যে কোন বর্বরতাকেও হারা মানায়। গম ক্ষেত তছরুপ করায় বিষ দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি হত্যার পর মৃতদেহ লাঠির আগায় বেঁধে ক্ষেতের মধ্যেই ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এমন বিভৎস্য দৃশ্য

বৃহস্পতিবার দেখো গেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাকড়ি গ্রামের। এই গ্রামে গমক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করে ৬০/৭০টি পাখি হত্যা করা হয়েছে। আর এই কান্ডটি ঘটিয়েছেন বাকড়ী গ্রামের গমচাষি মননু মিয়া। বিষ দিয়ে তিনি পাখি হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হননি, আর যাতে ক্ষেতে পাখি না বসে সে জন্য পাখির মৃতদেহ লাঠির আগায় বেঁধে ক্ষেতের মধ্যেই ঝুলিয়ে রাখা হয়।

গ্রামবাসি আব্দুর রহমান জানান, চাষি মননু ১৮ কাঠা জমিতে গম বীজ বপন করেন। ক্ষেতে শালিক ও ঘুঘুসহ অন্য পাখি বীজ খেয়ে ফেলায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে জমিতে কীটনাশক ছিটিয়ে দেন। ফলে বিষ মেশানো গম খেয়ে একের পর এক পাখি মারা যেতে থাকে। গ্রামবাসির ভাষ্যমতে, মৃত পাখিগুলোর পা দড়ি দিয়ে বেঁধে ক্ষেতেই ঝুলিয়ে রাখেন মননু। গত এক সপ্তাহ ধরে কৃষক মননু এই অমানবিক কাজ করে যাচ্ছেন। গম ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায় মৃত পাখিগুলো পচে গেছে। আবার অনেক পাখি শেয়াল কুকুরে নিয়ে গেছে। নির্দয়ভাবে পাখি হত্যার ঘটনায় এলাকাবাসি ক্ষুদ্ধ বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ উপজেলা বন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০১২ সালের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে, পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল ও এক লাখ টাকা জরিমনান। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে অপরাধীর দুই বছরের জেল, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। তিনি বলেন বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক দিয়ে পাখি হত্যা অবশ্যই অপরাধ। এ ঘটনায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা হতে পারে। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে তিনি জানান।