সাতক্ষীরাঃ

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে পৃথক ঘটনায় এক বাকপ্রতিবন্ধিসহ দুই কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। বুধবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাতটার দিকে আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের গোদাড়া গ্রামে ও শনিবার (৩১ জুলাই) বিকালে শ্রীউলা ইউনিয়নের মাড়িয়ালার মোড়ে পৃথক এসব ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার ওই দু’কিশোরীকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আশাশুনির গোদাড়া গ্রামের বাকপ্রতিবন্ধি কিশোরীর (১৪) মা জানান, তার বাকপ্রতিবন্ধি মেয়ে একই গ্রামে নতুন মামীকে দেখার জন্য বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। এসময় লতাখালি গ্রামের আবু হানিফের ছেলে সুমন পথিমধ্যে অলিদের মুদি দোকানের পাশ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ইকরামুলের পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যেয়ে ধর্ষণ করে। দু’ ঘণ্টা পর খুঁজতে বেরিয়ে তাকে পাওয়ার পর মেয়ে ইশারায় তাকে জানালে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার সকালে মেয়েকে নিয়ে আশাশুনি থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরপরই মেয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ি দুপুরে সুমনকে আটক করে পুলিশ। এর পরপরই তিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়ে মেয়েকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। বর্তমানে তারা হাসপাতাল থেকে জানতে পেরেছেন যে পুলিশ সুমনকে ছেড়ে দিয়েছে। এমনকি থানায় কোন মামলাও হয়নি। ওই মেয়ে স্থানীয় একটি বাকপ্রতিবন্ধি স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী।

অপরদিকে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের হিজলিয়া গ্রামের এক গৃহবধু জানান, তার মেয়ে পার্শ্ববর্তী একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। প্রতিদিনের ন্যায় সে শনিবার বিকেল ৫টার দিকে পার্শ্ববর্তী আব্দুল্লাহ স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরছিল। পথিমধ্যে বৃষ্টি আসায় কলিমাখালি খোলারাটি গ্রামের মোস্তফার ছেলে মাড়িয়ালা মোড়ের মুদি ব্যবসায়ি মোস্তাফিজুর রহমানের দোকনের বারান্দায় আশ্রয় নেয়। এ সময় মোস্তাফিজুর তাকে দোকানের মধ্যে ডেকে নিয়ে শার্টার ফেলে দিয়ে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানার পর ননদ ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলে করে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে থানায় নিয়ে যান। সেখানে পুলিশের সহকারি উপপরিদর্শক রুবেল হোসেন তাদেরকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থানায় নেই বলে রোববার আসতে বলেন। মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে তাকে রোববার (১ আগষ্ট) সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আশাশুনি থানার সহকারি উপপরিদর্শক রুবেল হোসেন বলেন, অফিসার ইনচার্জ না থাকায় কোন অভিযোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই তাদেরকে পরদিন আসতে বলা হয়।

এ ব্যাপারে আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কবীর জানান, প্রতিবন্ধি মেয়েটির ধর্ষণের কথা জেনে তার কথামত সুমনকে আটক করা হলেও পরবর্তীতে মেয়েটি তাকে চিহিৃত করতে না পারায় জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে এ ঘটনায় মেয়েটির পক্ষ থেকে থানায় কোন মামলা দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেয়েটি অসুস্থ থাকায় তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সে সুস্থ হলে অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে উপজেলার হিজলিয়া এলাকার ধর্ষনের ঘটনা সর্ম্পকে তিনি অবগত নন উল্লেখ করে বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে অভিযোগ নিয়ে থানায় যেতে বলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here