ঢাকা ১২:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘এবার আর কোনো কথা নাই, শুরুতেই দিবা’

  • সবুজদেশ ডেস্ক:
  • Update Time : ০৬:৩৮:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৪২ বার পড়া হয়েছে।

ছবি সংগৃহীত-

 

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর নির্দেশনা সংবলিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ফোনালাপ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে তিনি কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব না রেখে এক কর্মকর্তাকে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করার নির্দেশনা দেন।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্কে এ অডিও রেকর্ডটি শোনানো হয়।

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আরও একজন।

শুরুতে তাজুল ইসলাম জুলাই-আগস্ট আন্দোলন নিয়ে তৈরি একটি প্রামাণ্যচিত্র ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করেন। ওই ভিডিওতে শেখ হাসিনার শাসনামলে আন্দোলন দমন অভিযান এবং আওয়ামী লীগের ভেতরে সৃষ্ট অস্থিরতার চিত্র তুলে ধরা হয়। এরপর দেখানো হয় শেখ হাসিনার এক ফোনালাপের উল্লেখ থাকা অংশটি, যেখানে ছাত্র-জনতার জমায়েত দমন নিয়ে নির্দেশনা দেন তিনি।

অডিওতে কল ধরার সঙ্গে সঙ্গেই অপর প্রান্ত থেকে সালাম দেওয়া হয় ‘স্যার’ সম্বোধনে। শেখ হাসিনাকে তখন বলতে শোনা যায়, ‘ওরা কিন্তু জায়গায় জায়গায় এখন জমায়েত হতে শুরু করেছে। মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এবং বিভিন্ন জায়গায়। শুরুতেই কিন্তু ইয়ে…..করতে হবে, একদম শুরুতেই। ধাওয়া দিলে এরা গলিতে গলিতে থাকবে। এবার আর কোনো কথা নাই। এবার শুরুতেই দিবা।’

এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনালকে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে কথোপকথনের অপরপ্রান্তের ব্যক্তি হলেন কর্নেল রাজিব। তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি মিলিটারি সেক্রেটারি ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশে নেই। গত বছরের ২৯ জুলাই ফোনের মাধ্যমে রাজিবকে এ নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার শেষ কথা হচ্ছে- এবার আর কোনো কথা নাই। এবার শুরুতেই দিবা। মানে আসামাত্রই গুলি করা হবে। এটাই নির্দেশনা ছিল।

রোববার এ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হয়। বেলা পৌনে ১২টা থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপন। এতে আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলের ইতিহাস তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর। একইসঙ্গে গুম-খুনসহ নারকীয় সব ঘটনার বর্ণনা দেন। আর এসব বিবরণ এ মামলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তাজুল ইসলাম।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :
জনপ্রিয়

‘এবার আর কোনো কথা নাই, শুরুতেই দিবা’

Update Time : ০৬:৩৮:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

 

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর নির্দেশনা সংবলিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ফোনালাপ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে তিনি কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব না রেখে এক কর্মকর্তাকে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করার নির্দেশনা দেন।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্কে এ অডিও রেকর্ডটি শোনানো হয়।

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আরও একজন।

শুরুতে তাজুল ইসলাম জুলাই-আগস্ট আন্দোলন নিয়ে তৈরি একটি প্রামাণ্যচিত্র ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করেন। ওই ভিডিওতে শেখ হাসিনার শাসনামলে আন্দোলন দমন অভিযান এবং আওয়ামী লীগের ভেতরে সৃষ্ট অস্থিরতার চিত্র তুলে ধরা হয়। এরপর দেখানো হয় শেখ হাসিনার এক ফোনালাপের উল্লেখ থাকা অংশটি, যেখানে ছাত্র-জনতার জমায়েত দমন নিয়ে নির্দেশনা দেন তিনি।

অডিওতে কল ধরার সঙ্গে সঙ্গেই অপর প্রান্ত থেকে সালাম দেওয়া হয় ‘স্যার’ সম্বোধনে। শেখ হাসিনাকে তখন বলতে শোনা যায়, ‘ওরা কিন্তু জায়গায় জায়গায় এখন জমায়েত হতে শুরু করেছে। মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এবং বিভিন্ন জায়গায়। শুরুতেই কিন্তু ইয়ে…..করতে হবে, একদম শুরুতেই। ধাওয়া দিলে এরা গলিতে গলিতে থাকবে। এবার আর কোনো কথা নাই। এবার শুরুতেই দিবা।’

এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনালকে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে কথোপকথনের অপরপ্রান্তের ব্যক্তি হলেন কর্নেল রাজিব। তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি মিলিটারি সেক্রেটারি ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশে নেই। গত বছরের ২৯ জুলাই ফোনের মাধ্যমে রাজিবকে এ নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার শেষ কথা হচ্ছে- এবার আর কোনো কথা নাই। এবার শুরুতেই দিবা। মানে আসামাত্রই গুলি করা হবে। এটাই নির্দেশনা ছিল।

রোববার এ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হয়। বেলা পৌনে ১২টা থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপন। এতে আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলের ইতিহাস তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর। একইসঙ্গে গুম-খুনসহ নারকীয় সব ঘটনার বর্ণনা দেন। আর এসব বিবরণ এ মামলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তাজুল ইসলাম।

সবুজদেশ/এসএএস