নিজস্ব প্রতিবেদক:

কৃষক গঞ্জের আলী -সিনু দম্পতি গোয়ালের গরুগুলোয় ছিল একমাত্র সম্বল। সারাবছর পালন করে ১ টা ২ টা করে বিক্রির মাধ্যমে সংসার চালান। মাঠে কোন চাষযোগ্য জমি নেই। তাই স্বামী-স্ত্রী দুজনই সন্তানের মত করে লালন করে আসছেন গরুগুলো। কিন্ত মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে গোয়ালের ৯ টি গরুর মধ্যে ৭ টি গরু চুরি গেছে। আর দুটি ছোট বাছুর রেখে গেছে। এখন শুন্য গোয়ালে দাঁড়িয়ে তারা চোখের পানি ফেলছেন। এজন্য তিনি প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

কৃষক গঞ্জের আলীর বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ফয়লা গ্রামে। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থের স্ত্রী সিনু বেগম বাদি হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্থ গঞ্জের আলী জানান, প্রতিদিনের ন্যায় রাতে গরুগুলোকে খেতে দিয়ে নিজেরা ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর ভোর ৪ টার দিকে বাইরে বের হয়ে দেখেন গরু নেই। শুন্য গোয়াল পড়ে আছে। এরপর তাকিয়ে দেখেন বাড়ির মূলফটকের হুক কাটা দরজা আলগা করা। তখন বুঝতে পারেন গরুগুলো চুরি হয়ে গেছে। এরপর প্রতিবেশিদের ডাক দেন। তিনি আরও বলেন, সড়কের পাশে বাড়ি হওয়ায় স্বশস্ত্র অবস্থায় চোরেরা পিকআপে তুলে নিয়ে গেছে গরুগুলো। যা গাড়ির চাকার দাগ দেগে বোঝা যাচ্ছে। তিনি আরও জানান, ভোরের দিকে এক রিকসাওয়ালা রিকসা নিয়ে পাশের নরেন্দ্রপুর গ্রামে যাচ্ছিল। এ সময় চোরেরা তাকে ধরে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেধে রাখে। সে যেন হৈ চৈ করতে না পারে সে জন্য তার মুখ কাপড় দিয়ে বেধে ফেলে। সকালে রিকসাচালক যে, ভাষ্য দিয়েছেন তা অনেক ভয়ঙ্কর। কেননা চোরেরা নিজেরা মুখোশ পরিধান করে বড় বড় ধারালো দা ও দেশি অস্ত্রপাতি নিয়ে পিকআপে তুলে গরুগুলো নিয়ে যায়।

প্রতিবেশি জিল্লুর রহমান জানান, চোরেরা প্রাচীর ডিঙিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করেছে। এরপর বাড়ির গেটের হুক কেটেছে। কোন শব্দ হওয়ার ভয়ে বাড়ির বাইরে থাকা কাপড় দিয়ে গরুগুলোর মুখ বেধেছে তাও ফেলে যাওয়া কাপড় দেখে বোঝা যাচ্ছে। আবার রিকসাচালকের চোখ মুখ বাধলেও সে যেটা দেখে এখন বলছে গরুগুলো পিকআপে তুলে নিয়ে গেছে। যা হোক গঞ্জের আলী অত্যন্ত গরীব কৃষক। এখন তার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত মোতালেব হোসেন জানান, গরুচুরির ঘটনাটি সত্য। ভুক্তভোগী পরিবারের সিনু খাতুন বাদি হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি দুঃখজনক। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here