ওআইসি চীনের উইঘুর মুসলিমদের গণহত্যার সহযোগী, অভিযোগ মার্কিন মুসলিমদের - ছবি : আলজাজিরা

সবুজদেশ ডেস্কঃ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম দলগুলো ইসলামী সহযোগিতা সংস্থাকে (ওআইসি) চীনের উইঘুরদের গণ-কারাবাসের বিষয়ে প্রতিবাদ করার অনুরোধ করেছে। তারা আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটিকে চীনের এই কর্মকাণ্ডে, অনেকে যাকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছেন, সহযোগিতার জন্যও অভিযুক্ত করেন।

ওআইসি ৫৭টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ নিয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থা। কোথাও মুসলিমরা নির্যাতিত হলে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে সংস্থাটি। ফিলিস্তিনি অঞ্চল দখল করার জন্য এটি ইসরাইলের সমালোচনা করেছে এবং ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে কথা বলেছে।

কিন্তু সৌদি আরবে সদর দফতর অবস্থিত সংস্থাটি চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশের বিষয়ে তাদের কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি।

মানবাধিকার কর্মীদের মতে, ইসলামী রীতিনীতি উচ্ছেদকরণ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এবং জোরপূর্বকভাবে সম্প্রদায়টিকে মিশিয়ে দিতে জিনজিয়াংয়ে এক মিলিয়নেরও বেশি উইঘুর এবং অন্যান্য তুর্কিভাষী মুসলিমদের ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে।

কিন্তু গত ২০১৯ সালের মার্চে একটি প্রতিনিধিদলের চীন সফরের পর এক বিবৃতিতে মুসলিম নাগরিকদের যত্নের ক্ষেত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে ওআইসি।

কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্সসহ যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সংগঠনগুলোর একটি জোট অভিযোগ করেছে, চীনের ক্ষমতার কাছে ওআইসি কাপুরুষ হয়ে গেছে।

‘এটা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, মুসলিম বিশ্বের উপর চীনের অর্থনৈতিক দখল রয়েছে এবং প্রতিটি মুসলিম দেশকে চীন এতটাই আলাদা করে ফেলতে সক্ষম হয়েছে যে, তারা উইঘুর সঙ্কটের বিষয়ে ঠোঁট নাড়াতেও ভয় পাচ্ছে,’ আমেরিকান মুসলিম স্কলার এবং মানবাধিকার কর্মী ওমর সুলেইমান বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

উইঘুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেখানে মুসলিম দেশগুলো ফিলিস্তিন সঙ্কটের মতো বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবে সেখানে তারা অত্যাচারীদের সাহায্য করে যাচ্ছে। বিশেষ করে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে।’

উইঘুর আমেরিকান প্রচারক রুশন আব্বাস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, চীন তার বিশাল বেল্ট এবং রোড অবকাঠামো-নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করায় এখন বিশ্ববাসী মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের নীতিগুলো দেখতে পাবে।

‘ক্রয় এবং হুমকিতে চীনের অতীত রেকর্ড রয়েছে। উইঘুরদের গণহত্যা চীনের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়, বরং এটি একটি মানবিক ইস্যু,’ বলছিলেন আব্বাস। তিনি জানান, উইঘুরদের পক্ষে তার কাজের কারণে চীন সরকার তার বোনকে আটক করেছে।

চীনের ক্রমবর্ধমান প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উইঘুরদের সাথে চীনের আচরণকে জার্মানীর নাৎসীদের কর্মকাণ্ডের সাথে তুলনা করেছে এবং ওআইসি’র নিশ্চুপ থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ইসলামী বিশ্বের বিরল নেতা, যিনি চীনের সমালোচনা করেছেন। অন্যদিকে মালয়েশিয়া বলেছে, তারা উইঘুরদের হস্তান্তর করবে না।

মুসলিমদের রাখা ক্যাম্পগুলোকে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে বর্ণনা করেছে চীন। তারা বলছে, পাশ্চাত্য দেশগুলোর মতো তারাও ‘ইসলামী চরমপন্থার প্ররোচনা কমাতে’ কাজ করছে।

সূত্র : আলজাজিরা

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here