ঢাকা ১১:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে অনলাইন জুয়ার বেপরোয়া ফাঁদে ঝুঁকছে যুবকরা!

 

অনলাইন জুয়ার ফাঁদে ঝুঁকে পড়েছে ঝিনাইদহের তরুণ-যুব প্রজন্ম। অবৈধ ও বিটিআরসি অননুমোদিত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে চলছে রমরমা জুয়ার বাণিজ্য। সকাল দুপুর কিংবা মধ্যরাতে মোবাইল ফোনে চলছে জুয়ার আসর। দেখে বোঝার উপায় নেই হাতে থাকা মোবাইল ফোনেই অপরাধ জগতের এক ভয়াল জগতে নিমজ্জিত তরুণ-যুবকরা। হাতে থাকা অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন দিয়ে অখ্যাত অ্যাপের মাধ্যমে চলছে অবৈধ পথে অবৈধ অর্থ লেনদেন। নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, অবৈধ এসব জোয়ার অ্যাপ এর মাধ্যমে জেলা থেকে প্রতিমাসে কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। চাঞ্চল্যকর অনলাইন জুয়ার আসর শহর ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও। তবুও অজানা কারণে টনক নড়েনি প্রশাসনের। এ নিয়ে সচেতন মহল ও অভিভাবকদের মধ্যে বেড়েছে শঙ্কা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের জন্য অনুমোদিত অ্যাপ্লিকেশন পেতে গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপল স্টোর একমাত্র উৎস। কিন্তু অবৈধ ও বিটিআরসির অননুমোদিত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে রমরমা অনলাইন জোয়ার-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এসব ক্ষতিকর অ্যাপ ব্যবহার করতে মোবাইল ফোনে বেড়েছে ভিপিএন সফটওয়্যারের ব্যবহার। এর আগে বিভিন্ন সময়ে প্রতারক চক্রটির কয়েকজন সদস্য গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে তারা আবারও পুরনো অপরাধ জগতে ফিরেছে। দাপটের সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছে ভার্চুয়াল প্রতারণা। ইন্টারনেট ব্রাউজার থেকে সার্চ করে ক্ষতিকর অনলাইন জুয়ার অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা জুয়ায় ঢালছেন তরুণ-যুবকরো। অনেকেই মোটা টাকা খুইয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। কেউ কেউ দেনার দায়ে হতাশাগ্রস্থ জীবন পার করছেন।

বিশ্বস্থ সূত্র বলছে, অনলাইন এসব জুয়ার পিছনে তদারকির জন্য রয়েছে স্থানীয় একাধিক এজেন্ট। যারা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে জুয়ার গ্রাহকদের কথিত আইডি তৈরি করে দেয়ার নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। একজন গ্রাহক নিজের আইডি চালু করার পর অন্য কাউকে আইডি চালু করাতে পারলে পাচ্ছেন বাড়তি বোনাস। এসব কথিত বোনাস ও রাতারাতি বড়লোক হওয়ার ভুয়া স্বপ্নে প্রতারকদের ফাঁদে পা দিচ্ছেন উঠতি তরুণ, যুবক সহ নানা বয়সের মানুষ। পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকেই এসব জুয়ায় মেতেছেন।

সূত্রটি বলছে, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে জুয়ার মাধ্যমে কথিত উপার্জিত টাকা দেশের অনুমোদিত কোন ব্যাংকেই লেনদেন সম্ভব নয়। যে কারণে স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমেই এসব কথিত জুয়ার টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। ভিপিএন সফটওয়্যার ব্যবহার করে রাতভর মোবাইলে মোবাইলে চলছে রমরমা জুয়ার আসর। যে কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কোনো কূলকিনারা করতে পারছেন না।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, অনলাইন জুয়ায় যে টাকা কথিত উপার্জন হিসেবে দেখানো হয়, প্রকৃতপক্ষে তা কোন ব্যাংকিং বা অনুমোদিত আর্থিক চ্যানেলে উত্তোলন কিংবা জমা দেয়া অসম্ভব। প্রতারক জুয়াড়ি চক্র এজেন্ট ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে থাকে। চক্রটি কৌশলে টাকার হাত বদল ঘটায় মাত্র। তবে এসব জুয়ায় অর্জিত টাকার কোন অস্তিত্ব অনুমোদিত আর্থিক চ্যানেলে পাওয়া যাবে না।

