নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ভালো করে হাটতে না পারলেও দৌড়ানোর চেষ্টা, গানের তালে তালে দিচ্ছেন হাত তালি। ভালো করে কথা বলতে না পারলেও মুখে তৃপ্তির হাসিঁ। দেখে মনে হচ্ছে বহুদিনের বন্দীদশা থেকে মুক্ত হওয়া নতুন এক সকালের দৃশ্য।
ঝিনাইদহের ড্রীমভ্যালী পার্কে কালীগঞ্জ এলাকার অবহেলিত বাক ও শ্রবণ, বুদ্ধি ও শারিরীক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বনভোজনের আয়োজন করেন পৌরসভার মেয়র আশরাফুল ইসলাম আশরাফ। শনিবার তিনি বাসযোগে কালীগঞ্জের প্রায় অর্ধশত প্রতিবন্ধিদের ঝিনাইদহের ড্রিম ভ্যালি পিকনিক স্পটে নিয়ে করেছেন বার্ষিক বনভোজন। দিনভর তাদের নিয়ে আনন্দ উল্লাস ও দুপুরের খাবারের পর তাদের চড়ালেন পার্কের বিভিন্ন রাইডসসে। এরপর অর্ধশত প্রতিবন্ধিদের মাঝে নতুন লুঙ্গি ও কম্বল উপহারও দেন মেয়র।
সকালে নাস্তা দুপুরের খাবার, নতুন জামা কাপড় দেওয়া ছাড়াও দিনভর বিনোদনরে জন্য ছিলো গান বাজনার আয়োজন। যাদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। আশির কোঠায় পা রাখা বৃদ্ধও অংশ নিয়েছে এই বনভোজনে।
আশরাফুল ইসলাম আশরাফ জানান, আমি একদিন কালীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে দাড়িয়ে ছিলাম এসময় একটা পিকনিকের গাড়ি স্ট্যান্ডে দাড়ালে দুইজন প্রতিবন্ধী সেই গাড়িতে উঠলে তারা নামিয়ে দেই। এসময় তাদের এই অবাক মলিন চাহনি দেখে আমার খারাপ লাগে। পরে চিন্তা করি তাদের নিয়ে এই ধরনের একটি আয়োজন আমি করবো। আসলে প্রতিবন্ধীরা অনেক সুযোগ সুবিধা পেলেও তাদের বিনোদনের কোন আয়োজন থাকে না সমাজে। তাই প্রতিবন্ধী মানুষদের বিনোদন দিতেই এই আয়োজন। সামনে তাদেরকে নিয়ে ভালো কিছু করার চিন্তা আছে।
তিনি আরো জানান, স্পটের আকর্ষনীয় মাইকেল মধুসুদন মঞ্চটি তাদের জন্য বরাদ্ধ নেওয়া হয়েছিল। তাদের খাবারের তালিকায় ছিল সকালে নাস্তা ও দুপুরের খাবার মেনুতে ছিল ভাত, সবজি, মাংশ, দই, কোকাকোলা সহ মিনারেল পানির ব্যবস্থা। খাবার শেষে ওইসব প্রতিবন্ধিদের ট্রেন রাইডসে চড়ানো হয়। আগামী বছরে আবারো তাদের নিয়ে নতুন কোন স্থানে বনভোজন করবেন বলে জানান ওই মেয়র।
কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি জামির হোসেন জানান, প্রতিবন্ধীরা হলো সমাজের অবহেলিত একটি জনগোষ্ঠী। তারা আর অন্য সুযোগ সুবিধা পেলেও বিনোদনের কোন সুযোগ তাদের নেই বললেই চলে। কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল ইসলাম আশরাফের এই উদ্যোগ প্রসংশার দাবিদার।
ভিডিও…