হিজামা এন্ড হোমিও সেন্টারে আজিজুর রহমানকে হত্যা করে আশরাফ আলি বিশ্বাস (ডানে)

মাগুরা:

মাত্র আড়াই হাজার টাকার জন্যে ব্যবসায়িক ক্লায়েন্ট মাগুরা শহরের বেলতলার হোমিও ডাক্তার আশরাফ আলি বিশ্বাস আজিজুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর ডাক্তার আশরাফ একাই তার শরীর ৬ খণ্ড করে আলাদা তিনটি বস্তায় করে পৃথক দুটি স্থানে ফেলে দেয়।

৫ জুন দুপুরে ঘটনাটি ঘটে তারই হিজামা এন্ড হোমিও সেন্টারের কাঁচে ঘেরা ঘরে। হত্যাকাণ্ডের ৯ দিন পর সোমবার দুপুরে মাগুরার সংকোচখালি গ্রামের যুবক আজিজুর রহমানের খুনি ডাক্তার আশরাফ আলি বিশ্বাসকে আটক করেছে র‌্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন-৬ এর সদস্যরা।

র‌্যাব সদস্যরা জানায়, সামান্য আঘাতের পর আজিজুর মারা গেলে ডাক্তার আশরাফ ধারালো ছুরি দিয়ে শরীর থেকে হাত-পা এবং মাথা বিচ্ছিন্ন করে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ফেলে আসে। পরে বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে থাকার পর সোমবার দুপুরে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পথে তাকে আটক করা হয়।

মাগুরার সদর উপজেলার মালিকগ্রামের আহমেদ আলি বিশ্বাসের ছেলে আশরাফ আলি বিশ্বাস র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ার পর হত্যাকাণ্ডের বর্ণনাসহ তার স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

তার বর্ণনায় জানা যায়, মাগুরার সদর উপজেলার সংকোচখালি গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে আজিজুর একটি মালয়েশিয়ান কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট স্প্রের প্রোডাক্ট বিক্রি করতেন। যার ক্রেতা ছিলেন মাগুরার বেলতলার হোমিও ডাক্তার আশরাফ আলি।

ওই কোম্পানির তিনটি প্রোডাক্ট বিক্রি করে দিলে ৩ হাজার টাকা দেয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতিতে ডাক্তার আশরাফ কথা অনুযায়ী ৩টি প্রোডাক্ট বিক্রি করে দেয়। কিন্তু ৫ জুন শনিবার আজিজুর তার হোমিও চেম্বারে উপস্থিত হয়ে ৩ হাজার টাকার পরিবর্তে মাত্র পাঁচশত টাকা দিলে ডাক্তার আশরাফ ক্রোধের বসে তার মাথায় আঘাত করে। এতে সে অচেতন হয়ে পড়লে চেম্বারের দরজা আটকিয়ে ধিরে ধিরে সে তার ধারালো ছুরি দিয়ে শরীর ৬ খণ্ড করে।

হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৬ জুন রোববার মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার কালিকান্দি গ্রামের একটি পুকুর পাড় থেকে দুটি বস্তায় আজিজুর রহমানের মাথাবিহীন শরীর এবং একটি পা ও দুটি হাত উদ্ধার করে পুলিশ।

সোমবার সন্ধ্যায়  সদস্যরা ডাক্তার আশরাফ আলির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মাগুরা সদর উপজেলার ঘোড়ানাছ গ্রামের রাস্তার একটি কালভার্টের মধ্যে লুকিয়ে রাখা অবশিষ্ট একটি পা এবং মাথা উদ্ধার করে।

খুলনা র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল রওশনুল ফিরোজ জানান, সোমবার দুপুর ৩টার দিকে ডাক্তার আশরাফ আলি বিশ্বাসকে আটক করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর সে একাই আজিজুরের শরীর ৬ খণ্ড করে। তার সঙ্গে আর কেউ ছিল না এবং অতি সংগোপনে এই কাজটি সম্পন্ন করতে সম্পন্ন হয় বলে সে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here