অনলাইন জুয়ায় আসক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ প্রতিবেদক কে জানান, তিনি তিন মাস ধরে একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে অনলাইনে জুয়া খেলছেন। জুয়ার মাধ্যমে অর্জিত টাকা কোন ব্যাংক বা সরকার অনুমোদিত আর্থিক মাধ্যম থেকে উত্তোলন করতে পারেননি। কথিত উপার্জিত সব টাকা তিনি নির্ধারিত এজেন্টের মাধ্যমেই উত্তোলন করেছেন। অনেক সময় এজেন্টরা গ্রাহকদের সঙ্গে এ নিয়ে প্রতারণাও করে থাকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক যুবক জাগো নিউজকে বলেন, জুয়ার মাধ্যমে যে টাকা আসে তা কোন ব্যাংক থেকে তোলা যায় না। এজেন্টের মাধ্যমে যোগাযোগ করে টাকা নির্ধারিত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনে এজেন্টের কথিত জুয়ার আইডিতে ট্রান্সফার করা হয়। পরে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এজেন্টরা এ টাকা পাঠিয়ে দেন। অনেক ক্ষেত্রেই এজেন্টরা টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়।

জুয়ায় আসক্ত মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জুয়া মানেই প্রতারণা। জেনে বুঝেই সাময়িক লাভের নেশায় অনেকেই মোবাইল ফোনের এসব জুয়ার ফাঁদে পড়ছে। অনেক সময় অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের এজেন্টরা রাতারাতি মোটা টাকা হাতিয়ে উধাও হয়ে যান। এরকম ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। যেহেতু, বিষয়টি বেআইনি কাজ, তাই কেউ-ই আইনী সহায়তা নিতে পারে না। আর এই সুযোগেই প্রতি মাসে কোটি টাকার উপরে হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র।

ঝিনাইদহ সরকারি কেশবচন্দ্র কলেজের শিক্ষক মো. আলমগীর হোসাইন বলেন, তরুণ প্রজন্মকে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে নৈতিকতার শিক্ষা দিতে হবে। পাশাপাশি এ ধরনের সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের ছোবল থেকে প্রজন্মকে বাঁচাতে প্রশাসনকে সোচ্চার হতে হবে। অভিভাবক সহ সকলকে এসব বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, পরিশ্রম ছাড়া অর্থ উপার্জন কখনো সঠিক পন্থা হতে পারে না। অর্থ আয়ের ব্যাপারে সবারই একটা মোহ থাকে। এই মোহ থেকে চটকদার অনলাইন জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছে যুবকরা।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, অনলাইন জুয়ার বিষয়টি আমরা শুনেছি। তবে সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি ও চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ না পাওয়ায় কাউকে আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি, নানামুখী অনুসন্ধান ও তদন্ত চলছে। এ ধরনের প্রতারণা ও প্রতারক চক্রের সাথে জড়িতদের শনাক্তকরণে আমাদের বিভিন্ন টিম সক্রিয় রয়েছে।

জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের ইনচার্জ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া জাগো নিউজ কে বলেন, ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারের স্বাধীনতা রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনলাইনে নানান রকম প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। অনলাইন জুয়া তেমনি একটি অপরাধ। এটা রোধে সচেনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এ ধরণের অনলাইন জুয়ায় যারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন, তারা নির্ভয়ে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলে অভিযোগ করতে পারেন। আমরা সর্বোচ্চ আইনগত সুবিধা দেবো। অভিযোগ জানানো নিয়ে সংকোচ বা সংশয় থাকা উচিত নয়। সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল এ বিষয়টি নিয়ে তৎপর রয়েছে।

সবুজদেশ/এএসএস

Tag :

ঝিনাইদহে অনলাইন জুয়ার বেপরোয়া ফাঁদে ঝুঁকছে যুবকরা!

