ঢাকা ০৩:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি আর চাই না: সাবেক সেনা কর্মকর্তারা

সবুজদেশ ডেস্ক:

ছবি সংগৃহীত-

 

দেশের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি মনে করে ভারতের সঙ্গে আর দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি নয়, বরং সাম্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে সরকারকে তারা আহ্বান জানিয়েছেন। 

শনিবার রাজধানীর মহাখালী রাওয়া কমপ্লেক্সের নিচে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান শীর্ষক এক প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এ আহ্বান জানান।

সমাবেশের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ বলেন, আর কোনো নতজানু (দুর্বল) পররাষ্ট্রনীতি নয়, সাম্যের ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি চাই। কোনো ধরনের নতজানু নীতিকে কোনো অবস্থাতেই আমরা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেব না।

ভারতের জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্র“তা নেই। আপনারা আমাদের বন্ধু। কিন্তু ভারতের গেরুয়া পোশাকধারী হিন্দু আধিপত্যবাদকে আমরা কোনোভাবেই এ দেশে প্রশ্রয়-আশ্রয় দিতে রাজি নই।

তিনি আরও বলেন, হজরত শাহজালাল, হজরত শাহ মখদুম, অতীশ দীপঙ্কর, শ্রী চৈতন্য, অনুকূল ঠাকুর, লোকনাথ ব্রহ্মচারী প্রমুখের আবাসভূমি এই বাংলাদেশ। আমরা যুগ যুগ ধরে এই শ্যামলভূমিতে সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে আসছি। কিন্তু অতি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশের লেডি ফেরাউন পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতের হিন্দু নেতৃত্বের শ্যেন দৃষ্টি পড়েছে আমাদের ওপর।

মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ বলেন, তাদের সর্বশেষ উদ্যোগ ছিল আগরতলা এবং কলকাতার বাংলাদেশি দূতাবাসে আক্রমণ চালানো এবং আমাদের বাংলাদেশের পতাকাকে অবমাননা করা। আমরা এসব ঘটনাগুলোকে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসাবে মনে করছি। এ ছাড়া ভারতের কিছু মিডিয়া ও রাজনৈতিক নেতা বাংলাদেশকে নিয়ে সার্বক্ষণিক বিষোদ্গার করে চলেছে। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী যে কোনো দূতাবাসে হামলা মানে সেই দেশের সার্বভৌম এলাকার ওপরে হামলা। দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে আমরা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা চুপ করে থাকতে পারি না।

এ সময় অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনীষ দেওয়ান বলেন, মোদিজি, অমিতজি, রাজনাথজি, আপনারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যেটা দেখেছেন, ৭২ সালের সেই সেনাবাহিনী এখন আর নাই। আমরা এখন যে কোনো শত্র“র মোকাবেলায় প্রস্তুত। আপনারা আর আস্ফালন তুলবেন না, ভয় দেখাবেন না। আমরা শুধু সশস্ত্র বাহিনী নই, ১৭ কোটি জনতা আছে আমাদের সঙ্গে আপনাদের সীমান্তেই রুখে দিতে।

সমাবেশ সঞ্চালনার সময় সরকারের উদ্দেশে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল লুৎফুল হক বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সব জাতীয় চুক্তিগুলো তুলে ধরুন। যেসব ভারতীয় বাংলাদেশে আছে, সেগুলো পুনর্বিবেচনা করে প্রয়োজন না থাকলে তাদের ফেরত পাঠানো হোক। যেসব ভারতীয় মিডিয়া সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছে দেশে সেগুলো নিষিদ্ধ করা হোক।

সমাবেশ শেষে বিভিন্ন বাহিনীর সাবেক সদস্যসহ পাঁচ শতাধিক মানুষের অংশগ্রহণে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি রাওয়া ক্লাব থেকে শুরু হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সংলগ্ন ক্রসিং হয়ে ঘুরে আবার রাওয়া ক্লাবে এসে শেষ হয়।

