কুষ্টিয়াঃ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে নিহত তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে এসেছিলেন। কিন্তু গ্রামবাসীর তোপের মুখে পালিয়েছেন বুয়েট উপাচার্য সাইফুল ইসলাম।
বুধবার বিকেল ৫টার দিকে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল ও স্থানীয় লোকজনের প্রতিরোধের মুখে ভিসি সাইফুল ইসলাম পালিয়ে ওই এলাকা ত্যাগ করেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রায়ডাঙ্গা গ্রামে যান উপাচার্য সাইফুল ইসলাম, পরে তিনি আবরারের কবর জিয়ারত করেন। এসময় আবরার ফাহাদের পিতা বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইজ ও পরিবারের অন্যন্য সদস্যরাসহ জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন, পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলী,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব-কেপিসির সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লবসহ গ্রামবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
তারপর আবরার ফাহাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে হেঁটে রওনা হন তিনি। কিছু দুর গিয়েই গ্রামবাসীর তোপের মুখে পড়েন। আবরার ফাহাদের পিতার সাথে দেখা হলেও তবে তার বাড়িতে ঢুকতে পারেননি উপাচার্য।
এ অবস্থায় বাড়িতে ঢোকার সময় উপাচার্যকে বাধা দেয় গ্রামবাসী। আবরারের বাড়ি ঢোকার মুখে ভিসির গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন এক নারী। ওই নারীকে মারধর করে পুলিশ। পুলিশ লাঠিচার্জ করে ধাওয়া দিলে তারা এলাকাবাসী পালিয়ে যান। এসময় আবরারের ছোট ভাই আবরার ফায়াজকে মারধর করা হয়। এছাড়া আবরারের এক ভাবিকেও মারধর করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও মারধর করার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
উপাচার্যের যাওয়ার কথা শুনে স্থানীয় শত শত নারী-পুরুষ আবরারদের গ্রামের বাড়ির সামনের সড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপাচার্যকে ঘিরে ধরেন। এই পরিস্থিতিতে আবরারের মায়ের সঙ্গে দেখা না করে উপাচার্য পুলিশ প্রহরায় রায়ডাঙ্গা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি প্রেস রিলিজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। কুষ্টিয়া পুলিশের জেলা বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত প্রেস রিলিজে কোন নাম দেওয়া হয়নি।
প্রেস রিলিজে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মোঃ সাইফুল ইসলাম আবরারের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আবরার ফাহাদের দাদা, বাবা, চাচা ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে নিয়ে আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন। কবর জিয়ারত শেষে তার বাবা ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ শেষে ঢাকায় ফিরে যান। কিন্তু কিছু মহল এ ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বিভিন্নভাবে প্রচারনা চালাচ্ছে যে, পুলিশের সাথে স্থানীয় গ্রামবাসীর সংঘর্ষ ঘটেছে। এ রকম কোন ঘটনাই ঘটেনি। এ ধরনের ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করা অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত।
তবে, আবরারের ছোট ভাই ও তার ভাবিসহ দুই নারীকে মারধরের বিষয়ে প্রেস রিলিজে কোন কিছু উল্লেখ করা হয়নি।