ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নাটাবাড়ীয়া গ্রামে গোয়াল ঘরে অগ্নিকাণ্ডে মুহূর্তেই ভস্মীভূত হলো এক কৃষকের স্বপ্ন। আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছে তার আদরের দুটি গরু। বাকি দুইটি গরুও আগুনে গুরুতর আহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) গভীর রাতে নাটাবাড়ীয়া গ্রামের ওকাশেম মন্ডলের গোয়াল ঘরে এ ঘটনা ঘটে। আগুনে তার প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রতিবেশীরা জানান, এ ঘটনায় শুধু একটি পরিবারই নয়, পুরো গ্রাম শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসা গ্রামবাসীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে, তবে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। একটি গাভী ও একটি বকনা বাছুর হারিয়ে দিশেহারা কাশেম মন্ডল এখন পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। গরুগুলোই ছিল তার সংসারের ভরসা।
প্রতিবেশী জিয়ার মন্ডল বলেন, কাশেম অসহায় গরীব মানুষ। অনেক কষ্ট করে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চারটি গরু ক্রয় করে। তার মেয়ে বড় হচ্ছে। এই গরু বিক্রয় করে মেয়েকে বিয়ে দিতে চেয়েছিল। গত রাতে আগুনে পুড়ে চারটি গরুর মধ্যে দুইটা গরু মারা গেছে এবং বাকি দুইটা মৃত্যুর মুখোমুখি।
কাশেমের স্ত্রী শ্যামলী বলেন, অনেক কষ্ট করে , এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এই গরু গুলো কিনেছি। আশা ছিল গরু পালন করে একটি ঘর উঠাবো। মেয়েটা বড় হচ্ছে তাকে বিয়ে দিবো। অনেক কষ্ট করি। খেয়ে না খেয়ে সংসার চালাই। হঠাৎ গত রাতে আগুনে আমাদের সব স্বপ্ন পুড়ে গেছে।
কাশেম মন্ডল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, রাত দুইটার দিকে হঠাৎ গরুগুলোর চিৎকার শুনে ঘর থেকে দৌড়ে বের হই। দেখি গোয়াল ঘরে আগুন জ্বলছে। প্রাণপণে চেষ্টা করেও গরু গুলোকে বাচাতে পারলাম না। আমার দুইটা গরু পুড়ে মরলো চোখের সামনে। বাকি দুইটা মৃত্যুর কাছাকাছি।
হলিধানী ইউনিয়ন বিএনপি সিনিয়র সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, আগুনে পুড়ে গরু মারা যাওয়ার সংবাদ শুনে কাশেমের বাড়িতে আসি। বাড়িতে এসে দেখি কাশেম অসহায় গরিব মানুষ। তার গোয়ালে আগুন লেগে চারটি গরু দগ্ধ। তার চারটি গরুর মধ্যে দুইটা গরু মারা গেছে এবং বাকি দুইটা গরুও মারা যাবার পথে। কাশেম অসহায় গরীব মানুষ হওয়ায় আমাদের দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাকে কিছু সহযোগিতা করা হবে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, নাটাবাড়ীয়া গ্রামের এক খামারীর গোয়াল ঘরে আগুন লেগে চারটি গরু দগ্ধ হবার জানতে পেরেছি। তার মধ্যে দুইটা গরু মারা গেছে।
তিনি বলেন, কোন খামারী ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাকে আর্থিক ভাবে কোন অনুদান দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে খামারীর গরুর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হবে।
সবুজদেশ/এসএএস