ঢাকা ১২:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেঘের দেশ রাঙামাটির সাজেকে পর্যটকের ভিড়

Reporter Name

সবুজদেশ ডেস্কঃ

সাজেকের ঈর্ষণীয় রূপ যে কাউকে মুগ্ধ করবে। কোথাও নীল আকাশ আবার কোথাও কালো মেঘের ভেলা। কোথাও ঝুম বৃষ্টি আবার কোথাও প্রখর রোদ।

বৃষ্টি শেষের দৃশ্য আরও মোহনীয়। পাহাড়ভেদ করে মেঘের পারাপার দেখে মনে হবে শীতের ঘন কুয়াশায় ছেয়ে গেছে চারপাশ। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সখ্য হবে মেঘের সঙ্গে।

দীর্ঘ ছুটিতে পর্যটকদের গন্তব্য এখন প্রাকৃতিক অপার সৌন্দর্যের আধার রাঙ্গামাটি জেলার মেঘের দেশ নামে পরিচিত সাজেক ভ্যালি। ইতোমধ্যে দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়, মনোমুগ্ধকর এবং চিত্তাকর্ষক একটি স্থান।

জানা যায়, পর্যটনশিল্পের অপার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে ইতিমধ্যে সাজেকে প্রায় শতাধিক রিসোর্ট গড়ে উঠেছে এবং উন্নত হয়েছে মানুষের জীবন-জীবিকা ও আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা। প্রতি বছর নভেম্বের-ডিসেম্বর মাসে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষে ছুটির দিনগুলোতে অবকাশ যাপনের জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক সাজেক ভ্যালিতে বেড়াতে আসেন।

বিশেষ করে শীতকালীন ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকের আগমনের হার স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। বিগত অন্যান্য বছরের চেয়েও চলতি মৌসুমে হাজারও পর্যটকে সরব হয়ে উঠেছে সাজেক ভ্যালি।

প্রতিদিন দেশি-বিদেশি পর্যটকের পদভারে মুখরিত সাজেক ভ্যালি পর্যটন স্পট। আগাম বুকিং হয়ে যাওয়ার কারণে খালি নেই এখানে অবস্থিত শতাধিক রিসোর্টের কোনো কক্ষ। পর্যটকদের এ রূপ উপচেপড়া ভিড়ের কারণে বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে রুইলুইপাড়া, সাজেক পর্যটন এলাকা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দোকানেও বেড়েছে কেনাবেচার পরিমাণ।

সজেক পর্যটন এলাকার রিসোর্ট ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য অঞ্চলে বিভিন্ন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে ভাতৃঘাতী সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এতে করে চলতি বছর পর্যটক কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও নিরাপত্তা বাহিনীর আন্তরিকতায় পর্যটকের সমাগম হয়েছে।

বাড়তি নিরাপত্তার কারণে প্রাকৃতিক দুর্গমতা সত্ত্বেও প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসুদের আগমনে এলাকাটি সার্বিকভাবে আরও সমৃদ্ধ হয়েছে, বেড়েছে দিগুণ পর্যটক।

এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বাঘাইহাট জোন ও স্থানীয়দের উদ্যোগে বাঘাইহাট বাজার চালু হয়েছে। এ কারণে অত্র অঞ্চলের জনবসতিকে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিকভাবে আরও গতিশীল করেছে।

ঢাকার মীরপুর থেকে আসা পর্যটক আহম্মদ কবির ও গাজীপুরের মিজান বলেন, দীর্ঘপথ অতিত্রুম করার পর খাগড়াছড়ি হতে সাজেকের উদ্দেশে যখন গমন করি, তখন যাত্রাপথে দীঘিনালা, ১০ ডিপি, বাঘাইহাট ও মাচালং পড়ে। তবে ওইসব এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর পর্যটকদের সুরক্ষায় যে চেকিং-বিরতি করা হয়, তার পরিমাণ কিছুটা কমানো হলে পর্যটকরা আরও স্বতঃর্স্ফূতভাবে সাজেক ভ্রমণ করতে পারতেন।

তবে উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথে রোলার কোস্টারের অনুভূতি ছিল বেশ উপভোগ্য।

অন্যদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা এবং উন্নয়নমূলক কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া সাজেকের দুর্গম এলাকায় সেনাবাহিনী কর্তৃক সাজেক থেকে বেতলিং ২৩ কি.মি রাস্তা নির্মাণের কাজ চলমান।

পাহাড়ি উঁচু-নিচু রাস্তা সম্পন্ন হলে প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের জন্য অত্র অঞ্চল হয়ে উঠবে সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থানসমূহের মধ্যে অন্যতম।

ছবিঃ শাহরিয়ার আলম সোহাগ

About Author Information
আপডেট সময় : ০১:০৪:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯
৭৬০ Time View

