ঢাকা ০৩:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যশোরে গণঅধিকার পরিষদের দুই নেতার পদত্যাগ

  • সবুজদেশ ডেস্ক:
  • Update Time : ০৪:১২:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫
  • ৪৭ বার পড়া হয়েছে।

 

গণঅধিকার পরিষদ যশোর সদর উপজেলার দুই নেতা পদত্যাগ করেছেন। শনিবার রাতে তাঁরা পৃথক লিখিত পত্রে নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগের কথা জানান। পদত্যাগ করা নেতারা হলেন সদর উপজেলার সহপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু বক্কার ছিদ্দিক এবং অর্থ সম্পাদক রাফাত রহমান দ্বীপ।

পদত্যাগের সূত্রপাত হয় কেন্দ্রীয় সভাপতির সমাবেশের পর। পদত্যাগকারীরা অভিযোগ করেন, দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর সম্প্রতি যশোরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাফ বা পুনর্বাসনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ কারণে তাদের নিজের আদর্শের সঙ্গে সমঝোতা করে রাজনীতি করা সম্ভব হচ্ছে না।

পদত্যাগপত্রে দুই নেতা উল্লেখ করেছেন, গণঅধিকার পরিষদ স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভাজনের রাজনীতির দিকে ধাবমান। তারা বলেন, ‘জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী হলেও গতানুগতিক ধারার বাইরে রাজনীতি করতে আমরা গণঅধিকার পরিষদের রাজনীতি শুরু করেছিলাম। তবে এখন আমাদের আদর্শের সঙ্গে সমঝোতা করা সম্ভব হচ্ছে না।’

নেতা-কর্মীরা জানান, গত ২২ আগস্ট ’১৮-এর কোটা সংস্কার থেকে ’২৪-এর রাষ্ট্র সংস্কারের স্মৃতিচারণ ও গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণসমাবেশের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ যশোর জেলা। যশোর শহরের টাউন হল ময়দানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন নুরুল হক নূর। সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাফ করে দেওয়া নিয়ে বক্তব্য দেন নুর। অনেকেই পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনাও করেছেন। এর প্রতিবাদে অনেক নেতা-কর্মী ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে। ক্ষুব্ধ হয়েই তারা পদত্যাগ করেছেন।

পদত্যাগকারী রাফাত রহমান দ্বীপ বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদ এখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। নৈতিকতার দিক থেকে আমি পদত্যাগ করেছি। সমাবেশের বক্তব্যে এটি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।’

সংগঠনটির সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক শাকিল মল্লিক টিপু বলেন, ‘আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছিল, তারা পদত্যাগ করবে। কিন্তু লিখিত কোনো পত্র পাইনি। এমনকি কী কারণে তারা পদত্যাগ করবে, সেটাও জানি না।’

খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল বলেন, ‘শুনেছি তারা পদত্যাগ করেছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, তারা আগে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিএনপির নেতারা তাদের বলেছে গণঅধিকার পরিষদ করার দরকার নেই। তাদের কথা শুনে এখন দল থেকে পদত্যাগ করেছে। এমনকি তাদের পদত্যাগপত্রে স্বীকার করেছে, আগে জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের মানুষ ছিল তারা। দল সম্পর্কে তারা যে অভিযোগ তুলছে, সেই অভিযোগ মিথ্যা।’

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :
জনপ্রিয়

যশোরে গণঅধিকার পরিষদের দুই নেতার পদত্যাগ

Update Time : ০৪:১২:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

 

গণঅধিকার পরিষদ যশোর সদর উপজেলার দুই নেতা পদত্যাগ করেছেন। শনিবার রাতে তাঁরা পৃথক লিখিত পত্রে নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগের কথা জানান। পদত্যাগ করা নেতারা হলেন সদর উপজেলার সহপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু বক্কার ছিদ্দিক এবং অর্থ সম্পাদক রাফাত রহমান দ্বীপ।

পদত্যাগের সূত্রপাত হয় কেন্দ্রীয় সভাপতির সমাবেশের পর। পদত্যাগকারীরা অভিযোগ করেন, দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর সম্প্রতি যশোরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাফ বা পুনর্বাসনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ কারণে তাদের নিজের আদর্শের সঙ্গে সমঝোতা করে রাজনীতি করা সম্ভব হচ্ছে না।

পদত্যাগপত্রে দুই নেতা উল্লেখ করেছেন, গণঅধিকার পরিষদ স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভাজনের রাজনীতির দিকে ধাবমান। তারা বলেন, ‘জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী হলেও গতানুগতিক ধারার বাইরে রাজনীতি করতে আমরা গণঅধিকার পরিষদের রাজনীতি শুরু করেছিলাম। তবে এখন আমাদের আদর্শের সঙ্গে সমঝোতা করা সম্ভব হচ্ছে না।’

নেতা-কর্মীরা জানান, গত ২২ আগস্ট ’১৮-এর কোটা সংস্কার থেকে ’২৪-এর রাষ্ট্র সংস্কারের স্মৃতিচারণ ও গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণসমাবেশের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ যশোর জেলা। যশোর শহরের টাউন হল ময়দানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন নুরুল হক নূর। সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাফ করে দেওয়া নিয়ে বক্তব্য দেন নুর। অনেকেই পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনাও করেছেন। এর প্রতিবাদে অনেক নেতা-কর্মী ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে। ক্ষুব্ধ হয়েই তারা পদত্যাগ করেছেন।

পদত্যাগকারী রাফাত রহমান দ্বীপ বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদ এখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। নৈতিকতার দিক থেকে আমি পদত্যাগ করেছি। সমাবেশের বক্তব্যে এটি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।’

সংগঠনটির সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক শাকিল মল্লিক টিপু বলেন, ‘আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছিল, তারা পদত্যাগ করবে। কিন্তু লিখিত কোনো পত্র পাইনি। এমনকি কী কারণে তারা পদত্যাগ করবে, সেটাও জানি না।’

খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল বলেন, ‘শুনেছি তারা পদত্যাগ করেছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, তারা আগে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিএনপির নেতারা তাদের বলেছে গণঅধিকার পরিষদ করার দরকার নেই। তাদের কথা শুনে এখন দল থেকে পদত্যাগ করেছে। এমনকি তাদের পদত্যাগপত্রে স্বীকার করেছে, আগে জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের মানুষ ছিল তারা। দল সম্পর্কে তারা যে অভিযোগ তুলছে, সেই অভিযোগ মিথ্যা।’

সবুজদেশ/এসএএস