‘সমাবেশ সভা’! ভূূলে ভরা নয় কি?
শাহরিয়ার আলম সোহাগঃ
প্রথম চিঠিতে লিখেছিলেন প্রতিবাদ সমাবেশ। পরদিন চিঠির ভাষা পরিবর্তন করে লিখলেন শুধুই সমাবেশ। আর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল সমাবেশ সভা। ব্যাপারটা যেন কাজীর গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নাই। আর এই ঘটনা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের।
শনিবার সকাল ১০ টায় গণমাধ্যমকর্মীরা ছুটে যান কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। আশাহত হন সমাবেশ সভা লেখা দেখে। উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা এমন লেখা দেখে সমালোচনা করতে থাকেন। খুঁজতে থাকেন বাংলা ডিকশোনারী। তবে শব্দটি একেবারেই নতুন! একাবিংশ শতাব্দীতে এ শব্দের ব্যবহার এই প্রথম।
এছাড়াও ‘সমাবেশ সভা’ ডেকে হাসপাতাল চত্ত্বরে একটা ব্যানার এনে দাঁড়িয়ে পড়েন কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি মিথ্যা, বানোয়াট বলে মন্তব্য করে থেমে যান হাসপাতালের আরএমও ডা. সুলতান আহমেদ। এরপর কেউ আর মুখ খোলেননি।
এই শব্দের ব্যবহার নিয়ে জানতে চাওয়া হয় সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুব্রত নন্দীর কাছে। তিনি বলেন, জীবনে এমন শব্দের ব্যবহার তিনি প্রথম শুনলেন। সভা-সমাবেশ বা প্রতিবাদ সমাবেশ হতে পারে কিন্তু সমাবেশ সভা কোনভাবেই লেখা যায় না।
সাংবাদিকদের শোরগোল এই সমাবেশ সভা নিয়ে। তবে, সমাবেশ সভায় উপস্থিত হননি কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন। করোনাকালে কালীগঞ্জ হাসপাতালে তিন লক্ষ টাকার হদিস নেই এমন সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর আজকের এই সমাবেশ সভা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্ন ছিল কিছু।
- কোন চিকিৎসক বা নার্স করোনাকালে হোটেলে অবস্থান করেছেন?
- কোন চিকিৎসক বা নার্স করোনাকালে প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন কিনা?
- কালীগঞ্জের রহমানিয়া হোটেলে রান্না হয় কিনা?
- কথিত সমাবেশ সভায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রধান উপস্থিত হননি কেন?
- ভূয়া বিল করে সরকারি টাকা উত্তোলন, আত্মসাৎ নয় কি?
প্রিয় পাঠক, এসকল প্রশ্নের জবাব অধরাই রয়ে গেল। নিরুপায় হয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেন গণমাধ্যমকর্মীরা। জানা হয়নি এ সকল প্রশ্নের উত্তর। পাঠকদের এসকল প্রশ্নের উত্তর জানাতে না পারায় গণমাধ্যমকর্মীরা ব্যর্থ। ব্যাপারটা ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খায়নি। তবে, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা বৃথা হবে বলে মনে করেন উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা।