ঢাকা ০৯:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সবুজদেশ নিউজে সংবাদ প্রকাশ: ঝিনাইদহের সেই এসআই আব্দুস সালাম ক্লোজড

 

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের আইসি (ইনচার্জ) এসআই আব্দুস সালামকে ক্লোজ করা হয়েছে। তাকে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত।

ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

২১ জুন সবুজদেশ নিউজ ডটকমে ‘ঝিনাইদহে এসআইয়ের কাণ্ড: ৮০ হাজার টাকা না দিলে সকালেই কোর্টে চালান’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়। এরপর সাময়িকভাবে এমন (ক্লোজড) ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে ঘুস বাণিজ্যর সঙ্গে আরও কয়েকজন অসৎ পুলিশ সদস্য জড়িত- এমন খবর ফাঁস হওয়ার আশঙ্কায় দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। রোববারও (২২ জুন) এসআই সালামসহ অন্য সহযোগীরা তৎপরতা চালিয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

ঝিনাইদহ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি দবির হোসেন ও রবিউল ইসলাম বলেন, ৫ জন ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পুলিশ ফাঁড়ি ও থানায় আটক রেখে অর্থ আদায় করার ঘটনাটি দুঃখজনক। জুলাই বিপ্লবের পর পুলিশ বাহিনীর মধ্যে পরিবর্তন প্রত্যাশা করেছিল গোটা দেশের মানুষ; কিন্তু পুলিশের কতিপয় অসৎ সদস্যের পূর্বের ন্যায় (প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকায় সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছে। ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এই দুই প্রবীণ আইনজীবী।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল ৯টার দিকে সদর উপজেলার বাটিয়াডাংগা গ্রামের মৃত মহসীন শেখের ছেলে আব্বাস আলী শেখ (৭০), মহেশপুর উপজেলার আয়ুব হোসেনের ছেলে মো. কালাম প্রধান, যশোর বাঘারপাড়া উপজেলার তেলেধন্য গ্রামের মহর আলী মোল্লার ছেলে মো. মাসুদ রানা, মহেশপুর বাগান ঘাট গ্রামের হানেফ আলী ছেলে সাব্বির হোসেন, একই গ্রামের মৃত হানেফ আলীর ছেলে আবুল কাসেমকে পুরাতন লোহার মালামাল ভ্যানসহ আটক করা হয়। এরা ভাঙারি (পুরাতন মালামাল) ব্যবসায়ী। গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে পুরাতন বাতিল মালামাল কিনেন তারা।

সদর উপজেলার নারিকেল বাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের আইসি (ইনচার্জ) এসআই আব্দুস সালাম তাদের আটক করে এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ ক্যাম্পেই রেখে দেয়। এরপর সন্ধ্যায় নিয়ে আসা হয় সদর থানায়। সেখানে হাজতখানায় বন্দি করে দেন-দরবার শুরু হয়।

ভুক্তভোগীদের একজন আব্বাস আলী ও তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, একপর্যায়ে ৮০ হাজার টাকা না দিলে অন্তত তিনটি ডাকাতি মামলা দিয়ে সকালেই কোর্টে চালান করে দেওয়ার হুমকি দেন এসআই আব্দুস সালাম। রাত অনুমান পৌনে ১২টার দিকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে সাদা কাগজে মুচলেকা দিয়ে সদর থানা থেকে মুক্তি পান আটক ব্যক্তিরা; কিন্তু তাদের ভ্যানরিকশাগুলো সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পেই রেখে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাত ১০টার দিকে রাজনৈতিক পরিচয় দেওয়া খোরশেদ নামের কথিত দালালকে সঙ্গে নিয়ে ঘুসের টাকা ফেরত দিতে সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে একটি চায়ের দোকানে যান এসআই আব্দুস সালাম। এরপর ঘুসের খবর ফাঁস হয়ে পড়ে।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :

সবুজদেশ নিউজে সংবাদ প্রকাশ: ঝিনাইদহের সেই এসআই আব্দুস সালাম ক্লোজড

Update Time : ১২:২৪:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

 

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের আইসি (ইনচার্জ) এসআই আব্দুস সালামকে ক্লোজ করা হয়েছে। তাকে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত।

ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

২১ জুন সবুজদেশ নিউজ ডটকমে ‘ঝিনাইদহে এসআইয়ের কাণ্ড: ৮০ হাজার টাকা না দিলে সকালেই কোর্টে চালান’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়। এরপর সাময়িকভাবে এমন (ক্লোজড) ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে ঘুস বাণিজ্যর সঙ্গে আরও কয়েকজন অসৎ পুলিশ সদস্য জড়িত- এমন খবর ফাঁস হওয়ার আশঙ্কায় দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। রোববারও (২২ জুন) এসআই সালামসহ অন্য সহযোগীরা তৎপরতা চালিয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

ঝিনাইদহ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি দবির হোসেন ও রবিউল ইসলাম বলেন, ৫ জন ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পুলিশ ফাঁড়ি ও থানায় আটক রেখে অর্থ আদায় করার ঘটনাটি দুঃখজনক। জুলাই বিপ্লবের পর পুলিশ বাহিনীর মধ্যে পরিবর্তন প্রত্যাশা করেছিল গোটা দেশের মানুষ; কিন্তু পুলিশের কতিপয় অসৎ সদস্যের পূর্বের ন্যায় (প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকায় সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছে। ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এই দুই প্রবীণ আইনজীবী।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল ৯টার দিকে সদর উপজেলার বাটিয়াডাংগা গ্রামের মৃত মহসীন শেখের ছেলে আব্বাস আলী শেখ (৭০), মহেশপুর উপজেলার আয়ুব হোসেনের ছেলে মো. কালাম প্রধান, যশোর বাঘারপাড়া উপজেলার তেলেধন্য গ্রামের মহর আলী মোল্লার ছেলে মো. মাসুদ রানা, মহেশপুর বাগান ঘাট গ্রামের হানেফ আলী ছেলে সাব্বির হোসেন, একই গ্রামের মৃত হানেফ আলীর ছেলে আবুল কাসেমকে পুরাতন লোহার মালামাল ভ্যানসহ আটক করা হয়। এরা ভাঙারি (পুরাতন মালামাল) ব্যবসায়ী। গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে পুরাতন বাতিল মালামাল কিনেন তারা।

সদর উপজেলার নারিকেল বাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের আইসি (ইনচার্জ) এসআই আব্দুস সালাম তাদের আটক করে এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ ক্যাম্পেই রেখে দেয়। এরপর সন্ধ্যায় নিয়ে আসা হয় সদর থানায়। সেখানে হাজতখানায় বন্দি করে দেন-দরবার শুরু হয়।

ভুক্তভোগীদের একজন আব্বাস আলী ও তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, একপর্যায়ে ৮০ হাজার টাকা না দিলে অন্তত তিনটি ডাকাতি মামলা দিয়ে সকালেই কোর্টে চালান করে দেওয়ার হুমকি দেন এসআই আব্দুস সালাম। রাত অনুমান পৌনে ১২টার দিকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে সাদা কাগজে মুচলেকা দিয়ে সদর থানা থেকে মুক্তি পান আটক ব্যক্তিরা; কিন্তু তাদের ভ্যানরিকশাগুলো সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পেই রেখে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাত ১০টার দিকে রাজনৈতিক পরিচয় দেওয়া খোরশেদ নামের কথিত দালালকে সঙ্গে নিয়ে ঘুসের টাকা ফেরত দিতে সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে একটি চায়ের দোকানে যান এসআই আব্দুস সালাম। এরপর ঘুসের খবর ফাঁস হয়ে পড়ে।

সবুজদেশ/এসএএস