ঢাকা ০৩:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমার থেকে গরু আসছে না

Reporter Name

কোরবানির জন্য শতকোটি টাকা বিনিয়োগ করে গবাদিপশু কেনার পরও সেই পশু এখন দেশে আনছেন না ব্যবসায়ীরা। কারণ, দাম কম। তাই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের কেনা প্রায় ৪০ হাজার গবাদিপশু পড়ে আছে মিয়ানমারে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা হঠাৎ করে মিয়ানমার থেকে আনা পশুর দাম কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে লোকসানের আশঙ্কায় মিয়ানমারের পশুগুলো টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডরে আনার সাহস পাচ্ছেন না স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

পশু চোরাচালান বন্ধ করতে ২০০৩ সালের ২৫ মে এ করিডর চালু হয়। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের একমাত্র করিডর এটি। এ করিডর দিয়ে গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৭টি পশু আমদানির বিপরীতে সরকার রাজস্ব আদায় করে ৬ কোটি ১৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি গরু ও মহিষের বিপরীতে ৫০০ টাকা, ছাগলে ২০০ টাকা করে রাজস্ব পরিশোধ করতে হয় আমদানিকারককে।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে এই করিডরে গিয়ে দেখা যায়, নাফ নদী অতিক্রম করে একটি কাঠের ট্রলারে আনা হয়েছে ১০৫টি গরু। মিয়ানমারের আকিয়াব থেকে গরুগুলো আমদানি করেন টেকনাফের পশু ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম। করিডরের পাশের বেড়িবাঁধ ও নাফ নদীর চরে বাঁধা আছে আরও হাজারখানেক গরু।

জানতে চাইলে শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আগে প্রতিদিন ৭-৮টি ট্রলারে করে ৯০০ থেকে ১ হাজার পশু আসত। এখন পশু আমদানি ৯০ শতাংশ কমে গেছে। কারণ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা মিয়ানমারের গরুর দাম কমিয়ে দিয়েছেন। এতে প্রতিটি গরুর বিপরীতে লোকসান হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। বিক্রি না হওয়ায় শাহপরীর দ্বীপ করিডরে গত দুই দিনে তাঁর আমদানি করা ২৭৪টি গরু পড়ে আছে। মিয়ানমার অংশে পড়ে আছে আরও ৫ হাজার পশু।

শাহপরীর দ্বীপ করিডর পশু আমদানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুল্লাহ মনির বলেন, সমিতির সদস্যরা প্রায় ১২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে কোরবানে বিক্রির জন্য মিয়ানমার থেকে প্রায় ৪০ হাজার গরু-মহিষ ক্রয় করেন। কিন্তু কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা এসব পশুর দাম কমিয়ে দিয়েছেন। এতে বিপাকে পড়েছে টেকনাফের আমদানিকারকেরা।

টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, চলতি মাসের প্রথম ২৭ দিনে মিয়ানমার থেকে ৩ হাজার ৮৩৬টি গরু ও ১ হাজার ১৫৮টি মহিষ আমদানি হয়েছে। তবে ১২ জুলাই থেকে আমদানি ৯০ শতাংশ কমে গেছে।

করিডরে চট্টগ্রামের মাদারবাড়ী এলাকার পশু ব্যবসায়ী সাবের হোসেন বলেন, এবার ভারত থেকে বিপুল পশু আসছে। মিয়ানমারের তুলনায় ভারতীয় গরু সস্তা। এ কারণে মিয়ানমারের পশু কেনায় আগ্রহ কম।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৬:১১:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুলাই ২০১৮
১০৬৩ Time View

মিয়ানমার থেকে গরু আসছে না

আপডেট সময় : ০৬:১১:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুলাই ২০১৮

কোরবানির জন্য শতকোটি টাকা বিনিয়োগ করে গবাদিপশু কেনার পরও সেই পশু এখন দেশে আনছেন না ব্যবসায়ীরা। কারণ, দাম কম। তাই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের কেনা প্রায় ৪০ হাজার গবাদিপশু পড়ে আছে মিয়ানমারে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা হঠাৎ করে মিয়ানমার থেকে আনা পশুর দাম কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে লোকসানের আশঙ্কায় মিয়ানমারের পশুগুলো টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডরে আনার সাহস পাচ্ছেন না স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

পশু চোরাচালান বন্ধ করতে ২০০৩ সালের ২৫ মে এ করিডর চালু হয়। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের একমাত্র করিডর এটি। এ করিডর দিয়ে গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৭টি পশু আমদানির বিপরীতে সরকার রাজস্ব আদায় করে ৬ কোটি ১৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি গরু ও মহিষের বিপরীতে ৫০০ টাকা, ছাগলে ২০০ টাকা করে রাজস্ব পরিশোধ করতে হয় আমদানিকারককে।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে এই করিডরে গিয়ে দেখা যায়, নাফ নদী অতিক্রম করে একটি কাঠের ট্রলারে আনা হয়েছে ১০৫টি গরু। মিয়ানমারের আকিয়াব থেকে গরুগুলো আমদানি করেন টেকনাফের পশু ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম। করিডরের পাশের বেড়িবাঁধ ও নাফ নদীর চরে বাঁধা আছে আরও হাজারখানেক গরু।

জানতে চাইলে শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আগে প্রতিদিন ৭-৮টি ট্রলারে করে ৯০০ থেকে ১ হাজার পশু আসত। এখন পশু আমদানি ৯০ শতাংশ কমে গেছে। কারণ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা মিয়ানমারের গরুর দাম কমিয়ে দিয়েছেন। এতে প্রতিটি গরুর বিপরীতে লোকসান হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। বিক্রি না হওয়ায় শাহপরীর দ্বীপ করিডরে গত দুই দিনে তাঁর আমদানি করা ২৭৪টি গরু পড়ে আছে। মিয়ানমার অংশে পড়ে আছে আরও ৫ হাজার পশু।

শাহপরীর দ্বীপ করিডর পশু আমদানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুল্লাহ মনির বলেন, সমিতির সদস্যরা প্রায় ১২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে কোরবানে বিক্রির জন্য মিয়ানমার থেকে প্রায় ৪০ হাজার গরু-মহিষ ক্রয় করেন। কিন্তু কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা এসব পশুর দাম কমিয়ে দিয়েছেন। এতে বিপাকে পড়েছে টেকনাফের আমদানিকারকেরা।

টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, চলতি মাসের প্রথম ২৭ দিনে মিয়ানমার থেকে ৩ হাজার ৮৩৬টি গরু ও ১ হাজার ১৫৮টি মহিষ আমদানি হয়েছে। তবে ১২ জুলাই থেকে আমদানি ৯০ শতাংশ কমে গেছে।

করিডরে চট্টগ্রামের মাদারবাড়ী এলাকার পশু ব্যবসায়ী সাবের হোসেন বলেন, এবার ভারত থেকে বিপুল পশু আসছে। মিয়ানমারের তুলনায় ভারতীয় গরু সস্তা। এ কারণে মিয়ানমারের পশু কেনায় আগ্রহ কম।