ঢাকা ০২:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোচিকে নিয়োগ: এমপি নিয়েছে ৫০, এনএসআই-ডিজিএফআইয়ের তদবিরে ৩ (ভিডিও)

বিশেষ প্রতিনিধি

 

এমপি, এনএসআই, ডিজিএফআইসহ বিভিন্ন তদবিরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ চিনিকলে শ্রমিক নিয়োগ দিতেন শ্রমিক নেতা গোলাম রসুল। এই প্রতিবেদকের হাতে আসা একটি ভিডিওতে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। গোলাম রসুল মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি। গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।

ভিডিওতে দেখা গেছে, মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ক্যান্টিনের পাশে অবস্থিত টিনের ছাউনি দেওয়া একটি গোল ঘরে বসে তিনি শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে কয়েকজনের সাথে কথা বলছেন। সেখানে সাবেক কাউন্সিলর মেহেদী হাসান সজলকেও দেখা গেছে।

১ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে গোলাম রসুল বলেন, কত জায়গা মেইন-টেইন করতে হয় হেড অফিসের তালি ই নেই। ১০১ একটা লোক। এইবার ভাগ করো এমপি ৫০টা চলে গেল। এরা চলে গেল ১৭ টা। তাহলে কয়টা থাকে? ৩৪ টার মধ্যে আমার ইউনিয়নে ১৫ টা বাদ দেও। এবার থাকে ২০ টা। এবার এসো এনএসআই, ডিজিএফআইসহ প্রশাসনিক তদবিরে গেছে ৩ টা। হেড অফিসে গেছে ৫ টা। পাশ থেকে একজন বলেন তাহলে তো আপনার থাকছেই না। উত্তরে গোলাম রসুল বলেন, আমি ওইটুকুর উপরে দাঁড়িয়ে আছি।

তিনি আরো বলেন, অথচ অন্য নেতারা হলে এমপির ১০টা দিয়ে এদিকে মেইন-টেইন করে চালিয়ে চলে যেত। এইজন্য কালকে আমি এমপির বলেই ফেলিলাম যে অনেক তেল হয়ে গিয়েছে। এরপর যদি বেশি চাপাচাপি করে তাহলে আমি নিয়োগ বন্ধ করে দেবো। আমার আর একবছর ই আছে, আমি ওভারটাইম দিয়ে চালিয়ে যাবো। আমিতো ওভারটাইম বন্ধ করে দিয়ে অনেক মেকানিজম করে কাজটা করলাম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রমিক নেতা গোলাম রসুল ছিলেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের বন্ধু। এমপি বন্ধুর প্রভাব খাটিয়ে তিনি হয়েছেন বিপুল সম্পদের মালিক। তার মতের বাইরে গেলেই শ্রমিকদের কপালে নেমে আসতো নির্যাতনের খড়গ। মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ক্যান্টিনের পাশের এই গোলঘর রীতিমত টর্চার সেলে পরিণত করেছিলেন। টানা দুইবার বিনা ভোটে শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ২৪ জন সিডিএর কাছ থেকে পদোন্নতির নামে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। যা চিনিকলটির হেড অফিস তদন্ত করছে।

এ ব্যাপারে জানতে গোলাম রসুলের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপক সাইফুল আলম বলেন, শ্রমিক নিয়োগে টাকা লেনদেনের বিষয়ে গোলাম রসুলের নামে ২৪টি অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলো তদন্ত করা হয়েছে। কিন্তু এসব লেনদেনের সাথে আমরা জড়িত না।

ভিডিও…

About Author Information
আপডেট সময় : ০২:১৬:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
২০৫ Time View

মোচিকে নিয়োগ: এমপি নিয়েছে ৫০, এনএসআই-ডিজিএফআইয়ের তদবিরে ৩ (ভিডিও)

আপডেট সময় : ০২:১৬:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

 

এমপি, এনএসআই, ডিজিএফআইসহ বিভিন্ন তদবিরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ চিনিকলে শ্রমিক নিয়োগ দিতেন শ্রমিক নেতা গোলাম রসুল। এই প্রতিবেদকের হাতে আসা একটি ভিডিওতে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। গোলাম রসুল মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি। গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।

ভিডিওতে দেখা গেছে, মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ক্যান্টিনের পাশে অবস্থিত টিনের ছাউনি দেওয়া একটি গোল ঘরে বসে তিনি শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে কয়েকজনের সাথে কথা বলছেন। সেখানে সাবেক কাউন্সিলর মেহেদী হাসান সজলকেও দেখা গেছে।

১ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে গোলাম রসুল বলেন, কত জায়গা মেইন-টেইন করতে হয় হেড অফিসের তালি ই নেই। ১০১ একটা লোক। এইবার ভাগ করো এমপি ৫০টা চলে গেল। এরা চলে গেল ১৭ টা। তাহলে কয়টা থাকে? ৩৪ টার মধ্যে আমার ইউনিয়নে ১৫ টা বাদ দেও। এবার থাকে ২০ টা। এবার এসো এনএসআই, ডিজিএফআইসহ প্রশাসনিক তদবিরে গেছে ৩ টা। হেড অফিসে গেছে ৫ টা। পাশ থেকে একজন বলেন তাহলে তো আপনার থাকছেই না। উত্তরে গোলাম রসুল বলেন, আমি ওইটুকুর উপরে দাঁড়িয়ে আছি।

তিনি আরো বলেন, অথচ অন্য নেতারা হলে এমপির ১০টা দিয়ে এদিকে মেইন-টেইন করে চালিয়ে চলে যেত। এইজন্য কালকে আমি এমপির বলেই ফেলিলাম যে অনেক তেল হয়ে গিয়েছে। এরপর যদি বেশি চাপাচাপি করে তাহলে আমি নিয়োগ বন্ধ করে দেবো। আমার আর একবছর ই আছে, আমি ওভারটাইম দিয়ে চালিয়ে যাবো। আমিতো ওভারটাইম বন্ধ করে দিয়ে অনেক মেকানিজম করে কাজটা করলাম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রমিক নেতা গোলাম রসুল ছিলেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের বন্ধু। এমপি বন্ধুর প্রভাব খাটিয়ে তিনি হয়েছেন বিপুল সম্পদের মালিক। তার মতের বাইরে গেলেই শ্রমিকদের কপালে নেমে আসতো নির্যাতনের খড়গ। মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ক্যান্টিনের পাশের এই গোলঘর রীতিমত টর্চার সেলে পরিণত করেছিলেন। টানা দুইবার বিনা ভোটে শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ২৪ জন সিডিএর কাছ থেকে পদোন্নতির নামে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। যা চিনিকলটির হেড অফিস তদন্ত করছে।

এ ব্যাপারে জানতে গোলাম রসুলের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপক সাইফুল আলম বলেন, শ্রমিক নিয়োগে টাকা লেনদেনের বিষয়ে গোলাম রসুলের নামে ২৪টি অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলো তদন্ত করা হয়েছে। কিন্তু এসব লেনদেনের সাথে আমরা জড়িত না।

ভিডিও…