গাইবান্ধা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের
নিয়োগপ্রাপ্ত মুসলিম নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার (কাজী) মোহাম্মদ আলীর সহকারি (কাজী) এজাহান আলী খান মিঠুকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশ।রোববার (১২ আগষ্ট) ভোরে তার নিজ বাড়ী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।এসময় তার বাড়ীতে তল্লাশি চালিয়ে কয়েকটি ভুয়া বিয়ে ও তালাক রেজিষ্টার বই জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত মিঠু সদর উপজেলার কুপতলা গ্রামের মৃত নুরন্নবী খানের ছেলে।তিনি গাইবান্ধা শহরের সোনালী ব্যাংকের পশ্চিম পাশে বনানী আবাসন এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।

পুলিশ জানায়,কাজী মোহাম্মদ আলী তার সহকারি এজাহান আলী মিঠু,ইসমাইল হোসেন,মিলন মিয়া,আবু বক্কর,জামিল মিয়া,আতোয়ার মাষ্টার ও আমিনুল ইসলামকে ভুয়া বিয়ে ও তালাক রেজিষ্টার সরবরাহ করে আসছে।তারা গাইবান্ধা শহর,জেলার বিভিন্ন এলাকা,আদালত চত্তর এমনকি তাদের নিজ নিজ বাড়ীতে নাবালক নাবালিকা ছেলে মেয়েদের ভুয়া রেজিষ্ট্রার বইতে বিয়ে ও তালাক রেজিষ্ট্রি করে চলেছেন।প্রত্যেকটি বাল্য বিয়ে রেজিষ্ট্রি করতে পাঁচ থেকে ছয়হাজার টাকা পর্যন্ত নেন এসব ভুয়া কাজী। ফলে সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত কাজীদের মানসম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে।আর বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বিতারিত হচ্ছে সরকার।

নিয়োগপ্রাপ্ত কাজী মোহাম্মদ আলী নিজ ক্ষমতাবলে আইন অমান্য করে ওই পাঁচজনকে সহকারী কাজী হিসেবে (অলিখিত) নিয়োগ দিয়ে তাদের মাধ্যমে এসব অপকর্ম করে আসছেন।তারা মোহাম্মদ আলীর সরবরাহকৃত রেজিষ্ট্রি বইয়ের ফাঁকা পাতায় বর ও কনের সই নেন।সই নেয়ার প্রয়োজন মনে করেন না বিয়ের সাক্ষী ও উকিলদের।

এমনকি মোহরানার বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করেন না।পরে বর কিংবা কনে কোন এক পক্ষের সাথে যোগাযোগ করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে মোহরানার টাকা ইচ্ছেমতো বসিয়ে নকল সরবরাহ করেন।এসব নকল কপিতে নিকাহ রেজিষ্টার মোহাম্মদ আলীর সিল ও সই ব্যবহার করা হয়।মোহাম্মদ আলী তার সহকারিদের কাছে প্রত্যেকটি ভুয়া রেজিষ্টার বই বিক্রি করেন পাঁচ হাজার টাকায়।প্রতিমাসে তার পনের থেকে বিশটি বই বিক্রি হয়।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো: শাহরিয়ার বলেন, বাল্য বিয়ে ঠেকাতে পুলিশ সব সময় তৎপর রয়েছে।নিকাহ রেজিষ্টার মোহাম্মদ আলী ও তার সহকারিদের বিরুদ্ধে ভুয়া বিয়ে ও তালাক রেজিষ্ট্রীর অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।

প্রসঙ্গত,ভুয়া কাজীদের মধ্য জামিল মিয়াকে গাইবান্ধা ডিসি অফিসের সামনে থেকে গত ২৯ জুলাই নাবালিকার বিয়ে রেজিষ্ট্রির অভিযোগে আটক করে পুলিশ।এর আগে একই অভিযোগে মিলন মিয়াকেও আটক করা হয়।সেসময় মিলন কাজীর কাছে থেকে কয়েকটি ভুয়া ভলিয়ম বই জব্দ করে পুলিশ।পরে এই পেশা বাদ দিয়ে অন্য পেশায় নিয়েজিত থাকবেন মর্মে মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পান তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here