ঝিনাইদহঃ

বুধবার সকাল থেকেই বৃষ্টি। কখনো ভারি বৃষ্টি আবার কখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। অনেকেই হয়তো মনে করেছিলেন ফাইনাল খেলা হবে না। টুর্নামেন্ট কমিটির সিদ্ধান্ত নেয় খেলা হবে।

বিকেল ৪ টা বাজার আগেই ছাতা মাথায় দিয়ে কানায় কানায় পূর্ণ কালীগঞ্জ সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ স্কুল মাঠ। মাঠের চারপাশে দশর্করা দাঁড়ানোর জায়গা না পেয়ে আশে-পাশের বাড়ির ছাদে ঠাই নেই ফুটবল ভক্তরা। এমনিতেই ফাইনাল তারপরও আবার স্বাগতিক কালীগঞ্জ মাঠে খেলবে। দর্শকদের মধ্যেও একটা অন্যরকম উত্তেজনা কাজ করছিল। মাঠে পানি জমে থাকলেও খেলায় কোনরকম বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি বৃষ্টি।

দর্শকদের একাংশ

উভয় দলই দেশী-বিদেশী খেলোয়াড়ের সমন্বয়ে গঠিত। আক্রমণ পাল্টা আকমণে দর্শকরা এই ফাইনাল খেলা দেখে মুগ্ধ। বুধবারের এই ফাইনাল কালীগঞ্জ একাদশের পক্ষে ৫ জন ও চুয়াডাঙ্গা একাদশের পক্ষে ২জন নাইজেরিয়ান খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করে।

ফুটবল খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক ফুটবলার আনোয়ারুল আজিম আনার। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা রানী সাহা, কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শিবলী নোমনি, ৫ নম্বর শিমলা রোকনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির চৌধরী, ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু ও রনি লস্কর এবং কালীগঞ্জ থানার ওসি ইউনুচ আলীসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ হাজার হাজার ফুটবল ভক্তরা।

কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশের খেলোয়াড় আলমগীরের শট

গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যেই রেফারী রবিউল ইসলাম বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে খেলা শুরু করে। খেলার শুরু থেকে উভয় দলের আক্রমন পাল্টা আক্রমনে উপভোগ্য উঠে। খেলার প্রথমার্ধের ১৫ মিনিটের মাথায় কালীগঞ্জ ফুটবল দলের পক্ষে স্পট ফ্রি-কিক নেন ৫ নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় নানা। সেখান থেকে বলে পা লাগিয়ে প্রথম গোল করেন ৪ নম্বর জার্সি পরিহিত খেলেয়োর আব্রাহাম। এরপর গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে উঠে চুয়াডাঙ্গা শুভ সকাল স্পোর্টিং ক্লাব এর খেলোয়াড়েরা। গোল করার সুবর্ণ সুযোগও পেয়েছিল তারা। কিন্তু ব্যর্থ হয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড়েরা। এরপর খেলার ২৮ মিনিটের মাথায় ডি-বক্সের মধ্যে বল হাতে লাগায় পেনাল্টি পায় কালীগঞ্জ। অধিনায়ক হাসানুজ্জামান কায়েস গোলকিপারকে বোকা বানিয়ে দলের পক্ষে ২য় গোলটি করেন। আর এই দুই গোল নিয়ে খেলার প্রথমার্ধ শেষ হয়।

চ্যাম্পিয়ন দলকে এক লক্ষ টাকার প্রাইজমানি প্রদান

বিরতি থেকে ফেরার পর চুয়াডাঙ্গা একাদশের পক্ষে ১৮ নং জার্সি পরিহিতি খেলোয়াড় সাব্বির বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন নি। এরপর খেলার ৬৫ মিনিটের মাথায় ১০ নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় রাব্বীর বাড়িয়ে দেওয়া বলে পা লাগিয়ে ১১ নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় কাবির স্বাগতিক কালীগঞ্জকে আরো এগিয়ে নেন। গোলের সাথে সাথে দর্শকরা মাঠের মধ্যে নেচে নেচে খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান।

ম্যান অব দ্যা ম্যাচ আলমগীর

কিন্তু গোলের দেখা পাইনি চুয়াডাঙ্গা। গোলের ব্যবধান বেড়ে যাওয়ায় এরই মধ্যে কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশে খেলোয়াড় পরিবর্তন করা হয়। ৬ নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় রহমানের পরিবর্তে মাঠে নামেন রনি। এরপর খেলা শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগে আরেক খেলোয়াড় পরিবর্তন করা হয়। মাঠে নামানো হয় এক জিম নামের এক পিচ্চি খেলোয়াড়কে। ১০ নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় রাব্বির বাড়ানো বলে পা লাগিয়ে ১৪নং জার্সি পরিহিত পিচ্চি খেলোয়াড় দলের পক্ষে ৪র্থ গোলটি করেন। এরই সুবাদে কালীগঞ্জ এমপি কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক কালীগঞ্জ।

ম্যান অব দ্যা টুর্নামেন্ট রাব্বি

এমপি কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০১৯ এর চ্যাম্পিয়ন দল প্রাইজ মানি হিসেবে পেয়েছে এক লক্ষ টাকা ও রানার আপ দল পেয়েছে ৫০ হাজার টাকা। খেলায় ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশের ৩নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় আলমগীর, ম্যান অব দ্যা টুর্নামেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ১০ জন্য জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় রাব্বি। সেরা ডিফেন্ডার নির্বাচতি হয়েছেন কামরুজ্জামান রাজ ও সেরা গোলকিপার নির্বাচিত হয়েছেন মোঃ তরিকুল ইসলাম।  খেলার ধারা বর্ণনায় ছিলেন, খোরশেদ আলম, কামাল হোসেন ও রবিউল ইসলাম।

কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশ

কালীগঞ্জ ফুটবল একাদশঃ

শাওন (গোলকিপার), কবির, আলমগীর, আব্রাহাম, নানা, রহমান, কায়েস (অধিনায়ক), ছামছি, জুলু, রাব্বি, কাবির।

শুভ সকাল ফুটবল একাদশ, চুয়াডাঙ্গা

শুভ সকাল স্পোর্টিং ক্লাব একাদশ, চুয়াডাঙ্গাঃ

ওয়াসিম (গোলকিপার), জনসন, বিপু (অধিনায়ক), আক্তার বাবু, সৈকত, সাদ্দাম, তরিকুল, সোহেল, সুজন, কে.সি, সাব্বির।

ভিডিও

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here