বিশেষ প্রতিনিধিঃ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের লেদ শ্রমিক শাহীন হত্যাকাণ্ডে সাথে জড়িত প্রধান আসামি জসিম হোসেন ওরফে বাবুকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া গ্রাম থেকে আটক করা হয়।

আটক জসিম হোসেন ওরফে বাবু উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মমিন উল্লার ছেলে। এ ঘটনায় মিজানুর রহমান বাবুলকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ৬জুন নিহত শাহীনের বাবা চান মিয়া বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

রোববার বিকেল ৫ টার দিকে কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা: মাহফুজুর রহমান মিয়াসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রধান আসামিকে সাথে করে হত্যাকাণ্ডের আলামত উদ্ধারে উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে যায় পুলিশ। বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের বিভিন্ন মাঠ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত খুর, দড়ি, নিহত শাহীনের প্যান্ট, টর্চলাইট ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বালিয়াডাঙ্গা বাজার থেকে গত ৫ জুন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বেশ কিছু টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছিল শাহীন। এসময় আগে থেকে ওঁতপেতে থাকা বাবুল ও বাবু নিহত শাহীনকে কলাবাগানে খুর দিয়ে গলাকেটে ও পরে দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে বিবস্ত্র অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। এরপর দিন অনেক খোঁজাখুঁজির পর সকাল ৮ টার দিকে কলাবাগান থেকে বিবস্ত্র অবস্থায় শাহীনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যার ৮ দিনের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের আটক করায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

হত্যাকাণ্ডে আলামত উদ্ধারের সময় প্রধান আসামি জসিম হোসেন ওরফে বাবু জানান, তিনি এবং বাবুল যে ভুল করেছে এমন যেন আর কেউ না করে। হত্যার পর বাবুল তাকে ৬ হাজার টাকা দেয় বিভিন্ন দোকানে দেওয়ার জন্য।

নিহত শাহীনের চাচা ইদ্রিস আলী জানান, শাহীনকে যারা হত্যা করেছে তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি। এভাবে আর কারও যেন বাবা-মায়ের বুক খালি না হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাগর শিকদার জানান, প্রযুক্তির মাধ্যমে ও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া এলাকা থেকে জসিম হোসেন ওরফে বাবুকে আটক করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সকল আলামত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা: মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, হত্যাকাণ্ডের পর নিহত শাহীন যাদের সাথে চলাফেরা করতো তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয় পুলিশ। সকলের কললিস্ট আমরা সংগ্রহ করি এবং দ্রুততার সাথে তার হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে শনাক্ত করি। তাদের দুইজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আলামত উদ্ধার করেছি।

তিনি আরো জানান, আটক দুইজনই হত্যার সাথে জড়িত। তারা বিভিন্ন মানুষের কাছে দেনা। হত্যাকাণ্ডের আসামিরা জানতে পারে শাহীনের কাছে টাকা আছে। এজন্য বাড়ি ফেরার পথে তারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কলাক্ষেত থেকে শাহীন হোসেন (৩৩) নামে এক লেদ শ্রমিকের বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শাহীন স্থানীয় লেদের দোকানে কাজ করতেন বলে জানান এলাকাবাসী।

আরো পড়ুন: কালীগঞ্জে লেদ শ্রমিক হত্যা: প্রধান আসামি আটক, আলামত উদ্ধার (ভিডিও)

ভিডিও দেখুন…

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here