কালীগঞ্জে যৌতুকের শিকলে বন্দি তানিয়া: পুলিশের খাঁচায় শাশুড়ী-ননদ
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের যৌতুকের দাবিতে শিকলে তালাবদ্ধ সেই গৃহবধু তানিয়াকে নির্যাতনের অভিযোগে ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গত সোমবার থেকে তানিয়াকে শিকল পায়ে দিয়ে বেঁধে আটকিয়ে ২ দিন ধরে নির্যাতন করে পাষন্ড স্বামী ও তার শশুরবাড়ির লোকজন। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে তানিয়াকে শিকলে তালাবদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শাশুড়ি মাহমুদা খাতুন ও ননদ রুমি খাতুনকে আটক করেছে কালীগঞ্জের থানা পুলিশ। তবে মুল আসামী পাষন্ড স্বামী রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে।
প্রকাশ থাকে যে, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য তানিয়া তার স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন দ্বারা লাগাতরভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন। কিন্ত সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে এতোদিন নিরবে সহ্য করেছেন। সর্বশেষ ২ দিন ধরে লোহার শিকলে আটকা থাকার পর পুলিশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে গৃহবধুর বাবা একই উপজেলার মঙ্গলপৈতা গ্রামের রিপন গাজী বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ রাতেই মামলার দুই আসামিকে আটক করেছে।
গৃহবধু তানিয়ার বাবা রিপন গাজি জানান, তানিয়ার ৩ মাসের শিশুসহ দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মেয়ের সুখের জন্য জামাই সোহেল রানার দাবি মোতাবেক কয়েক দফায় বেশ কিছু টাকাও দিয়েছেন। কিন্ত যৌতুক লোভী জামাই ও তার পরিবারের লোকজনের আচরনের কোন পরিবর্তন হয়নি। বরং তানিয়াকে আবার টাকা আনতে বলে। এতে সে রাজি না হওয়ায় গত ৬ জানুয়ারি সকালে তানিয়াকে মারধর করে পায়ে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ ঘরে আটকিয়ে রেখে নির্যাতন চালায়। খবর পেয়ে পরের দিন সকালে জামাই বাড়ি গেলে তাকেও মারধর করে তারা।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম জানান, কোন এক গৃহবধুকে পায়ে শিকল বেঁধে আটকে রাখা হয়েছে শুনে তিনি পুলিশ পাঠিয়েছিলেন। তারা ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধু তানিয়াকে পায়ে লোহার শিকল বাঁধা ও তার বাবা রিপন গাজিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় নির্যাতিত তানিয়ার বাবা রিপন গাজি বাদি হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগে শাশুড়ী ও ননদকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
সবুজদেশ/এসএএস