নিজস্ব প্রতিবেদক :

ঝিনাইদহে ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষের ধাওয়া ও হামলায় সরকারী ভেটেরিনারি কলেজের ভিপি সাইদুজ্জামান মুরাদসহ তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। 

বুধবার দুপুরে ভিপি মুরাদের পিতা বদিউজ্জামান বিশ্বাস বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ফারুক আজমের আদালতে এই মামলা (জিআর ৬৮৫/২২) করেন। 

মামলায় ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরানসহ ২০জন নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। আদালত অভিযোগটি গ্রহন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। 

এ মামলায় অন্য আসামীরা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শহরের পাগলাকানাই এলাকার ফেরদৌসের ছেলে ফাহিম হাসান সনি, সহ-সভাপতি তন্ময় চক্রবর্তি, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক পাগলাকানাই এলাকার ওয়াহিদুজ্জামান উজ্জলের ছেলে হাদিউজ্জামান আরিফ বিশ্বাস, গোয়ালবাড়িয়া কাস্টসাগরা গ্রামের আশরাফ ডাক্তারের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী নিয়ন মিয়া, চুয়াডাঙ্গার কুলচারা গ্রামের উসমান গনির ছেলে মুস্তাকিম আহম্মেদ, বরিশালের বাবুগঞ্জ গ্রামের কাজী ফরহাদ হোসেন, রাজাপুর গ্রামের আব্দুল খালেক মিয়ার ছেলে নয়ণ মিয়া, সদ্য বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক কাঞ্চনপুরের রবিউল ইসলাম রাব্বি, ধানহাড়িয়া গ্রামের আতা বিশ্বাসের ছেলে সাজেদুর রহমান সাজেদ, গোয়ালবাড়িয়া কাস্টসাগরা গ্রামের বাবলুর ছেলে আসাদ, ব্যাপারীপাড়ার ঝন্টু খোন্দকারের ছেলে তৌফিক, হলিধানী গ্রামের বেনু মিয়ার ছেলে ওলিউল্লাহ, কোরাপাড়ার বিটুল জোয়ারদারের ছেলে সংগ্রাম জোয়ারদার, নগরবাথানের ইউনুস আলীর ছেলে চুন্নু, পাগলাকানাই ব্যাকাব্রীজ এলাকার গোলাম সারোয়ারের ছেলে লালু, পাগলাকানাই এলাকার মতিয়ার পুলিশের ছেলে সঞ্জু, ব্যাপারীপাড়ার সাইদ ড্রাইভারের ছেলে মোঃ সাদী, জাড়গ্রামের ইকরামুল ইসলাম ও পাগলাকানাই এলাকার ইসলামের ছেলে মামুন। এরা সবাই জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আল ইমরানের অনুসারি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। 

বাদী তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, সরকারী ভেটেরিনারী কলেজে ডিভিএম ডিগ্রীর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলো শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে হঠাৎ করেই বিরোধ শুরু হয় কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি সাইদুজ্জামান মুরাদ ও জিএস সজিবুল হাসানের সাথে ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম হাসান সনির। বিষয়টি মিমাংশা করতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সাগর হোসেন সোহাগ গত শুক্রবারে (৭ অক্টোবর) রাতে সবাইকে শহরে ডাকেন। এ সময় তারা এ নেতার সাথে দেখা করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলো। পথিমধ্যে ঐদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরবাথান সংলগ্ন জোহান পার্কের সামনে পুর্ব-পরিকল্পিতভাবে আসামী ইকরামুল ইসলাম ভিপি মুরাদ ও তার সহপাঠীদের চা পানের আহবান করেন। সেখান থেকে চা পান শেষে কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা হলে পথে ওৎ পেতে থাকে আসামীরা হামলা চালায়। হামলায় কলেজের জিএস সজিবুলসহ দুইজনকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় কলেজের ভিপি মুরাদসহ ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদুল ইসলাম ও সমরেশ বিশ্বাস মটরসাইকেল যোগে পালানোর চেষ্টা করে। তখন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-ইমরানের নির্দেশে উক্ত আসামীরা ধাওয়া করে আঠারমাইল নামক স্থানে নিয়ে তিনজনকে কুপিয়ে হত্যাকরে। এ সময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নিয়ে দাড়িয়ে থাকা ট্রাকের সাথে ধাক্কা লেগে মারা যাওয়ার ঘটনা প্রচার করে আসামীরা। এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে মামলার বাদি কলেজের ভিপি ভিপি মুরাদের বাবা বদিউজ্জামান বিশ্বাস অভিযোগ করেন। 

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আল-ইমরান জানান, রাজনৈতিক হয়রানী ও পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর জন্য আমাকে আসামী করা হয়েছে। আমি এ সকল ঘটনার সাথে জড়িত নয়। আদালতে বাদির পক্ষে মামলার শুনানিতে অংশ নেন এ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here