যশোরঃ

তিন ফসলি জমিতে অবৈধভাবে ইটের ভাটা নির্মাণ করে দিনরাত ইট পোড়ানো হচ্ছে। ভাটার কালো ধোঁয়া ও আগুনের তাপে আশপাশের শীতকালীন সবজি খেতের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। মানুষের শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরণের রোগ বালাই বেড়ে যাচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

যশোরের কেশবপুর উপজেলার বারুইহাটি গ্রামে অবৈধভাবে ইটের ভাটা বন্ধের দাবিতে রোববার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সরকারি কোন দপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের বারুইহাটি গ্রামে তিন ফসলি জমিতে গত বছর একটি ইটের ভাটা নির্মাণ করা হয়। গ্রামবাসির আপত্তির মুখে পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন দুই দফায় ওই ইটের ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এ বছর ২৪ নভেম্বর গভীর রাতে আগুন দিয়ে ইট পোড়ানো শুরু হয়ে। ওই ভাটার চারপাশে এক কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ৫০০ পরিবারের বসবাস। তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একটি ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। ইটের ভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের শ্বাস কষ্টসহ নানা ধরনের রোগ দেখা দিচ্ছে। শীতকালীন সবজি ফুল কপি, বাধা কপি, পেয়াজ ও পটল খেতের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। নারকেলে মুচি পর্যন্ত আগুনে পুড়ে যাচ্ছে। এতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।

সম্মেলনে আবদুস সাত্তার নামে একজন বারুইহাটি গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন, ‘ইট পোড়ানোর কাজে বাঁধা দিলে ভাটার মালিক সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের হুমকি ধামপি দিচ্ছে। আমরা এমনিই ক্ষতিগ্রস্থ তারউপর চরম নিরাপত্তহীনতার মধ্যে আছি। এ বিষয়ে গত ১১ নভেম্বর জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কাছে স্মারকলপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যে কারণে আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ বলেন,‘আমি গ্রামবাসির স্মারকলিপি পেয়েই কেশবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে বলে দিয়েছি। কোন অবৈধ ইটের ভাটা থাকবে বলে তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে ভাটার অংশিদার মতিয়ার রহমান বলেন,‘পরিবেশ অধিপ্তরের ছাড়পত্রের জন্যে আমরা আবেদন করেছি। এখনো ছাড়পত্র হাতে পাইনি। মূলত গ্রামের একটি পক্ষ ভাটা নির্মাণের সময় আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করেছিলো। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ওই পক্ষটি স্থানীয়দের ব্যবহার করছে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here