খুলনায় থানায় গণধর্ষণ- মামলার ১০দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ
খুলনাঃ
‘পুলিশের ফাঁসানো মামলায় আমার বোন এখনও কারাগারে, তার জামিন পর্যন্ত হচ্ছে না। আর অপরাধ করেও পুলিশ সদস্যরা বাইরের হাওয়া খাচ্ছে’
খুলনা জিআরপি থানায় পুলিশের গণধর্ষণ মামলার ১০দিন অতিবাহিত হলেও কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি। তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, তদন্ত কার্যক্রম চলছে। আর ওসি উছমান ও এসআই নাজমুলকে ক্লোজড করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
ভুক্তভোগীর বোন হোসনে আরা বলেন, “আদালতের নির্দেশে মামলা হলেও আসামিদের এখনও গ্রেফতার করা হচ্ছে না। আসামিরা সকলেই পুলিশ এবং তাদেরতো পালিয়ে থাকার কোন কথা নয়। কিন্তু তাদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না। আর পুলিশের ফাঁসানো মামলায় আমার বোন এখনও কারাগারে। তার জামিন পর্যন্ত হচ্ছে না। আর অপরাধ করেও পুলিশ সদস্যরা বাইরের হাওয়া খাচ্ছে।”
তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া রেলওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ আহমেদ বলেন, “তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এ মামলায় সন্তোষজনক ফলাফল দেওয়া সম্ভব হবে।”
তিনি বলেন, “দুই পুলিশসদস্য ওসি উছমান গণি ও এসআই নাজমুলকে ক্লোজড করে পাকশিতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ মামলার আসামি পাঁচ পুলিশের কাউকেই এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি।”
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা ‘মানবাধিকার’ র সমন্বয়কারী এ্যাডভোকেট মোঃ মোমিনুল ইসলাম বলেন, “মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর তদন্ত কার্যক্রমের পাশাপাশি আসামিদের গ্রেফতার করারও বিধান রয়েছে। এখনও আসামিদের গ্রেফতার করা না করা দুঃখজনক।”
প্রসঙ্গত, ২ আগস্ট যশোর থেকে ট্রেনে খুলনায় আসার পথে গৃহবধূকে মোবাইল চুরির অভিযোগে আটক করে খুলনা রেল স্টেশনে কর্তব্যরত জিআরপি পুলিশের সদস্যরা। পরে রাতে জিআরপি থানায় আনার পর ওসি উছমান গনি পাঠানসহ পাঁচপুলিশ সদস্য ধর্ষণ করে তাকে।
পরদিন শনিবার তাকে পাঁচবোতল ফেন্সিডিলসহ একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে খুলনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত ফুলতলায় প্রেরণ করা হয়।
৪ আগস্ট আদালতে জামিন শুনানিকালে জিআরপি থানায় ধর্ষণের বিষয়টি আদালতের সামনে তুলে ধরেন তিনি। ৭ আগস্ট ওসি উছমান গণি পাঠান ও এসআই নাজমুলকে ক্লোজড করে পাকশি নেওয়া হয়। ৮ আগস্ট পাকশি ও ঢাকা থেকে গঠিত পৃথক ২টি তদন্ত টিমের সদস্যরা আদালতের অনুমতি নিয়ে জেল গেটে ভুক্তভোগীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
এরপর আদালতের নির্দেশে ৯ আগস্ট পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে জিআরপি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসেবে ফিরোজ আহমেদকে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। তিনি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভুক্তভোগীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৪ আগস্ট আবেদন করেন। আবেদনের শুনানি সোমবার হওয়ার কথা রয়েছে।