বিশেষ প্রতিনিধিঃ

সাকিবের স্বপ্ন ছিল বিদেশে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে এসে দেশে ভালো কোন চাকরি করবে। আর মাত্র ২ সেমিস্টার পড়া বাদ ছিল। কিন্তু এরমধ্যে ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনতে হলো। জীবনের একটা অংশ সাকিবের পিছনে ব্যয় করেছি। বাবা-মায়ের আগে সন্তানের চলে যাওয়া খুবই কষ্টের এটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।

কথাগুলো শুক্রবার বিকেলে মুঠোফোনে বলছিলেন কানাডায় নিখোঁজের পর মৃতদেহ উদ্ধার করা শিক্ষার্থী সামিউজ্জামান সাকিবের বাবা আশাদুল ইসলাম।

নিহত শিক্ষার্থী সামিউজ্জামান সাকিব ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার উল্যা গ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে সাকিবের পরিবারের বাবা-মা ও বড় ভাই ঢাকাতে অবস্থান করছেন।

সাকিবের বাবা আসাদুল ইসলাম বলেন, মেধাবী ছাত্র সামিউজ্জামান সাকিব কানাডার মালিতোবার বিশ্ববিদ্যালয় এ্যান্ড কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই কলেজে সে ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের ৪র্থ বর্ষে লেখাপড়া করতো। অদৃশ্য কারনে তিনি গত ৯ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিলেন। গত ২৭ জানুয়ারী সাকিবের মরদেহ কলেজের পাশের একটি লেকের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি তার বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।

তিনি আরো বলেন, সরকারিভাবে এখনো আমাদের কোন কিছু জানায়নি। কানাডার ইউনিপেগ পুলিশ মোবাইলে গত বুধবার রাতে জানায়। সাকিবের মরদেহ বর্তমানে ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক কমিউনিটির মাধ্যমে কানাডায় সাকিবের মরদেহ দাফন করা হবে বলে পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে তার মৃত্যুর কারণ। আমি কানাডার পুলিশকে অনুরোধ করেছি ময়নাতদন্তের রিপোর্টটি আমাকে দেওয়া জন্য।

তিনি আরও বলেন, ২ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে হাসিবুজ্জামানকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করিয়েছেন। ভাইয়ার মত সাকিবও বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে এমন শখ থেকে তাকে ক্যানাডায় পাঠিয়েলিাম। এখন আমার সব শেষ । বলতে বলতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি বলেন, কালীগঞ্জের নলডাঙ্গা ভূষন হাইস্কুল থেকে জেএসসি পাশের পর ঢাকার রেসিডিয়ান্সিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজে ভর্তি করেন সাকিবকে। এরপর ওই প্রতিষ্ঠান থেকেই ২০১৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগ হতে এস,এসসিতে জিপিএ ৫। ২০১৬ সালে আই,এসসিও জিপিএ ৫ লাভ করে। এরপর আই এল টেস্টে উর্ত্তীর্ণ হয়ে কানাডার মালিতোবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভতি হয় সাকিব।

আরো পড়ুন: কানাডায় পড়তে গিয়ে লাশ হলো ঝিনাইদহের সাকিব

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here