ঢাকা ১১:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত ঝিনাইদহ পৌরবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত ঝিনাইদহ পৌরবাসী। মাসের পর মাস সুয়ারেজ লাইনের ময়লা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে ঝিনাইদহ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের উপশহর পাড়া এলাকার রাস্তা ঘাট। আশপাশের বাড়িঘর, টয়লেটের পানি ড্রেনেজের মুখ উথলে উপচে পড়ছে সড়কে। ড্রেন ছুঁয়ে পানি বের হচ্ছে অনবরত। সেই পানি প্রায় হাঁটু সমান সড়কে। ভাঙাচোরা রাস্তা আর কাদাঁ পানির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (৬ নভেম্বর) উপশহর পাড়া এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহল্লার অলিগলি ও সড়কগুলোতে পানি থৈ থৈ করছে। কোথাও কোথাও পানি হাঁটু সমান। পানি বের হওয়ার ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে গিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ময়লা পানির ভ্যাপসা দুর্গন্ধসহ পোকামাকড় সৃষ্টি হচ্ছে, বাড়ছে স্বাস্থ্য-ঝুঁকিও। পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ড্রেনের ঢাকনা ভাঙা ও ঢাকনা না থাকায় মানুষের যাতায়াত এবং যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ড্রেন পরিচর্যা না করার ফলে ময়লা-আবর্জনা আটকে স্তূপ হয়ে আছে, যার ফলে ড্রেনের পানি বা ময়লাগুলো স্থানান্তরিত হয় না। এতে সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তার অলিগলিতে পানি জমে থাকে যা বাসিন্দাদের চলাচলে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি করে।

পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রেশমা খাতুন বলেন, নামেই পৌরসভায় বাস করি আমরা। রাস্তা-ঘাটের বেহালদশা। নেই সড়কে বাতির ব্যবস্থাও। সন্ধ্যা নামলেই যেন তৈরি হয় ভুতুড়ে পরিবেশ।

মাসের পর মাস সুয়ারেজের পানি রাস্তা উপচে পড়লেও দেখার যেন কেউ নেই! অভিযোগ করে সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবক বলেন, পৌরসভার উপশহর পাড়ার এলাকাবাসী যেন অভিভাবকহীন বাসিন্দা। পৌরসভার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা।

আরেক বাসিন্দা জিকু হাসান জানান, এ এলাকায় কোন সুস্থ মানুষের বসবাসের মতো অবস্থা নেই। বৃষ্টি ও বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। সুয়ারেজের ময়লা পানিতে বংশবিস্তার করছে মশা মাছি। ময়লা-পানির কারণে মশা-মাছির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া , ডেঙ্গু জ্বরসহ বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

পৌর শহরে চলাচলকারী একাধিক অটোরিকশা চালক জানান, উপশহর পাড়ায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাজুক থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও সড়কের বেহাল দশার কারণে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয় তাদের। মাঝেমধ্যেই রিকশার যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে যায়। যাত্রীরাও অনেক সময় রিকসায় উঠতে চান না।

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা আজিজুর রহমান জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যায় কিন্তু পানি সরানোর কোন ব্যবস্থা নেই। ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে ড্রেনের ময়লা আবর্জনা উপচে পড়ে সড়কে উঠে যাওয়ায় বারোমাস সড়কে জলাবদ্ধতা থাকে। এতে করে রাস্তায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, ড্রেনটি অকেজো হওয়ায় পানি বের হবার কোনো পথ নেই। ময়লা আবর্জনা প্রতিনিয়ত ড্রেনে ফেলার কারণে পানি নিষ্কাশনে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত টেকসই ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক সংস্কার করা হবে।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামাল উদ্দীন বলেন,ওখানে কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমে আছে। শুনেছি জলাবদ্ধতা আর খানাখন্দে সড়কটি এখন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। নতুন করে টেন্ডার করা হচ্ছে প্রকল্প আসলে দ্রুত কাজ বাস্তবায়নের জন্য জরুরীভাবে উদ্যোগ নেয়া হবে।

সবুজদেশ/এসইউ

About Author Information
আপডেট সময় : ০৩:৩৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪
২৪ Time View

নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত ঝিনাইদহ পৌরবাসী

আপডেট সময় : ০৩:৩৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

 

নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত ঝিনাইদহ পৌরবাসী। মাসের পর মাস সুয়ারেজ লাইনের ময়লা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে ঝিনাইদহ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের উপশহর পাড়া এলাকার রাস্তা ঘাট। আশপাশের বাড়িঘর, টয়লেটের পানি ড্রেনেজের মুখ উথলে উপচে পড়ছে সড়কে। ড্রেন ছুঁয়ে পানি বের হচ্ছে অনবরত। সেই পানি প্রায় হাঁটু সমান সড়কে। ভাঙাচোরা রাস্তা আর কাদাঁ পানির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (৬ নভেম্বর) উপশহর পাড়া এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহল্লার অলিগলি ও সড়কগুলোতে পানি থৈ থৈ করছে। কোথাও কোথাও পানি হাঁটু সমান। পানি বের হওয়ার ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে গিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ময়লা পানির ভ্যাপসা দুর্গন্ধসহ পোকামাকড় সৃষ্টি হচ্ছে, বাড়ছে স্বাস্থ্য-ঝুঁকিও। পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ড্রেনের ঢাকনা ভাঙা ও ঢাকনা না থাকায় মানুষের যাতায়াত এবং যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ড্রেন পরিচর্যা না করার ফলে ময়লা-আবর্জনা আটকে স্তূপ হয়ে আছে, যার ফলে ড্রেনের পানি বা ময়লাগুলো স্থানান্তরিত হয় না। এতে সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তার অলিগলিতে পানি জমে থাকে যা বাসিন্দাদের চলাচলে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি করে।

পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রেশমা খাতুন বলেন, নামেই পৌরসভায় বাস করি আমরা। রাস্তা-ঘাটের বেহালদশা। নেই সড়কে বাতির ব্যবস্থাও। সন্ধ্যা নামলেই যেন তৈরি হয় ভুতুড়ে পরিবেশ।

মাসের পর মাস সুয়ারেজের পানি রাস্তা উপচে পড়লেও দেখার যেন কেউ নেই! অভিযোগ করে সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবক বলেন, পৌরসভার উপশহর পাড়ার এলাকাবাসী যেন অভিভাবকহীন বাসিন্দা। পৌরসভার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা।

আরেক বাসিন্দা জিকু হাসান জানান, এ এলাকায় কোন সুস্থ মানুষের বসবাসের মতো অবস্থা নেই। বৃষ্টি ও বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। সুয়ারেজের ময়লা পানিতে বংশবিস্তার করছে মশা মাছি। ময়লা-পানির কারণে মশা-মাছির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া , ডেঙ্গু জ্বরসহ বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

পৌর শহরে চলাচলকারী একাধিক অটোরিকশা চালক জানান, উপশহর পাড়ায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাজুক থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও সড়কের বেহাল দশার কারণে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয় তাদের। মাঝেমধ্যেই রিকশার যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে যায়। যাত্রীরাও অনেক সময় রিকসায় উঠতে চান না।

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা আজিজুর রহমান জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যায় কিন্তু পানি সরানোর কোন ব্যবস্থা নেই। ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে ড্রেনের ময়লা আবর্জনা উপচে পড়ে সড়কে উঠে যাওয়ায় বারোমাস সড়কে জলাবদ্ধতা থাকে। এতে করে রাস্তায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, ড্রেনটি অকেজো হওয়ায় পানি বের হবার কোনো পথ নেই। ময়লা আবর্জনা প্রতিনিয়ত ড্রেনে ফেলার কারণে পানি নিষ্কাশনে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত টেকসই ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক সংস্কার করা হবে।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামাল উদ্দীন বলেন,ওখানে কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমে আছে। শুনেছি জলাবদ্ধতা আর খানাখন্দে সড়কটি এখন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। নতুন করে টেন্ডার করা হচ্ছে প্রকল্প আসলে দ্রুত কাজ বাস্তবায়নের জন্য জরুরীভাবে উদ্যোগ নেয়া হবে।

সবুজদেশ/এসইউ