ঢাকা ১২:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাঁচ দাবিতে নতুন কর্মসূচি দিলো জামায়াতসহ সমমনা দল

  • সবুজদেশ ডেস্ক:
  • Update Time : ০৬:৩২:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে।

 

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা দাবি আদায়ে তিন দিনের নতুন কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিশসহ সমমনা দলগুলো।

রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ২০ অক্টোবর রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল, ২৫ অক্টোবর সকল বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল এবং ২৭ অক্টোবর সকল জেলা শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল।

সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, আগামী ২৭ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মানা না হলে দেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে দলগুলোর পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পড়েন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ডক্টর আমহদ আব্দুল কাদের।

উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ডক্টর আমহদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের (একাংশ) মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, সহসভাপতি ও মুখপাত্র, জাগপা, নিজামুল হক নাইম, মহাসচিব বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জনগণের দাবিসমূহ কার্যকর করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। এমতাবস্থায় জনগণের দাবি আদায়ের জন্য গণআন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। তাই জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করে তার আলোকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্ররূপে গড়ে তুলতে রাজপথের এই আন্দোলন।

আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের সফল গণঅভ্যুত্থানের পর স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। দেশের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়ে। দেশে কোনো সরকার না থাকায় সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়। সংবিধানের অনেক বিধানাবলি অকার্যকর হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এ সরকারের বৈধতার উৎস এবং ভিত্তি হচ্ছে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭-এ বর্ণিত বিধানের জনগণের অভিপ্রায়। সেই অভিপ্রায় বলে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ দিতে হবে।

পিআর পদ্ধতির যৌক্তিকতা তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ইতোমধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভয়ভীতিমুক্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছি। আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ, ভোটকেন্দ্র দখল, পেশিশক্তি প্রদর্শন ও ভোটের বিভিন্ন অনিয়ম ও অপতৎপরতা বন্ধ, কোয়ালিটি-সম্পন্ন পার্লামেন্ট এবং দক্ষ আইনপ্রণেতা তৈরিসহ প্রতিটি ভোট মূল্যায়নের লক্ষ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছি। বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতৃবৃন্দ এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছে আন্দোলনরত দলসমূহ।

দাবিসমূহ হলো:

১। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে গণভোট আয়োজন করা।
২। আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা।
৩। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
৪। ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা।
৫। স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :
জনপ্রিয়

পাঁচ দাবিতে নতুন কর্মসূচি দিলো জামায়াতসহ সমমনা দল

Update Time : ০৬:৩২:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

 

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা দাবি আদায়ে তিন দিনের নতুন কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিশসহ সমমনা দলগুলো।

রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ২০ অক্টোবর রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল, ২৫ অক্টোবর সকল বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল এবং ২৭ অক্টোবর সকল জেলা শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল।

সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, আগামী ২৭ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মানা না হলে দেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে দলগুলোর পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পড়েন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ডক্টর আমহদ আব্দুল কাদের।

উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ডক্টর আমহদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের (একাংশ) মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, সহসভাপতি ও মুখপাত্র, জাগপা, নিজামুল হক নাইম, মহাসচিব বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জনগণের দাবিসমূহ কার্যকর করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। এমতাবস্থায় জনগণের দাবি আদায়ের জন্য গণআন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। তাই জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করে তার আলোকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্ররূপে গড়ে তুলতে রাজপথের এই আন্দোলন।

আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের সফল গণঅভ্যুত্থানের পর স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। দেশের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়ে। দেশে কোনো সরকার না থাকায় সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়। সংবিধানের অনেক বিধানাবলি অকার্যকর হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এ সরকারের বৈধতার উৎস এবং ভিত্তি হচ্ছে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭-এ বর্ণিত বিধানের জনগণের অভিপ্রায়। সেই অভিপ্রায় বলে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ দিতে হবে।

পিআর পদ্ধতির যৌক্তিকতা তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ইতোমধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভয়ভীতিমুক্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছি। আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ, ভোটকেন্দ্র দখল, পেশিশক্তি প্রদর্শন ও ভোটের বিভিন্ন অনিয়ম ও অপতৎপরতা বন্ধ, কোয়ালিটি-সম্পন্ন পার্লামেন্ট এবং দক্ষ আইনপ্রণেতা তৈরিসহ প্রতিটি ভোট মূল্যায়নের লক্ষ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছি। বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতৃবৃন্দ এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছে আন্দোলনরত দলসমূহ।

দাবিসমূহ হলো:

১। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে গণভোট আয়োজন করা।
২। আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা।
৩। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
৪। ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা।
৫। স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

সবুজদেশ/এসএএস