বিশেষ প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের একটি আদালতে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার কালীগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। যার মামলা নং কালী সিআর-৮৬/২১।

মামলার অন্য দুইজন আসামী হলেন প্রথমআলো পত্রিকার ঝিনাইদহের নিজস্ব প্রতিবেদক জেলার সিনিয়র সাংবাদিক আজাদ রহমান ও কালীগঞ্জ সরকারী মাহতাব উদ্দীন কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান। ভার্চুয়াল আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের প্রতি সমন জারী করেছেন এবং আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য্য করেছেন। এদিকে সাংবাদিকদের নামে সংসদ সদস্যের মানহানী মামলা করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঝিনাইদহের সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন।

বাদী সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার তার নালিশীর বিবরণে উল্লেখ করেছেন, গত ৬ আগষ্ট দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম পাতায় “মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ নিয়ে সাংসদের আপত্তি, ১৪ মাস বেতন বন্ধ শিক্ষকদের” শিরোনামে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করেন। এতে তার রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যক্তি জীবনের ব্যাপক সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে যা অর্থ দ্বার পুরণ যোগ্য নয়। উপরোক্ত বাদীর ৫ কোটি টাকার মানহানী হয়েছে বলে দাবী করা হয়। সংসদ সদস্যের দাবী, তথ্য যাচাই বাছাই না করেই তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিবাদীরা এহেন সংবাদ প্রকাশ করেছেন।

এমপি আনার মামলার আরজিতে আরো উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ২৭ আগষ্ট থেকে এই ৩৫ মাস তিনি অফিসিয়াল বা আন-অফিসিয়ালি কলেজের সঙ্গে যুক্ত নয়। ফলে অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমানকে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া বা কলেজে প্রবেশে বাধা প্রদান করার খবরটি সত্য নয়। তাছাড়া খবরে ২০ জনকে অবৈধ ভাবে নিয়োগ প্রদানের বিষয়টিও অসত্য ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছি। জনগণের ভোটে পৌর কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। আমার রাজনৈতিক সাফল্যে ঈর্ষাণ্বিত হয়ে একটি মহল তাদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে আমাকে নিয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করেছে।’

‘এলাকায় আমার সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ায় আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আদালতে পাঁচ কোটি টাকার মনহানির মামলা করেছি।’

মামলার বিষয়ে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আজাদ রহমান জানান, সংবাদটি উপযুক্ত তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে করা হয়েছে। কোন অসৎ উদ্দেশ্য বা সাংসদের মানহানী করার জন্য নয়। সংবাদে যথারীতি ভাবে সাংসদ আনোয়ারুল আজীম আনারের বক্তব্য সুস্পষ্ট ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তারপরও তিনি পত্রিকায় কোন প্রতিবাদ না পাঠিয়ে আদালতে মানহানী মামলা করেছেন যা হয়রানীর নামান্তর মাত্র।  

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here