কক্সবাজারঃ

কক্সবাজারের উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আক্তারসহ ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছে এক কলেজছাত্রী।

মঙ্গলবার মহেশখালী কালারমারছড়া নুরুচ্ছবির কন্যা ও কক্সবাজার হার্ভার্ড কলেজের ছাত্রী রিয়াদ সুলতানা নুরী বাদি হয়ে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) নুরুল ইসলাম, এএসআই মো. শামীম ও কনস্টেবল মো. সুমন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন উক্ত ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট একরামুল হুদা।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, উখিয়া থানায় কর্মরত কনস্টেবল কুমিল্লা জেলার হোমনা ইউনিয়নের হাসান আলীর ছেলে সুমনের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সর্ম্পক হয় কলেজের ছাত্রী রিয়াদ সুলতানা নুরীর। পরে বিয়ের প্রস্তাব তোলায় পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে দাবী করেন মামলার বাদী ওই ছাত্রী।

কলেজছাত্রীর অভিযোগ, কক্সবাজারের উখিয়া মরিচ্যা চেক পোস্টে কনস্টেবল সুমন দায়িত্বকালে তার সাথে প্রমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তার সঙ্গে অনেকবার দেখা হয় এবং শারীরিক সর্ম্পকও হয়। পরে সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে বিয়ে করার জন্য চাপাচাপি শুরু হলে চলতি বছরের ৭ জুলাই (মঙ্গলবার) রাতে উখিয়া থানায় গেলে সেখানে নির্মম পুলিশি নির্যাতন চালানো হয় তার ওপর।

ঘটনার দিন বিকালে ছাত্রীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে পর্যটন স্পট ইনানী নিয়ে যান সুমন। সেখানে তারা উঠেন সুমনের কয়েকজন বন্ধুর কক্ষে। বন্ধুদের সামনেও তাদের বিয়ের বিষয়ে কথা উঠে। কথার এক পর্যায়ে সুমন ও তার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় ৭ জুলাই রাত ১০টার দিকে প্রেমিকাকে রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে উধাও হয়ে যায় সুমন।

পরে ওই দিন রাত ১১টার দিকে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইনকে ফোন করা হলে তিনি উখিয়া থানায় গিয়ে ওসিকে সব বিষয় খুলে বলতে বলেন।

এক পর্যায়ে থানায় হাজির হয়ে ওসি মর্জিনা আক্তারকে সব বিষয় খুলে বললে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ বলে ক্ষিপ্ত হয়ে নির্যাতন চালানো হয়।

ছাত্রী বলেন, প্রথমে মারধর করেন ওসি মর্জিনা। পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য (পুরুষ) দিয়ে দ্বিতীয় দফায় মারধর করানো হয়। পুলিশের ব্যাপক মারধরে সারা শরীরে আঘাত পান। শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তক্ষরণও হয়। একপর্যায়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়েও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলেও দাবি করেন মামলার বাদী কলেজছাত্রী।

পাশাপাশি অভিযুক্ত কনস্টেবল সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার হুমকি দিয়ে দফায় দফায় মারধর করা হয়। এমনকি ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে চালান দেয়ার হুমকিও দেন ওসি। ঘটনার পরদিন ৮ জুলাই (বুধবার) বাবার জিম্মায় ছেড়ে দেন ওসি মর্জিনা।

পরে ৯ জুলাই (বৃহস্পতিবার) কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়া হয়। পরে দীর্ঘদিন প্রাণের ভয়ে মামলা না করলেও সর্বশেষ মঙ্গলবার কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ মামলাটি দায়ের করেন বলে জানান ছাত্রী নুরী। পরে মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত দেয় আদালত।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here