মেহেরপুরঃ

করোনা সন্দেহে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন না করে পালালেন জেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের পাঁচ আলেম। বুধবার বিকালে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় ঘটনাটি ঘটে ।

পরে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওসি (তদন্ত) লাশের দাফন কাজ সম্পর্ন করেন। দুপুরে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি নিয়ে ইদ্রিস আলী (৬০) নামের এক ব্যাক্তির মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া ব্যাক্তির নমুনা সংগ্রহ করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। ইদ্রিস আলীর বাড়ি মুজিবনগর উপজেলা ভবের পাড়া গ্রামে।

মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উসমান গনি জানান, মেহেরপুর জেলা ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃক করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের দাফন-কাফনের ক্ষেত্রে মুজিবনগরের জন্য আলেমদের নিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে একদিন আমার অফিসে ডেকে তাদের ব্রিফিংও করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তির কাফন-দাফনের জন্য আজ ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃক গঠিত পাঁচজনসহ মোট ছয়জন আলেমকে ডাকা হয়। করোনা সন্দেহে মৃত্যুর কথা শুনে পাঁচজন সদস্যই অপারগতা প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন “আগে থেকে তাঁদের বলা হয়নি করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে দাফন করতে হবে।

আমি তাদের অনেক বুঝানোর চেষ্টা করলাম, যে ব্যক্তি মারা গেছেন তিনি হয়ত করোনা আক্রান্ত না, শুধু সন্দেহের কারণে স্যাম্পল পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া এই কমিটিতো শুধু করোনার কারণে মৃত্যু বা করোনা সন্দেহ মৃত্যু ব্যক্তিদের দাফনের জন্য গঠিন হয়েছে। নানা অজুহাতে তারা একজন-দুইজন করে আমার কক্ষ ত্যাগ করে চলে যান। আমরা তখন খুব বিপদে পড়ে যাই এবং অত্যন্ত নিরুপায় হয়ে পড়ি।

তিনি আরো জানান, পরে আমি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রেজওয়ান আহমেদ ও থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম তিনজন একসাথে লাশ দাফনের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহন করি। হুজুরদের জন্য আনা পিপিই স্থানীয় মৃত ব্যক্তির আত্মীয়দের মধ্য থেকে চার যুবককে পরানো হয়। জানাজা পড়ানোর জন্য আমরা নিজেরাই প্রস্তুুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু শেষ মুহুর্তে গোপালনগর জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা তৌহিদুল ইসলাম এসে জানাজায় ইমামতি করেন।

অবশেষে আমরা তিনজন কর্মকর্তা ও পাঁচজন যুবক মিলে লাশ দাফনের কাজ শেষ করি। তিনি আরো বলেন, শুধু একটি বিষয় অজানা রইলো,পাঁচজন আলেম আমাদের কি শিক্ষা দিয়ে গেলেন তা বুঝতে পারলাম না।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here