ঢাকা ১১:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হার্টের রিং-এর দাম কমানোর সিদ্ধান্ত সরকারের

  • সবুজদেশ ডেস্ক:
  • Update Time : ০৬:৩৪:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫০ বার পড়া হয়েছে।

 

হার্টের স্টেন্টের (রিং) দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ৩ থেকে ৮৮ হাজার টাকা কমবে একেকটির দাম।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের স্বাক্ষর করা এক আদেশে তিন কোম্পানির ১১ ধরনের স্টেন্টের দাম কমিয়ে নতুন করে নির্ধারণ করা হয়। স্টেন্ট আমদানি প্রতিষ্ঠানভেদে খুচরা মূল্য সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে স্টেন্টভেদে দাম কমানো হয়েছে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা।

নতুন তালিকা অনুযায়ী, মেডট্রনিক কোম্পানির ‘রিজলিউট অনিক্স’ স্টেন্টের আগের দাম ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা, যা কমিয়ে ৯০ হাজার টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।

বোস্টন সায়েন্টিফিক কোম্পানির ‘প্রোমাস এলিট’ স্টেন্টটি আগে ৭৯ হাজার টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা ৭২ হাজার টাকা। একই কোম্পানির ‘প্রোমাস প্রিমিয়ার ’ স্টেন্টের দাম ৭৩ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৭০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

সিনার্জি সিরিজের তিনটি স্টেন্টের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে ‘সিনার্জি এক্সডি’ স্টেন্টে, যার আগের দাম ছিল ১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। নতুন দামে এটি এখন বিক্রি হবে ১ লাখ টাকায়। অন্যদিকে ‘সিনার্জি’ ও ‘সিনার্জি শিল্ড’ স্টেন্ট দুটির দাম কমিয়ে যথাক্রমে ৯০ হাজার টাকা করা হয়েছে, যা আগে ছিল ১ লাখ ১৭ হাজার ও ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।

অ্যাবট কোম্পানির ‘জায়েন্স প্রাইম’ স্টেন্টের দাম ছিল ৬৬ হাজার ৬০০ টাকা, যা কমিয়ে ৫০ হাজার টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘জায়েন্স এক্সপেডিশন’ স্টেন্টের দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি, এটি আগের মতোই ৭১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হবে।

তবে ‘জায়েন্স আলপাইন’ এবং ‘জায়েন্স সিয়েরা’ স্টেন্ট দুটির দাম ছিল যথাক্রমে ১ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ এবং ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, যা কমিয়ে ৯০ হাজার টাকায় আনা হয়েছে।

এছাড়া মেডট্রনিক কোম্পানির আরেকটি স্টেন্ট ‘অনিক্স ট্রুকর’ আগে বিক্রি হতো ৭২ হাজার ৫০০ টাকায়। এখন সেটি পাওয়া যাবে ৫০ হাজার টাকায়।

প্রসঙ্গত, স্টেন্ট বা রিং পরানোই বাংলাদেশে হার্টের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। কারো হৃদপিন্ডে রক্ত সঞ্চালনে ব্লক বা বাধার সৃষ্টি হলে ডাক্তার তাকে এক বা একাধিক রিং পরানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

হার্টে রিং পরানোর পদ্ধতিকে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি বলা হয়। এই পদ্ধতিতে, একটি সরু ক্যাথেটার ব্যবহার করে ধমনীতে একটি ছোট, জাল আকৃতির নল (স্টেন্ট) স্থাপন করা হয়। এটি রক্তনালীকে খোলা রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদপিণ্ডে রক্ত​সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।

আর রিং বাংলাদেশে আসে দেশের বাইরে থেকে। সাধারণত ইউরোপ-আমেরিকা থেকে এগুলো আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও জার্মানি, পোল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও আয়ারল্যান্ড থেকে রিং আসে বাংলাদেশে। এছাড়া জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত থেকেও রিং আমদানি করা হয়।

আমদানি করা এসব রিংয়ের মূল্য তালিকা বিভিন্ন হাসপাতালে টানানো থাকে। রোগীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ তালিকা থেকে বেছে নেওয়া রিং রোগীর হার্টে প্রতিস্থাপন করেন চিকিৎসকরা।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :

