ইসরাইলি আগ্রাসনে হুমকির মুখে লেবাননের ঐতিহাসিক স্থাপনা
ইসরাইলি আগ্রাসনে হুমকির মুখে লেবাননের ঐতিহাসিক স্থাপনা ।
প্রত্নতাত্ত্বিক আশঙ্কা করছেন, দক্ষিণ লেবাননে সাম্প্রতিক ইসরাইলি বিমান হামলায় দেশটির প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। রোমান এবং ফিনিশিয়ান যুগের ধ্বংসাবশেষসহ ঐতিহাসিক স্থানগুলোর কাছাকাছি এলাকাগুলোতে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল৷ এরইমধ্যে অক্টোবরে ইসরাইলি হামলায় প্রাচীন দক্ষিণাঞ্চলীয শহর বালবেকের ঐতিহাসিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, চলমান বোমাবর্ষণ গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিককে ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস করতে পারে, যে সব স্থাপনার অস্থিত্ব হাজার হাজার বছরের। সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে প্রাচীন শহর টায়ার, এটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য। যেখানে মন্দির, থিয়েটার এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোর অবশিষ্টাংশ রয়েছে।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন, সহিংসতার মধ্যে লেবাননের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার জন্য বৃহত্তর প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে। এই স্থাপগুলো এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ ইতিহাসের অংশ।
অচিরেই এই সংঘর্ষ থামার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, তারা এই অপূরণীয় সম্পদের আরও ক্ষতি রোধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে ইসরাইলি প্রতিরক্ষাবাহিনী বিবিসির কাছে দাবি করেছে, তারা শুধুমাত্র হিজবুল্লাহর সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে। কিন্তু সাম্প্রতিক হামলার লক্ষ্যবস্তু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছ, ইসরাইল এমন সব জায়গায় হামলা চালাচ্ছে যেখানে প্রায় ২ হাজার ৫০০ বছর আগে ফিনিশিয়ান সাম্রাজ্যের একটি প্রধান বন্দর টায়ার ও বালবেকে মন্দির এবং রোমান সাম্রাজ্যের বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা রয়েছে।
বিবিসি বলছে, ইসরাইলি হামলায় টায়ার এবং পূর্বাঞ্চলীয় শহর বালবেকের রোমান স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু লেবাননের প্রত্নতাত্ত্বিকরা শঙ্কিত, চলমান যুদ্ধ সহস্রাব্দের পুরানো ধ্বংসাবশেষ যেখানে রয়েছে তার কাছাকাছি চলে এসেছে, যা ইউনেস্কোর কাছে মানবতার জন্য অসামান্য মূল্য হিসাবে স্বীকৃত।
স্থানীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জোয়ান ফারচাখ বাজ্জালি বলেছেন, বালবেকের পরিস্থিতি টায়ারের চেয়েও খারাপ ছিল, কারণ মন্দিরগুলো লক্ষ্য করা হয়েছে এমন এলাকার মধ্যে অবস্থিত এবং (আইডিএফ) মন্দিরগুলোক কোনও ছাড় দেয়া হয়নি।
তিনি বলেছেন, বালবেকে কোন হিজবুল্লাহর কোনো সামরিক অবস্থান নেই। কিন্তু কেউ জানে না ইসরাইলের এসব হামলার পিছনে অজুহাত বা বার্তা কি।
হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ইসরাইলের তীব্র বোমাবর্ষণ যেনো ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর সংরক্ষণ যেনো নিশ্চিত করা যায়, এ নিয়ে ১০০ জনেরও বেশি লেবাননের আইনপ্রণেতা বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের কাছে আবেদন করেছেন।
সবুজদেশ/এসইউ