ঢাকা ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাদ্দাম হোসেন কী ভারতীয় বংশোদ্ভূত?

Reporter Name

সবুজদেশ ডেস্কঃ

ইরাকের এক মিলিশিয়া বাহিনীর নেতা দাবি করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন।

আসাইব আহল আল-হক আন্দোলনের নেতা কাইস আল-খাজালি নামের ওই মিলিশিয়া নেতা ঈদের খুতবার সময় সাদ্দাম হোসেনকে নিয়ে এমন মন্তব্য করেন। তিনি জানান, সাদ্দাম হোসেনের ডিএনএ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা গেছে তার পূর্বপুরুষ ভারতীয় ছিলেন।

২০০৩ সালে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন দখলদার বাহিনী। ওই বছরই মার্কিন সেনাদের হাতে প্রাণ হারান সাদ্দামের দুই ছেলে উদয় এবং কুসয়। গ্রেপ্তারের পর পরিচয় নিশ্চিত হতে ওই সময় সাদ্দাম হোসেনের দুই ছেলের সঙ্গে তার ডিএনএ মেলানো হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত ইরাকের কোনো মিলিশিয়া নেতা দাবি করেননি, সাদ্দাম হোসেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন।

কাইস আল-খাজালিও জানাননি তিনি কীভাবে বললেন সাদ্দাম হোসেনের বংশধর ভারতের ছিলেন।

তবে কাইস আল-খাজালিওর কাছের একটি সূত্র জানিয়েছে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন একটি গবেষণার ওপর ভিত্তি করে।

ওই গবেষণায় কয়েকজন ইরাকি গবেষকরা গত কয়েক শতকে যেসব মানুষ ইরাকে এসেছেন তাদের বংশধরদের পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন।

এর আগে ২০১৭ সালে রাষ্ট্র পরিচালিত ম্যাগাজিন ‘আল-শাবাকা’ সাদ্দাম হোসেনের বংশ পরিচয় নিয়ে গবেষণা করে। ওই সময় ম্যাগাজিনটি দাবি করে সাদ্দামের জিন পরীক্ষা করে দেখা গেছে তিনি ‘এল’ লাইনেজের অন্তর্ভুক্ত। আর এই এল লাইনেজের মানুষের আদি বসবাস ছিল দক্ষিণ এশিয়ায়। বিশেষ করে পাকিস্তান, ভারত, তাজিকিস্তান, ইরানের বালুচিস্তান এবং আফগানিস্তানে। তবে ওই প্রতিবেদনে এই দাবির স্বপক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি দেখাতে পারেনি ম্যাগাজিনটি।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোর মতো ইরাকেও জেনোফোবিয়া আছে। যেখানে অন্য দেশ থেকে বসতি গড়া মানুষদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়। ইরাকে ‘ভারতীয়’ শব্দটিকে একটি গালি হিসেবে ধরা হয়। অপরদিকে যারা ‘আরব’ তারা নিজেদের নিয়ে গর্ববোধ করেন।

ইরাকের বেশিরভাগ মানুষই আরবীয় বংশোদ্ভূত। দেশটির জনসংখ্যার ২০ শতাংশ কুর্দি। এছাড়া তুর্কমেন এবং আসারিয়ানের মতো কিছু অ-আরবীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীও রয়েছে।

কাইস আল-খাজালিও এমন কথা বলার পর এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে বলছেন, দেশের অন্য সমস্যাগুলো আড়ালে রাখতে সাদ্দাম হোসেনের বংশ পরিচয় নিয়ে অহেতুক রব তোলা হচ্ছে।

সূত্র: আল আরাবিয়া, আশার্ক আল-আসওয়াত

About Author Information
আপডেট সময় : ১১:৫০:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৩
৯১ Time View

সাদ্দাম হোসেন কী ভারতীয় বংশোদ্ভূত?

আপডেট সময় : ১১:৫০:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৩

সবুজদেশ ডেস্কঃ

ইরাকের এক মিলিশিয়া বাহিনীর নেতা দাবি করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন।

আসাইব আহল আল-হক আন্দোলনের নেতা কাইস আল-খাজালি নামের ওই মিলিশিয়া নেতা ঈদের খুতবার সময় সাদ্দাম হোসেনকে নিয়ে এমন মন্তব্য করেন। তিনি জানান, সাদ্দাম হোসেনের ডিএনএ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা গেছে তার পূর্বপুরুষ ভারতীয় ছিলেন।

২০০৩ সালে সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন দখলদার বাহিনী। ওই বছরই মার্কিন সেনাদের হাতে প্রাণ হারান সাদ্দামের দুই ছেলে উদয় এবং কুসয়। গ্রেপ্তারের পর পরিচয় নিশ্চিত হতে ওই সময় সাদ্দাম হোসেনের দুই ছেলের সঙ্গে তার ডিএনএ মেলানো হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত ইরাকের কোনো মিলিশিয়া নেতা দাবি করেননি, সাদ্দাম হোসেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন।

কাইস আল-খাজালিও জানাননি তিনি কীভাবে বললেন সাদ্দাম হোসেনের বংশধর ভারতের ছিলেন।

তবে কাইস আল-খাজালিওর কাছের একটি সূত্র জানিয়েছে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন একটি গবেষণার ওপর ভিত্তি করে।

ওই গবেষণায় কয়েকজন ইরাকি গবেষকরা গত কয়েক শতকে যেসব মানুষ ইরাকে এসেছেন তাদের বংশধরদের পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন।

এর আগে ২০১৭ সালে রাষ্ট্র পরিচালিত ম্যাগাজিন ‘আল-শাবাকা’ সাদ্দাম হোসেনের বংশ পরিচয় নিয়ে গবেষণা করে। ওই সময় ম্যাগাজিনটি দাবি করে সাদ্দামের জিন পরীক্ষা করে দেখা গেছে তিনি ‘এল’ লাইনেজের অন্তর্ভুক্ত। আর এই এল লাইনেজের মানুষের আদি বসবাস ছিল দক্ষিণ এশিয়ায়। বিশেষ করে পাকিস্তান, ভারত, তাজিকিস্তান, ইরানের বালুচিস্তান এবং আফগানিস্তানে। তবে ওই প্রতিবেদনে এই দাবির স্বপক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি দেখাতে পারেনি ম্যাগাজিনটি।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোর মতো ইরাকেও জেনোফোবিয়া আছে। যেখানে অন্য দেশ থেকে বসতি গড়া মানুষদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়। ইরাকে ‘ভারতীয়’ শব্দটিকে একটি গালি হিসেবে ধরা হয়। অপরদিকে যারা ‘আরব’ তারা নিজেদের নিয়ে গর্ববোধ করেন।

ইরাকের বেশিরভাগ মানুষই আরবীয় বংশোদ্ভূত। দেশটির জনসংখ্যার ২০ শতাংশ কুর্দি। এছাড়া তুর্কমেন এবং আসারিয়ানের মতো কিছু অ-আরবীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীও রয়েছে।

কাইস আল-খাজালিও এমন কথা বলার পর এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে বলছেন, দেশের অন্য সমস্যাগুলো আড়ালে রাখতে সাদ্দাম হোসেনের বংশ পরিচয় নিয়ে অহেতুক রব তোলা হচ্ছে।

সূত্র: আল আরাবিয়া, আশার্ক আল-আসওয়াত