ঢাকা ১১:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভাঙ্গায় পুলিশের ৪ গাড়ি ভাঙচুর, ১১ মোটরসাইকেলে আগুন

  • সবুজদেশ ডেস্ক:
  • Update Time : ০৭:৪৯:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে।

 

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে থানা ও উপজেলা পরিষদে হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। দুপুর ১২টা ৪৫ থেকে ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত আধা ঘণ্টার মধ্যে এ তাণ্ডব চলে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আন্দোলনকারীরা প্রথমে উপজেলা পরিষদের হল রুমে ঢুকে শতাধিক চেয়ার, ১০টি ফ্যান ও ৩০টির বেশি লাইট ভাঙচুর করে। এরপর তিনতলা বিশিষ্ট পরিষদ ভবনের প্রতিটি তলায় সাতটি করে মোট ২১টি কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষের কাচ ভাঙা হয়। পরিষদ চত্বর ও অফিসার্স ক্লাবের গ্যারেজে সাতটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলা অফিসার্স ক্লাবও ভাঙচুর করা হয়।

অন্যদিকে ভাঙ্গা থানায় হামলা চালিয়ে পুলিশের তিনটি গাড়ি ও একটি বড় রিজার্ভ ভ্যান ভেঙে দুমড়ে-মুচড়ে দেওয়া হয়। থানা প্রাঙ্গণে অন্তত চারটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় থানার ব্যানার ও ভবনের কাচও।

এ ঘটনার পর পুরো ভাঙ্গা এখন শান্ত রয়েছে। তবে ঢাকা-বরিশাল ও খুলনা মহাসড়ক অবরোধ চলছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে সড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রোকিবুজ্জামান।

ভাঙ্গা থানা ভবনে অবস্থানরত ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিলের বক্তব্য জানতে চেয়েও জানা যায়নি। ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানও এ ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হননি।

তবে হামলা-ভাঙচুরের প্রত্যক্ষদর্শী ভাঙ্গা পৌরসভার কাপুড়িয়া সদরদী এলাকার বাসিন্দা ভাঙ্গা বাজার কাপড়ের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মৃধা জানান, থানা ও উপজেলায় ভাঙচুরের সময় লোকজন রামদা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ঢুকে পড়ে। ওইসব অস্ত্র দিয়ে তাণ্ডব চালায় এবং পেট্রল দিয়ে মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, হামলার সময় কাউকে বাধা দেয়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুর-৪ আসন থেকে আলগী ও হামিরদী নামে দুটি ইউনিয়ন কেটে নিয়ে ফরিদপুর-২ আসনে সংযুক্ত করার প্রতিবাদে দুই সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা আসনগুলোর পূর্বের অবস্থা বহাল চান। আন্দোলনের অংশ হিসেবে রোববার থেকে টানা তিন দিন মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সোমবার দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি চলছে। বেলা ১১টা থেকে ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর ভাঙ্গা সদরে এসে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :

ভাঙ্গায় পুলিশের ৪ গাড়ি ভাঙচুর, ১১ মোটরসাইকেলে আগুন

Update Time : ০৭:৪৯:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে থানা ও উপজেলা পরিষদে হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। দুপুর ১২টা ৪৫ থেকে ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত আধা ঘণ্টার মধ্যে এ তাণ্ডব চলে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আন্দোলনকারীরা প্রথমে উপজেলা পরিষদের হল রুমে ঢুকে শতাধিক চেয়ার, ১০টি ফ্যান ও ৩০টির বেশি লাইট ভাঙচুর করে। এরপর তিনতলা বিশিষ্ট পরিষদ ভবনের প্রতিটি তলায় সাতটি করে মোট ২১টি কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষের কাচ ভাঙা হয়। পরিষদ চত্বর ও অফিসার্স ক্লাবের গ্যারেজে সাতটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলা অফিসার্স ক্লাবও ভাঙচুর করা হয়।

অন্যদিকে ভাঙ্গা থানায় হামলা চালিয়ে পুলিশের তিনটি গাড়ি ও একটি বড় রিজার্ভ ভ্যান ভেঙে দুমড়ে-মুচড়ে দেওয়া হয়। থানা প্রাঙ্গণে অন্তত চারটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় থানার ব্যানার ও ভবনের কাচও।

এ ঘটনার পর পুরো ভাঙ্গা এখন শান্ত রয়েছে। তবে ঢাকা-বরিশাল ও খুলনা মহাসড়ক অবরোধ চলছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে সড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রোকিবুজ্জামান।

ভাঙ্গা থানা ভবনে অবস্থানরত ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিলের বক্তব্য জানতে চেয়েও জানা যায়নি। ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানও এ ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হননি।

তবে হামলা-ভাঙচুরের প্রত্যক্ষদর্শী ভাঙ্গা পৌরসভার কাপুড়িয়া সদরদী এলাকার বাসিন্দা ভাঙ্গা বাজার কাপড়ের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মৃধা জানান, থানা ও উপজেলায় ভাঙচুরের সময় লোকজন রামদা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ঢুকে পড়ে। ওইসব অস্ত্র দিয়ে তাণ্ডব চালায় এবং পেট্রল দিয়ে মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, হামলার সময় কাউকে বাধা দেয়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুর-৪ আসন থেকে আলগী ও হামিরদী নামে দুটি ইউনিয়ন কেটে নিয়ে ফরিদপুর-২ আসনে সংযুক্ত করার প্রতিবাদে দুই সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা আসনগুলোর পূর্বের অবস্থা বহাল চান। আন্দোলনের অংশ হিসেবে রোববার থেকে টানা তিন দিন মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সোমবার দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি চলছে। বেলা ১১টা থেকে ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর ভাঙ্গা সদরে এসে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।

সবুজদেশ/এসএএস