মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের মাসোয়ারার চুক্তির টাকা দিলে মেলে অভিযানের আগেই খবর। না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে করা হয় হয়রানি। তাদের একজন কোটচাঁদপুরের ভুক্তভোগী প্রতিমা রানী। চুক্তির টাকা না দেয়ায় হয়েছেন একাধিক মামলার আসামী। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বললেন ঝিনাইদহ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক গোলক মজুমদার।
জানা যায়, কোটচাঁদপুর আবাসিক প্রকৌশলীর সামনে অবস্থিত ঋষি পাড়া। এ পাড়ার অধিকাংশ মানুষ শহর পরিস্কার পরিছন্নতার কাজ করে থাকেন। এ কারনে তারা নিজস্ব কায়দায় বাসায় খাবার জন্য তৈরি করেন চোলাই মদ। যা বিক্রির জন্য না হলেও তারা তা বিক্রি করে থাকেন। এখন চোলাইয়ের সঙ্গে ওই পাড়ায় পাওয়া যায় গাঁজা। যা চলে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে মাসোহারা চুক্তিতে। ওই ঋষি পাড়ায় ১২ টি মাদক স্পট রয়েছে। যার মধ্যে ৮ টি চোলাই মদ ও ৪ টি গাঁজার স্পট। এ সব স্পটগুলো থেকে মাসোহারা নিয়ে থাকেন বলে জানিয়েছেন ওই পাড়ার প্রতিমা রানী।
প্রতিমা রানী বলেন, আমি আগে গাঁজা বিক্রি করতাম। সে সময় আমাকে তাদের ১৫ হাজার টাকা দিতে হত। এভাবে ৪ টি স্পর্ট থেকে তারা ৬০ হাজার টাকা আদায় করতেন। এ ছাড়া ৮ টি চোলাই মদের স্পট থেকে আদায় করেন ৪০ হাজার টাকা। এ সব টাকা আগে নিতেন আলতাপ হোসেন ও আব্দুর রশিদ।এখন নেন জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান ও এএসআই আব্দুর রশিদ। ওই কর্মকর্তাদের চুক্তির টাকা দিলে অভিযানের আগেই সবাই খবর পেয়ে যান। আর টাকা না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে করা হয় হয়রানি। তিনি আরো বলেন, গত কয়েক মাস আমি ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছি। এরপরও তারা আমাকে বাসায় না পেয়ে আমার মেয়ের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। এ ছাড়া গত (২ ফেব্রুয়ারি) তারা আবারও অভিযান চালান এ পাড়ায়। উমার ঘর থেকে গাঁজা উদ্ধার করে কিন্তু টাকার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেয়। সে সময় এক মাদক সেবীকে গাঁজা সহ আটক করে তাকেও ছেড়ে দেন। অন্য চুলাই স্পটেও অভিযান চালান সে সময় চুলাই মদ ও মদ তৈরি সরঞ্জামাদি পায় কিন্তু অজ্ঞত কারণে তাদেরকে মামলা দেননি আটক ও করেননি। ওইদিন আমার ঘরে কোন কিছু পাননি। এরপরও তারা ৩ শ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার দেখিয়ে পলাতক আসামী করে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন আমার নামে । বিষয়টি নিয়ে জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক গোলক মজুমদারের কাছে অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে মোস্তাফিজুর রহমান ও আব্দুর রশিদ তাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা বলেন আমাদের বিরুদ্ধে ওনি মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। আমাদের সঙ্গে ওই পাড়ার কারোর কোন আর্থিক লেনদেন নাই।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক গোলক মজুমদার বলেন, যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে অভিযোগ করেন। অভিযোগ তদন্ত করে প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সবুজদেশ/এসইউ