তিন দিন আগেও ক্ষেতের ধান গাছগুলো সতেজ ছিল। যা দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছিল। কিন্ত গত কাল মাঠে এসে দেখি এক বিঘা জমির অর্ধেকের বেশি গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। কীটপতঙ্গের আক্রমনে এমনটি হওয়ার কথা নয়। কিন্ত কি কারনে এমনটি হয়েছে তা বুঝতেও পারছিনা। ধারদেনার মাধ্যমে চাষ করে এখন কিভাবে সংসার চালাবো ক্ষেতে দাঁড়িয়ে এ কথা বলতে বলতে কৃষক রিপন হোসেন কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার বাড়ি ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ফয়লা গ্রামে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক রিপন হোসেন জানান, মাঠে তার এই বিঘা জমিই আছে। জমিটি থেকে দুই আবাদে যে ধান ঘরে আসে তা দিয়ে সংসারের সারাবছরের চাউলের চাহিদা মেটান। আর নিজে একটি পরিবেশক প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনচালিত একটি গাড়ি চালান। এ দুইয়ে মিলে কোনভাবে সংসার চলে যায়। কিন্ত এবছরে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল।

তিনি বলেন, বছরটিতে অতিবর্ষনে প্রথম দফার বীজতলা নষ্ট হয়ে গেলে দ্বিতীয় দফায় আবার বীজতলা তৈরী করেন। বীজতলা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ধারদেনার মাধ্যমে প্রায় ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করেছেন। আশা ছিল ক্ষেতটি থেকে এ আমন মৌসুমে কমপক্ষে ২৫/২৬ মন ধান পাবেন। কিন্ত হঠাৎ অর্ধেকের বেশি জমির ধান গাছ শুকিয়ে লাল হয়ে গেছে। যা দূর থেকেও ক্ষেতের দিকে তাকালে নজরে আসছে। কীটপতঙ্গের আক্রমন হলেও কীটনাশক স্প্রে করলে তা দমন করা যায়। কিন্ত সে সুযোগও নেই। এখন চিন্তায় আছেন ক্ষেতের বাকি অংশটুকুতে ছড়িয়ে পড়ে কিনা।
ওই গ্রামের কৃষক তোতা মিয়া জানান, রিপন হোসেন তাদের মাঠের একজন প্রান্তিক কৃষক। কয়দিন আগেও তার ধানক্ষেতটি ভালো ছিল। কিন্ত হঠাৎ কি জন্য জমির একপাশের ধান গাছগুলো শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। সেটা তারাও বুঝতে পারছেন না। তিনি আরও বলেন, একজন কৃষকের ফসলীক্ষেত নষ্ট হয়ে গেলে সে ক্ষতি পুশিয়ে উঠা কঠিন হয়ে যায়। কৃষক রিপনের ক্ষেত্রেও তেমনটিই হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুব আলম রনি জানান, ক্ষেত না দেখে বলা কঠিন। তবে ওই কৃষক যোগাযোগ করলে কৃষি অফিসের লোকজন পাঠিয়ে বিষয়টি তিনি দেখবেন।
সবুজদেশ/এসএএস