ঢাকা ১১:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উত্তর গাজায় একদিনে ফিরেছেন ৩ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি

 

যুদ্ধবিরতির পর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার উত্তরাঞ্চলে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ফিরেছেন তিন লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি।গাজায় জনসংযোগ দপ্তর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আলজাজিরার। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরাইলি বাহিনীর তাণ্ডবে উত্তর গাজার এই বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ এতদিন উপত্যকার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ৪৭০ দিন পর নিজেদের বাড়িতে ফিরেছেন তারা।

ইসরাইলি বাহিনীর দীর্ঘ ১৫ মাসের ধ্বংসযজ্ঞে উত্তর গাজায় এখন কোনো বাড়িঘরই অক্ষত নেই। কিন্তু তারপরও প্রায় ১৫ মাস পর নিজেদের এলাকায় ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত উত্তর গাজার বাসিন্দারা।

সোমবার সকাল থেকেই নেৎজারিম করিডোর দিয়ে উত্তর গাজায় আসতে শুরু করেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। অনেকেই ঘোড়া কিংবা গাধার গাড়িতে নিজেদের  মালপত্র নিয়ে আসেন। উত্তর গাজার কেন্দ্রীয় শহর গাজা সিটির প্রধান সড়কের একটি ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে ‘গাজায় স্বাগতম’ লেখা ব্যানার টাঙানো ছিল এ সময়।

উত্তর গাজার বাসিন্দা ২২ বছরের তরুণী লামিস আল ইওয়াদি দীর্ঘদিন পর নিজ এলাকায় ফিরতে পেরে খুবই আনন্দিত। এএফপিকে তিনি বলেন, ‘আজকের দিনটি আমার জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন। আমার মনে হচ্ছে— এতদিন আমি মৃত ছিলাম; আজ আমার দেহে ফের জীবন ফিরে এসেছে।

গাজায় হামাসের এক মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন, উত্তর গাজায় ফিরে আসা এই বাড়িঘর হারানো এসব ফিলিস্তিনিদের সাময়িক আশ্রয় হিসেবে অন্তত ১ লাখ ৩৫ হাজার তাঁবু প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূখণ্ডে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ মানুষকে হত্যা করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। আর জিম্মি করে নিয়ে যায় ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে। এর প্রতিবাদে সেদিন থেকেই গাজা উপত্যকায় অভিযান শুরু ইসরাইলি সামরিক বাহিনী।  দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা ইসরাইলি বর্বরতায় নিহত হয়েছেন ৪৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আর আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১২ হাজারের বেশি মানুষ।

অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি ও বন্দিময় চুক্তি কার্যকর হয়েছে। যার ফলে গাজায় ফিরতে শুরু করেছেন ফিলিস্তিনিরা।

সবুজদেশ/এসইউ

Tag :
About Author Information

উত্তর গাজায় একদিনে ফিরেছেন ৩ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি

Update Time : ১০:৩৮:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

 

যুদ্ধবিরতির পর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার উত্তরাঞ্চলে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ফিরেছেন তিন লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি।গাজায় জনসংযোগ দপ্তর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আলজাজিরার। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরাইলি বাহিনীর তাণ্ডবে উত্তর গাজার এই বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ এতদিন উপত্যকার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ৪৭০ দিন পর নিজেদের বাড়িতে ফিরেছেন তারা।

ইসরাইলি বাহিনীর দীর্ঘ ১৫ মাসের ধ্বংসযজ্ঞে উত্তর গাজায় এখন কোনো বাড়িঘরই অক্ষত নেই। কিন্তু তারপরও প্রায় ১৫ মাস পর নিজেদের এলাকায় ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত উত্তর গাজার বাসিন্দারা।

সোমবার সকাল থেকেই নেৎজারিম করিডোর দিয়ে উত্তর গাজায় আসতে শুরু করেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। অনেকেই ঘোড়া কিংবা গাধার গাড়িতে নিজেদের  মালপত্র নিয়ে আসেন। উত্তর গাজার কেন্দ্রীয় শহর গাজা সিটির প্রধান সড়কের একটি ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে ‘গাজায় স্বাগতম’ লেখা ব্যানার টাঙানো ছিল এ সময়।

উত্তর গাজার বাসিন্দা ২২ বছরের তরুণী লামিস আল ইওয়াদি দীর্ঘদিন পর নিজ এলাকায় ফিরতে পেরে খুবই আনন্দিত। এএফপিকে তিনি বলেন, ‘আজকের দিনটি আমার জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন। আমার মনে হচ্ছে— এতদিন আমি মৃত ছিলাম; আজ আমার দেহে ফের জীবন ফিরে এসেছে।

গাজায় হামাসের এক মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন, উত্তর গাজায় ফিরে আসা এই বাড়িঘর হারানো এসব ফিলিস্তিনিদের সাময়িক আশ্রয় হিসেবে অন্তত ১ লাখ ৩৫ হাজার তাঁবু প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূখণ্ডে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ মানুষকে হত্যা করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। আর জিম্মি করে নিয়ে যায় ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে। এর প্রতিবাদে সেদিন থেকেই গাজা উপত্যকায় অভিযান শুরু ইসরাইলি সামরিক বাহিনী।  দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা ইসরাইলি বর্বরতায় নিহত হয়েছেন ৪৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আর আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১২ হাজারের বেশি মানুষ।

অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি ও বন্দিময় চুক্তি কার্যকর হয়েছে। যার ফলে গাজায় ফিরতে শুরু করেছেন ফিলিস্তিনিরা।

সবুজদেশ/এসইউ