পাবনাঃ

পাবনায় গণধর্ষণ ও থানায় বিয়ে দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত সদর থানার ওসি ওবাইদুল হককে অবশেষে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দফতর মঙ্গলবার তাকে এই বরখাস্তের আদেশ দেয় এবং বুধবার সেটি পাবনা পুলিশ অফিসে আসে বলে জানা গেছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে জেলা প্রশাসন থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরই এই বরখাস্ত করা হল।

গত রোববার রাতে তদন্ত কমিটির প্রধান পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদ নেওয়াজ পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদের কাছে এই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

তদন্তে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন দলটি।

তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান ওসির বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মহাপুলিশ পরিদর্শকের পক্ষে এআইজি পারসোনাল ম্যানেজমেন্ট মঙ্গলবার ওসি ওবাইদুলকে বরখাস্তের আদেশ করেন। বরখাস্ত করার পরে তাকে একই আদেশে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে।

পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ জানান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে জেলা প্রশাসন থেকে গঠিত তিন সদস্যের গঠিত তদন্ত দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ভিকটিমের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এই তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেন। এরপর রোববার রাতে প্রতিবেদন আকারে জমা দেন।

ওইদিন রাতেই প্রতিবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেয়া হয় বলে তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ আগস্ট দিবাগত রাত থেকে আসামিরা তিন সন্তানের জননীকে ৪ দিন আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক সময় নির্যাতিতা পালিয়ে সদর থানায় আশ্রয় নেয় এবং অভিযোগ করেন। কিন্তু তার অভিযোগ আমলে না নিয়ে পাবনা সদর থানার ওসি ওবাইদুল হকের নির্দেশে পুলিশ ধর্ষক রাসেলের সঙ্গে তাকে বিয়ে দেন।

এ ঘটনাটি সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হওয়ায় জেলা পুলিশের নির্দেশে ৯ সেপ্টেম্বর তারিখে মেয়েটি বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি মামলা করেন। পরে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) ফিরোজ আহমেদকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

ওই তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে থানাতে বিয়ে দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ১২ সেপ্টেম্বর পাবনা সদর থানার ওসি ওবায়দুল হককে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত এবং এসআই একরামুল হককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ার প্রকাশ হওয়ার পর পুরো বিষয়টি তদন্তের জন্য মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশে পাবনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জাহিদ নেওয়াজকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিতে পাবনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইবনে মিজান ও জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. একেএম আবু জাফর ছিলেন।

এদিকে এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here