কালীগঞ্জে শিক্ষক অসিমকে নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় অভিভাবকরা!
বিশেষ প্রতিনিধি:
শনিবার সকাল ১০টা। প্রাইভেট পড়ে বাড়িতে এসে ছেলে বলল- আব্বু, “অসিম স্যারের কি বাড়িতে বউ ছেলে-মেয়ে নেই ? লজ্জায় ছেলের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি। ছেলের মুখ থেকে এমন প্রশ্ন শুনে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন এক অভিভাবক। নাম না প্রকাশ করে ওই অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে ঐ স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়ে। ছেলের মুখে এমন কথা শুনে হতবাগ হয়ে যান ওই অভিভাবক।
সাইফুজ্জামান স্বপন নামের আর এক অভিভাবক জানান, অসিম স্যারের কারনে আমরা আজ আমাদের ছেলের সামনে খুবই লজ্জা পায়। তাকে স্কুল থেকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কারেরও দাবি জানান তিনি।
সাহেব আলী নামের আরো এক অভিভাবক জানান, এমন শিক্ষক কি করে ঐতিহ্যবাহি সরকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করেন। আমরাও পড়েছি ওই বিদ্যালয়ে। অসিম কোন শিক্ষক হতে পারেন না। তাকে জুতার মালা পরিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া উচিৎ।
বিল্লাল হোসেন নামের এক অভিভাবক জানান, অসিম স্যারের কাছ থেকে অমাদের ছেলেরা কি শিখবে? এমন শিক্ষক আমরা চাইনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, সত্যি এমন শিক্ষকের জন্য আমরা খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি। কিভাবে একজন বিবাহিত শিক্ষক অবিবাহিত সেজে নিজের গোপনাঙ্গ অন্য একটি মেয়েকে দেখাতে পারে। আমরা আমাদের সন্তানদের সামনে খুবই লজ্জা পাচ্ছি। আমরা অসিম স্যারকে নিয়ে খুবই লজ্জার মধ্যে পড়েছি। বাজার ঘাটে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে আমাদের কটু কথা শুনতে হচ্ছে। আমরাও এর সঠিক বিচার চাই।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহি বিদ্যাপিট সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৮৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টি সুনামের সাথে প্রায় ১৪০ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে আসছে। এই বিদ্যালয়ের ছাত্ররা লেখাপড়া শেষ করে দেশের বড় বড় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু কিছু অযোগ্য শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়টি পরিচালনার জন্য আজ বিদ্যালয়টির সুনাম ক্ষুন্ন হতে চলেছে।
গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন গনমাধ্যমে স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট বানিজ্যের খবর প্রকাশিত হয়। প্রাইভেট বানিজ্যের খবর প্রকাশিত হলেও বন্ধ হয়নি প্রাইভেট বানিজ্য। এতে করে বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই শিক্ষক অসিমের কারনে গোটা কালীগঞ্জ বাসিসহ অভিভাবক মহল বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন।
উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন পূর্বে কালীগঞ্জ শহরের ১০তলা বিল্ডিংয়ের পিছনের একটি বাসায় শিক্ষক অসিম অনৈতিক কাজ করার জন্য গেলে তাকে হাতে নাতে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। পরে স্থানীয়দের হাতে-পায়ে ধরে এযাত্রা রক্ষা পান তিনি। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোরে একটি মেয়ে সাথে অনৈতিক কাজে গেলে আবারো হাতে নাতে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। এরপর স্থানীয়রা তাকে মারধর করে এবং তার মারধরের ভিডিওসহ বিভিন্ন অডিও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। শিক্ষক অসিমের মারধরের এমন সংবাদ প্রকাশ হবার পর স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের মেসেঞ্জারেতার বেশ কিছু অডিও ও বিভিন্ন মেয়েদের কাছে পাঠানো মেসেজের স্ক্রীনশট আসতে থাকে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন তোতা জানান, শিক্ষক অসিমের বিষয়ে আমার নিকট কেহ কোন অভিযোগ দেয়নি। তবে, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাগোগ মাধ্যমে জানতে পেরে আমি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষে জানিয়ে তাকে শোকজ করেছি।
ওই স্কুলের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন জানান, এবিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকে আমরা ব্যবস্থা নিব।
আরো পড়ুন: অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে শিক্ষকের ধরা খাওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন (ভিডিও)
অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে ধরা খেল কালীগঞ্জের স্কুল শিক্ষক (ভিডিও)