মেঘের দেশ রাঙামাটির সাজেকে পর্যটকের ভিড়

আপডেট সময় : ০১:০৪:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯

সবুজদেশ ডেস্কঃ

সাজেকের ঈর্ষণীয় রূপ যে কাউকে মুগ্ধ করবে। কোথাও নীল আকাশ আবার কোথাও কালো মেঘের ভেলা। কোথাও ঝুম বৃষ্টি আবার কোথাও প্রখর রোদ।

বৃষ্টি শেষের দৃশ্য আরও মোহনীয়। পাহাড়ভেদ করে মেঘের পারাপার দেখে মনে হবে শীতের ঘন কুয়াশায় ছেয়ে গেছে চারপাশ। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সখ্য হবে মেঘের সঙ্গে।

দীর্ঘ ছুটিতে পর্যটকদের গন্তব্য এখন প্রাকৃতিক অপার সৌন্দর্যের আধার রাঙ্গামাটি জেলার মেঘের দেশ নামে পরিচিত সাজেক ভ্যালি। ইতোমধ্যে দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়, মনোমুগ্ধকর এবং চিত্তাকর্ষক একটি স্থান।

জানা যায়, পর্যটনশিল্পের অপার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে ইতিমধ্যে সাজেকে প্রায় শতাধিক রিসোর্ট গড়ে উঠেছে এবং উন্নত হয়েছে মানুষের জীবন-জীবিকা ও আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা। প্রতি বছর নভেম্বের-ডিসেম্বর মাসে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষে ছুটির দিনগুলোতে অবকাশ যাপনের জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক সাজেক ভ্যালিতে বেড়াতে আসেন।

বিশেষ করে শীতকালীন ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকের আগমনের হার স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। বিগত অন্যান্য বছরের চেয়েও চলতি মৌসুমে হাজারও পর্যটকে সরব হয়ে উঠেছে সাজেক ভ্যালি।

প্রতিদিন দেশি-বিদেশি পর্যটকের পদভারে মুখরিত সাজেক ভ্যালি পর্যটন স্পট। আগাম বুকিং হয়ে যাওয়ার কারণে খালি নেই এখানে অবস্থিত শতাধিক রিসোর্টের কোনো কক্ষ। পর্যটকদের এ রূপ উপচেপড়া ভিড়ের কারণে বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে রুইলুইপাড়া, সাজেক পর্যটন এলাকা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দোকানেও বেড়েছে কেনাবেচার পরিমাণ।

সজেক পর্যটন এলাকার রিসোর্ট ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য অঞ্চলে বিভিন্ন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে ভাতৃঘাতী সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এতে করে চলতি বছর পর্যটক কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও নিরাপত্তা বাহিনীর আন্তরিকতায় পর্যটকের সমাগম হয়েছে।

বাড়তি নিরাপত্তার কারণে প্রাকৃতিক দুর্গমতা সত্ত্বেও প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসুদের আগমনে এলাকাটি সার্বিকভাবে আরও সমৃদ্ধ হয়েছে, বেড়েছে দিগুণ পর্যটক।

এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বাঘাইহাট জোন ও স্থানীয়দের উদ্যোগে বাঘাইহাট বাজার চালু হয়েছে। এ কারণে অত্র অঞ্চলের জনবসতিকে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিকভাবে আরও গতিশীল করেছে।

ঢাকার মীরপুর থেকে আসা পর্যটক আহম্মদ কবির ও গাজীপুরের মিজান বলেন, দীর্ঘপথ অতিত্রুম করার পর খাগড়াছড়ি হতে সাজেকের উদ্দেশে যখন গমন করি, তখন যাত্রাপথে দীঘিনালা, ১০ ডিপি, বাঘাইহাট ও মাচালং পড়ে। তবে ওইসব এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর পর্যটকদের সুরক্ষায় যে চেকিং-বিরতি করা হয়, তার পরিমাণ কিছুটা কমানো হলে পর্যটকরা আরও স্বতঃর্স্ফূতভাবে সাজেক ভ্রমণ করতে পারতেন।

তবে উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথে রোলার কোস্টারের অনুভূতি ছিল বেশ উপভোগ্য।

অন্যদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা এবং উন্নয়নমূলক কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া সাজেকের দুর্গম এলাকায় সেনাবাহিনী কর্তৃক সাজেক থেকে বেতলিং ২৩ কি.মি রাস্তা নির্মাণের কাজ চলমান।

পাহাড়ি উঁচু-নিচু রাস্তা সম্পন্ন হলে প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের জন্য অত্র অঞ্চল হয়ে উঠবে সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থানসমূহের মধ্যে অন্যতম।

ছবিঃ শাহরিয়ার আলম সোহাগ