সবুজদেশ ডেস্কঃ

পবিত্র রমজান মাসে ইফতার, তারাবি নামাজ ও সাহরির সময় লোডশেডিং না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

এর আগে রমজান ও চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির সার্বিক বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) বিদ্যুৎ ভবনে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ সময় বিদ্যুৎ, সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় আসন্ন রমজান মাসে ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত ও বৃদ্ধি করা, পিক আওয়ারে (সন্ধ্যায়) চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং ইফতার, তারাবির নামাজ ও সেহরির সময়ে লোডশেড না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া টেকনিক্যাল বা অন্য কোনো কারণে যেন লোডশেড না হয় সেদিকে সজাগ থাকা; সকল বিতরণ সংস্থা ও কোম্পানিকে ওভারলোডেড ট্রান্সফরমার পরীক্ষা করে প্রতিস্থাপন করা এবং স্টোরে পর্যাপ্ত ট্রান্সফরমার মজুত রাখা; অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন কার্যক্রম জোরদার করা; বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; বিদ্যুতের অপচয় রোধে সিএফএল বাল্বের পরিবর্তে এলইডি বাল্ব প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; সুপার মার্কেট, পেট্রলপাম্প ও সিএনজি গ্যাস স্টেশনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাতি ব্যবহার না করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

একইসঙ্গে আসন্ন রমজান মাসে দোকানপাট, মার্কেট ও বিপণী বিতানসমূহ খোলা রাখার বিষয়ে বিদ্যমান বিধি-বিধান অনুসরণ করা; ইফতার ও তারাবির সময় শপিংমল, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ও অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে এসি ব্যবহার সীমিত রাখা; সকল দোকান মালিকদের মার্কেটের অভ্যন্তরীণ বৈদ্যুতিক ইকুইপমেন্ট পরীক্ষা করা; বিএসটিআইয়ের মান অনুযায়ী তার/ইকুইপমেন্ট বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সভায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যুতের চাহিদা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ নিয়ে দীর্ঘ পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করে। চলতি গ্রীষ্মকালে পিক আওয়ারে ১৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা হতে পারে এবং গ্যাসের সম্ভাব্য চাহিদা ১৫০০ এমএমসিএফডি হতে পারে বলেও সভায় জানানো হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, “শতভাগ বিদ্যুতায়নের দেশে এই সভা করা অপ্রাসঙ্গিক। বৈশ্বিক পরিস্থিতির জন্য করতে হচ্ছে। এই যুদ্ধের জন্য অনেক দেশের প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।”

এছাড়া সংশ্লিষ্ট সকলকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “সবাই একসঙ্গে থাকলে যে কোনো সমস্যাই দ্রুত সমাধান করা সম্ভব।”

আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যান মোহা. সেলিম উদ্দিন, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দপ্তর প্রধানরা।

সবুজদেশ/এস ইউ

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here