সবুজদেশ/এসইউ

About Author Information
আপডেট সময় : ০৯:২৭:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
২০ Time View

দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি আর চাই না: সাবেক সেনা কর্মকর্তারা

আপডেট সময় : ০৯:২৭:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

 

দেশের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি মনে করে ভারতের সঙ্গে আর দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি নয়, বরং সাম্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে সরকারকে তারা আহ্বান জানিয়েছেন। 

শনিবার রাজধানীর মহাখালী রাওয়া কমপ্লেক্সের নিচে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান শীর্ষক এক প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এ আহ্বান জানান।

সমাবেশের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ বলেন, আর কোনো নতজানু (দুর্বল) পররাষ্ট্রনীতি নয়, সাম্যের ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি চাই। কোনো ধরনের নতজানু নীতিকে কোনো অবস্থাতেই আমরা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেব না।

ভারতের জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্র“তা নেই। আপনারা আমাদের বন্ধু। কিন্তু ভারতের গেরুয়া পোশাকধারী হিন্দু আধিপত্যবাদকে আমরা কোনোভাবেই এ দেশে প্রশ্রয়-আশ্রয় দিতে রাজি নই।

তিনি আরও বলেন, হজরত শাহজালাল, হজরত শাহ মখদুম, অতীশ দীপঙ্কর, শ্রী চৈতন্য, অনুকূল ঠাকুর, লোকনাথ ব্রহ্মচারী প্রমুখের আবাসভূমি এই বাংলাদেশ। আমরা যুগ যুগ ধরে এই শ্যামলভূমিতে সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে আসছি। কিন্তু অতি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশের লেডি ফেরাউন পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতের হিন্দু নেতৃত্বের শ্যেন দৃষ্টি পড়েছে আমাদের ওপর।

মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ বলেন, তাদের সর্বশেষ উদ্যোগ ছিল আগরতলা এবং কলকাতার বাংলাদেশি দূতাবাসে আক্রমণ চালানো এবং আমাদের বাংলাদেশের পতাকাকে অবমাননা করা। আমরা এসব ঘটনাগুলোকে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসাবে মনে করছি। এ ছাড়া ভারতের কিছু মিডিয়া ও রাজনৈতিক নেতা বাংলাদেশকে নিয়ে সার্বক্ষণিক বিষোদ্গার করে চলেছে। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী যে কোনো দূতাবাসে হামলা মানে সেই দেশের সার্বভৌম এলাকার ওপরে হামলা। দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে আমরা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা চুপ করে থাকতে পারি না।

এ সময় অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনীষ দেওয়ান বলেন, মোদিজি, অমিতজি, রাজনাথজি, আপনারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যেটা দেখেছেন, ৭২ সালের সেই সেনাবাহিনী এখন আর নাই। আমরা এখন যে কোনো শত্র“র মোকাবেলায় প্রস্তুত। আপনারা আর আস্ফালন তুলবেন না, ভয় দেখাবেন না। আমরা শুধু সশস্ত্র বাহিনী নই, ১৭ কোটি জনতা আছে আমাদের সঙ্গে আপনাদের সীমান্তেই রুখে দিতে।

সমাবেশ সঞ্চালনার সময় সরকারের উদ্দেশে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল লুৎফুল হক বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সব জাতীয় চুক্তিগুলো তুলে ধরুন। যেসব ভারতীয় বাংলাদেশে আছে, সেগুলো পুনর্বিবেচনা করে প্রয়োজন না থাকলে তাদের ফেরত পাঠানো হোক। যেসব ভারতীয় মিডিয়া সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছে দেশে সেগুলো নিষিদ্ধ করা হোক।

সমাবেশ শেষে বিভিন্ন বাহিনীর সাবেক সদস্যসহ পাঁচ শতাধিক মানুষের অংশগ্রহণে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি রাওয়া ক্লাব থেকে শুরু হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সংলগ্ন ক্রসিং হয়ে ঘুরে আবার রাওয়া ক্লাবে এসে শেষ হয়।

সবুজদেশ/এসইউ