যশোরঃ

তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে রুজু করা মামলায় মো. আজিজুল হক সবুজ (৪৫) নামে পুলিশের একজন কর্মকর্তা গ্রেফতার হয়েছেন।

যশোর কোতয়ালী থানা পুলিশ ২৪ এপ্রিল ভোররাতে শহরের বারান্দীপাড়া ঢাকা রোডের হাফিজিয়া মাদরাসার পাশ থেকে তাকে ধরে আনে। পরে হওয়া মামলায় তাকে আসামি করা হয়।

বারান্দীপাড়া এলাকার মো. বাদশা মিয়ার মেয়ে মোছা. জেসমিন বেগম তার সাবেক স্বামী সবুজের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় ধর্ষণের মামলাটি (৭৮/ ২৪.০৪.২১) করেন।
আসামি আজিজুল হক সবুজ পুলিশের এসআই পদে কর্মরত। তিনি ঢাকা এপিবিএন থেকে সদ্য পুলিশের খুলনা রেঞ্জে বদলি হয়েছেন।

আজিজুল হক সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার সুরুরিয়া গ্রামের মো. আনোয়ারুল হকের ছেলে। তার বর্তমান ঠিকানা যশোর সদর উপজেলার রঘুরামপুর গ্রাম।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর আজিজুল হক সবুজের সাথে জেসমিনের বিয়ে হয়। আজিজুলের আগেও তিনটি বিয়ে ছিল। চাকরির সুবাদে আজিজ কর্মস্থলে থাকতেন। মাঝে মাঝে যশোরে বাদীর বসতবাড়িতে আসতেন এবং তারা অন্য দম্পতিদের মতো বসবাস করতেন।

জেসমিন উল্লেখ করেছেন, ‘আজিজুল ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর সাতক্ষীরায় লাবনী নামে এক মেয়েকে বিয়ে করে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩ তারিখে আমাকে তালাক দেয়। গত ২৪ এপ্রিল শুক্রবার রাত একটার দিকে আজিজ আমার ঘরের দরজা নক করে। আমি দরজা খোলামাত্র সে ঘরের ভেতর ঢুকেই ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। ওই সময় সে আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। আজিজ ওয়াশরুমে ঢুকলে আমি ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিই। পরে কোতয়ালী থানা পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।’
কোতয়ালী থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম  বলেন, ‘কেউই আইনের ঊর্ধ্বে না। তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের এসআই আজিজুল হক সবুজ শারীরিক সম্পর্ক করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। কোনো নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক হলে সেটা আইনানুযায়ী ধর্ষণ বলে গণ্য হয়।’

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘ভোররাতে হটলাইন ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে আমরা দুইজনকে থানায় নিয়ে আসি। কিন্তু জেসমিন বেগম মামলা করতে রাজি ছিল না। আপস করে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু ধর্ষণের অভিযোগ আপসযোগ্য না। সেই কারণে মামলা রুজু হয়েছে।’

‘আসামি আজিজকে রোববার সকালে আদালতে হাজির করা হবে। ভিকটিমকে মেডিকেল করানোর পরে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য পাঠানো হবে,’ বলছিলেন ওসি।

জেসমিন বেগম  বলেন, ‘আমি আজিজের বিরুদ্ধে আগে আদালতে মামলা করেছি। আইজিপি (মহাপুলিশ পরিদর্শক) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, সংবাদ সম্মেলনও করেছি। এরপরেও সে আমার বাসায় আসে কেন?’

‘আজিজ আসার আগে আমাকে ফোন করেছিল। আমি তো ফোন করিনি,’- এভাবেই প্রশ্নের উত্তর দেন জেসমিন।

স্থানীয়রা বলছেন, জেসমিনেরও আগে তিনবার বিয়ে হয়। একজন রড ব্যবসায়ীকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সবুজদেশ/ এস ইউ

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here