হার্টের রিং-এর দাম কমানোর সিদ্ধান্ত সরকারের

Update Time : ০৬:৩৪:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

 

হার্টের স্টেন্টের (রিং) দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ৩ থেকে ৮৮ হাজার টাকা কমবে একেকটির দাম।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের স্বাক্ষর করা এক আদেশে তিন কোম্পানির ১১ ধরনের স্টেন্টের দাম কমিয়ে নতুন করে নির্ধারণ করা হয়। স্টেন্ট আমদানি প্রতিষ্ঠানভেদে খুচরা মূল্য সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে স্টেন্টভেদে দাম কমানো হয়েছে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা।

নতুন তালিকা অনুযায়ী, মেডট্রনিক কোম্পানির ‘রিজলিউট অনিক্স’ স্টেন্টের আগের দাম ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা, যা কমিয়ে ৯০ হাজার টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।

বোস্টন সায়েন্টিফিক কোম্পানির ‘প্রোমাস এলিট’ স্টেন্টটি আগে ৭৯ হাজার টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা ৭২ হাজার টাকা। একই কোম্পানির ‘প্রোমাস প্রিমিয়ার ’ স্টেন্টের দাম ৭৩ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৭০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

সিনার্জি সিরিজের তিনটি স্টেন্টের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে ‘সিনার্জি এক্সডি’ স্টেন্টে, যার আগের দাম ছিল ১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। নতুন দামে এটি এখন বিক্রি হবে ১ লাখ টাকায়। অন্যদিকে ‘সিনার্জি’ ও ‘সিনার্জি শিল্ড’ স্টেন্ট দুটির দাম কমিয়ে যথাক্রমে ৯০ হাজার টাকা করা হয়েছে, যা আগে ছিল ১ লাখ ১৭ হাজার ও ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।

অ্যাবট কোম্পানির ‘জায়েন্স প্রাইম’ স্টেন্টের দাম ছিল ৬৬ হাজার ৬০০ টাকা, যা কমিয়ে ৫০ হাজার টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘জায়েন্স এক্সপেডিশন’ স্টেন্টের দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি, এটি আগের মতোই ৭১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হবে।

তবে ‘জায়েন্স আলপাইন’ এবং ‘জায়েন্স সিয়েরা’ স্টেন্ট দুটির দাম ছিল যথাক্রমে ১ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ এবং ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, যা কমিয়ে ৯০ হাজার টাকায় আনা হয়েছে।

এছাড়া মেডট্রনিক কোম্পানির আরেকটি স্টেন্ট ‘অনিক্স ট্রুকর’ আগে বিক্রি হতো ৭২ হাজার ৫০০ টাকায়। এখন সেটি পাওয়া যাবে ৫০ হাজার টাকায়।

প্রসঙ্গত, স্টেন্ট বা রিং পরানোই বাংলাদেশে হার্টের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। কারো হৃদপিন্ডে রক্ত সঞ্চালনে ব্লক বা বাধার সৃষ্টি হলে ডাক্তার তাকে এক বা একাধিক রিং পরানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

হার্টে রিং পরানোর পদ্ধতিকে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি বলা হয়। এই পদ্ধতিতে, একটি সরু ক্যাথেটার ব্যবহার করে ধমনীতে একটি ছোট, জাল আকৃতির নল (স্টেন্ট) স্থাপন করা হয়। এটি রক্তনালীকে খোলা রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদপিণ্ডে রক্ত​সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।

আর রিং বাংলাদেশে আসে দেশের বাইরে থেকে। সাধারণত ইউরোপ-আমেরিকা থেকে এগুলো আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও জার্মানি, পোল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও আয়ারল্যান্ড থেকে রিং আসে বাংলাদেশে। এছাড়া জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত থেকেও রিং আমদানি করা হয়।

আমদানি করা এসব রিংয়ের মূল্য তালিকা বিভিন্ন হাসপাতালে টানানো থাকে। রোগীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ তালিকা থেকে বেছে নেওয়া রিং রোগীর হার্টে প্রতিস্থাপন করেন চিকিৎসকরা।

সবুজদেশ/এসএএস