সবুজদেশ ডেস্কঃ
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশনের ব্যাপক অভিযানসহ সে দেশের সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে চার মাসে দেশে ফিরেছে ২৯ হাজার বাংলাদেশি।
অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা নয়! আটক করে আইনের আওতায় আনার জন্য বদ্ধপরিকর মাহাথির মোহাম্মদের সরকার। জানুয়ারি ২০২০ থেকে সাঁড়াশি অভিযানের আগে মালয়েশিয়া ত্যাগের সুযোগ যারা হাত ছাড়া করবে তাদের মালয়েশিয়ায় জেল জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
মালয়েশিয়া সরকারের চলমান ব্যাক ফর গুড কর্মসূচিতে বাংলাদেশের কর্মীদের উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া দিয়েছেন। বললেন দেশটির ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতো ইন্দিরা খায়রুল দাজাইমি দাউদ।
ব্যাক ফর গুড কর্মসূচির সর্বশেষ অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতো খায়রুল দাজাইমি উল্লেখ করেন যে, এই কর্মসূচির আওতায় ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২৯ হাজার বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী সাধারণ ক্ষমার আওতায় সুবিধা নিয়েছে এবং সর্বমোট আবেদন পড়েছে প্রায় ৩২ হাজার। বাংলাদেশের কর্মীদের এছাড়া প্রদানকে উৎসাহব্যঞ্জক উল্লেখ করে বলেন বাংলাদেশিসহ অন্যান্য যে সমস্ত কর্মীরা অবৈধ অবস্থায় রয়েছেন তাঁরা মালয়েশিয়া সরকারের এ’ সুযোগ গ্রহণ করবেন।
২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ইমিগ্রেশন মহাপরিচালকের সঙ্গে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম-এর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দীর্ঘ এক ঘন্টাব্যাপী আলোচনা সভায় সাধারণ ক্ষমার আওতায় বাংলাদেশের অবৈধ কর্মীদের দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য মালয়েশিয়া সরকারের ব্যাক ফর গুড কর্মসূচি ইমিগ্রেশন ডিটেইনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশিদের জন্য যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া দ্রুত নিশ্চিতকরণ; ছাত্র, প্রফেশনাল ও শ্রমিকদের ভিসা রিনিউ প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বাংলাদেশিদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ায় আরো সহায়তা প্রদানসহ অন্যান্য বিষয়াদি প্রাধান্য পায়।
আলোচনাকালে হাইকমিশনের কাউন্সেলর মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, কাউন্সেলর (শ্রম ২) মো. হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল, প্রথম সচিব (পলিটিক্যাল) জনাব রুহুল আমিন এবং মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের পলিসি এবং স্ট্র্যাটেজি পরিচালক মোহাম্মদ জুহাইরি মাত রাডি, পাসপোর্ট বিভাগ, ইমিগ্রেশন ডিটেনশন ডিপার্টমেন্ট, অপারেসি ও ইনগেস্টিগেশন এবং ফরেন এফেয়ার্স বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ব্যাক ফর গুড কর্মসূচি ঘোষণার পূর্বে দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক অভিবাসীদেরকে জেল, জরিমানা ও বিভিন্ন ধরণের আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হতো যা ছিল অত্যন্ত কষ্টকর।
মালয়েশিয়া সরকারের ব্যাক ফর গুড কর্মসূচির আওতায় সাধারণ ক্ষমার সুযোগ পেয়ে দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক অবৈধ অভিবাসীরা দারুনভাবে উচ্ছ্বসিত এবং তাঁদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পরিলক্ষিত হচ্ছে।
মান্যবর হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম মালয়েশিয়া সরকারের ব্যাক ফর গুড কর্মসূচির আওতায় অবৈধ অভিবাসীদের সাধারণ ক্ষমায় দেশে ফেরার সুযোগ দেয়ায় ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক প্রবাসীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে একই দিন (দিনে দিনেই) হাইকমিশন থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করা হয় এবং ব্যাক ফর গুড কর্মসূচি সুচারুভাবে সম্পন্ন করার জন্য হাইকমিশনের ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম নিরলসভাবে কাজ করছে।
হাইকমিশনারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন বুথের কার্যক্রম সাধারণ কর্মদিবসে সকাল ৮ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পুত্রজায়া, কুয়ালালামপুর, সেরেমবান, শাহ আলম এবং জহুর বারু ইমিগ্রেশনে সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত সেবা প্রদান করার সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেন।
হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম বিভিন্ন কারণে ডিটেনশন সেন্টারে আটক অভিবাসী বাংলাদেশি কর্মী যাতে দ্রুত আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মুক্ত হতে পারেন সে বিষয়ে ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালককে অনুরোধ করেন। মহাপরিচালক দাতো খায়রুল দাজাইমি এ বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।