Update Time : ০৬:৪৩:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

 

অনলাইন জুয়ার ফাঁদে ঝুঁকে পড়েছে ঝিনাইদহের তরুণ-যুব প্রজন্ম। অবৈধ ও বিটিআরসি অননুমোদিত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে চলছে রমরমা জুয়ার বাণিজ্য। সকাল দুপুর কিংবা মধ্যরাতে মোবাইল ফোনে চলছে জুয়ার আসর। দেখে বোঝার উপায় নেই হাতে থাকা মোবাইল ফোনেই অপরাধ জগতের এক ভয়াল জগতে নিমজ্জিত তরুণ-যুবকরা। হাতে থাকা অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন দিয়ে অখ্যাত অ্যাপের মাধ্যমে চলছে অবৈধ পথে অবৈধ অর্থ লেনদেন। নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, অবৈধ এসব জোয়ার অ্যাপ এর মাধ্যমে জেলা থেকে প্রতিমাসে কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। চাঞ্চল্যকর অনলাইন জুয়ার আসর শহর ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও। তবুও অজানা কারণে টনক নড়েনি প্রশাসনের। এ নিয়ে সচেতন মহল ও অভিভাবকদের মধ্যে বেড়েছে শঙ্কা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের জন্য অনুমোদিত অ্যাপ্লিকেশন পেতে গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপল স্টোর একমাত্র উৎস। কিন্তু অবৈধ ও বিটিআরসির অননুমোদিত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে রমরমা অনলাইন জোয়ার-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এসব ক্ষতিকর অ্যাপ ব্যবহার করতে মোবাইল ফোনে বেড়েছে ভিপিএন সফটওয়্যারের ব্যবহার। এর আগে বিভিন্ন সময়ে প্রতারক চক্রটির কয়েকজন সদস্য গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে তারা আবারও পুরনো অপরাধ জগতে ফিরেছে। দাপটের সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছে ভার্চুয়াল প্রতারণা। ইন্টারনেট ব্রাউজার থেকে সার্চ করে ক্ষতিকর অনলাইন জুয়ার অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা জুয়ায় ঢালছেন তরুণ-যুবকরো। অনেকেই মোটা টাকা খুইয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। কেউ কেউ দেনার দায়ে হতাশাগ্রস্থ জীবন পার করছেন।

বিশ্বস্থ সূত্র বলছে, অনলাইন এসব জুয়ার পিছনে তদারকির জন্য রয়েছে স্থানীয় একাধিক এজেন্ট। যারা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে জুয়ার গ্রাহকদের কথিত আইডি তৈরি করে দেয়ার নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। একজন গ্রাহক নিজের আইডি চালু করার পর অন্য কাউকে আইডি চালু করাতে পারলে পাচ্ছেন বাড়তি বোনাস। এসব কথিত বোনাস ও রাতারাতি বড়লোক হওয়ার ভুয়া স্বপ্নে প্রতারকদের ফাঁদে পা দিচ্ছেন উঠতি তরুণ, যুবক সহ নানা বয়সের মানুষ। পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকেই এসব জুয়ায় মেতেছেন।

সূত্রটি বলছে, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে জুয়ার মাধ্যমে কথিত উপার্জিত টাকা দেশের অনুমোদিত কোন ব্যাংকেই লেনদেন সম্ভব নয়। যে কারণে স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমেই এসব কথিত জুয়ার টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। ভিপিএন সফটওয়্যার ব্যবহার করে রাতভর মোবাইলে মোবাইলে চলছে রমরমা জুয়ার আসর। যে কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কোনো কূলকিনারা করতে পারছেন না।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, অনলাইন জুয়ায় যে টাকা কথিত উপার্জন হিসেবে দেখানো হয়, প্রকৃতপক্ষে তা কোন ব্যাংকিং বা অনুমোদিত আর্থিক চ্যানেলে উত্তোলন কিংবা জমা দেয়া অসম্ভব। প্রতারক জুয়াড়ি চক্র এজেন্ট ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে থাকে। চক্রটি কৌশলে টাকার হাত বদল ঘটায় মাত্র। তবে এসব জুয়ায় অর্জিত টাকার কোন অস্তিত্ব অনুমোদিত আর্থিক চ্যানেলে পাওয়া যাবে না।

