নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

১৩৮ বছরের পুরাতন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে এখনও জয়লাভ করতে পারেনি আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবারই সেখানে জয় পেয়েছেন বিএনপি, জামায়াত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী। এবারও দলের একাধিক প্রার্থী থাকায় জয় নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।

আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন, কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন এবং সংরক্ষিত নারী কউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৪৯৩। নয়টি ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৪টি।

নির্বাচনকে ঘিরে এরই মধ্যে সরগরম হয়ে উঠেছে পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া, মহল্লা ও গ্রাম এলাকা। প্রার্থীরা সহাবস্থানে থেকে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছেন আর দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। তবে এর মাঝেও প্রার্থীদের মধ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারণায় বাধা দেওয়াসহ কিছু অভিযোগও এসেছে। 

মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান আলী, নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র জাহিদুল ইসলাম জিরে এবং অপর বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সহিদুজ্জামান সেলিম মোবাইল প্রতীকে এবং বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকে সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সালাহউদ্দীন বুলবুল সিডল।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী সহিদুজ্জামান সেলিম জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগই চায়নি যে দলীয় কেউ মেয়র হোক। এখানে যোগ্য নের্তৃত্বের যেমন অভাব রয়েছে তেমনি নেতাকর্মীরা সব সময় দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে থাকে। যারা আগে সংসদ সদস্য ছিলেন এবং বর্তমানে আছেন তারা দলকে সংগঠিত করতে পারেননি। ফলে অভ্যন্তরীণ গ্রুপিংয়ে অগোছালো ছিলেন নেতাকর্মীরা। ঐক্যবদ্ধ কাজের মানসিকতা ছিল না। এতে দলের পক্ষে যেই দাঁড়াক তিনি পরাজিত হন।

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহাজাহান আলী জানান, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে আগামীতে সুন্দর একটা পৌরসভা উপহার দিতে ভোটাররা আমাকেই বেছে নেবেন। জনগণের ভোটে ইনশাল্লাহ আমিই জয়ী হবো।

ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রার্থী থাকায় জয় নিয়ে শঙ্কিত উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর মিলিয়ে ঝিনাইদহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আজম খান চঞ্চল জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা মার্কার জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত মনোনয়ন করেছেন। আমরা সকলেই চেষ্টা করছি সেই প্রার্থীকে বিজয়ী করতে। তবে দলের একাধিক নেতাকর্মী বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে থাকায় নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে চিন্তায় থাকতে হচ্ছে। আবার বিএনপির একাংশ বিদ্রোহী প্রার্থীদের ঘাড়ে ভর করেছে।

জেলা সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান জানান, স্থানীয় নির্বাচনে ব্যক্তি ইমেজকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হতো আগে। কিন্তু বর্তমান সময়ে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের কারণে নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে দলীয় মনোনয়নের বাইরে থেকেও নিজের ব্যক্তি ইমেজের দিক বিবেচনা করে একাধিক প্রার্থী ভোটের মাঠে লড়ে যাচ্ছেন। এটি প্রতিটা দলের জন্য ক্ষতিরই কারণ হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here