অনলাইন জুয়ায় আসক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ প্রতিবেদক কে জানান, তিনি তিন মাস ধরে একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে অনলাইনে জুয়া খেলছেন। জুয়ার মাধ্যমে অর্জিত টাকা কোন ব্যাংক বা সরকার অনুমোদিত আর্থিক মাধ্যম থেকে উত্তোলন করতে পারেননি। কথিত উপার্জিত সব টাকা তিনি নির্ধারিত এজেন্টের মাধ্যমেই উত্তোলন করেছেন। অনেক সময় এজেন্টরা গ্রাহকদের সঙ্গে এ নিয়ে প্রতারণাও করে থাকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক যুবক জাগো নিউজকে বলেন, জুয়ার মাধ্যমে যে টাকা আসে তা কোন ব্যাংক থেকে তোলা যায় না। এজেন্টের মাধ্যমে যোগাযোগ করে টাকা নির্ধারিত অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনে এজেন্টের কথিত জুয়ার আইডিতে ট্রান্সফার করা হয়। পরে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এজেন্টরা এ টাকা পাঠিয়ে দেন। অনেক ক্ষেত্রেই এজেন্টরা টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়।

জুয়ায় আসক্ত মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জুয়া মানেই প্রতারণা। জেনে বুঝেই সাময়িক লাভের নেশায় অনেকেই মোবাইল ফোনের এসব জুয়ার ফাঁদে পড়ছে। অনেক সময় অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের এজেন্টরা রাতারাতি মোটা টাকা হাতিয়ে উধাও হয়ে যান। এরকম ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। যেহেতু, বিষয়টি বেআইনি কাজ, তাই কেউ-ই আইনী সহায়তা নিতে পারে না। আর এই সুযোগেই প্রতি মাসে কোটি টাকার উপরে হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র।

ঝিনাইদহ সরকারি কেশবচন্দ্র কলেজের শিক্ষক মো. আলমগীর হোসাইন বলেন, তরুণ প্রজন্মকে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে নৈতিকতার শিক্ষা দিতে হবে। পাশাপাশি এ ধরনের সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের ছোবল থেকে প্রজন্মকে বাঁচাতে প্রশাসনকে সোচ্চার হতে হবে। অভিভাবক সহ সকলকে এসব বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, পরিশ্রম ছাড়া অর্থ উপার্জন কখনো সঠিক পন্থা হতে পারে না। অর্থ আয়ের ব্যাপারে সবারই একটা মোহ থাকে। এই মোহ থেকে চটকদার অনলাইন জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছে যুবকরা।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, অনলাইন জুয়ার বিষয়টি আমরা শুনেছি। তবে সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি ও চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ না পাওয়ায় কাউকে আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি, নানামুখী অনুসন্ধান ও তদন্ত চলছে। এ ধরনের প্রতারণা ও প্রতারক চক্রের সাথে জড়িতদের শনাক্তকরণে আমাদের বিভিন্ন টিম সক্রিয় রয়েছে।

জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের ইনচার্জ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া জাগো নিউজ কে বলেন, ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারের স্বাধীনতা রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনলাইনে নানান রকম প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। অনলাইন জুয়া তেমনি একটি অপরাধ। এটা রোধে সচেনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এ ধরণের অনলাইন জুয়ায় যারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন, তারা নির্ভয়ে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলে অভিযোগ করতে পারেন। আমরা সর্বোচ্চ আইনগত সুবিধা দেবো। অভিযোগ জানানো নিয়ে সংকোচ বা সংশয় থাকা উচিত নয়। সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল এ বিষয়টি নিয়ে তৎপর রয়েছে।

সবুজদেশ/এএসএস