যশোরঃ

অভয়নগরে শ্বশুরবাড়িতে ঈদে বেড়াতে এসে মো. শরিফুল ইসলাম (৩৫) নামে এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে শংকরপাশা গ্রামের শাহিনপাড়ায় শ্বশুর আবুল হোসেনের (হোসনা) বাড়ি থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে অভয়নগর থানা পুলিশ।

মৃত শফিকুল ইসলাম নাভারনের জামতলা গ্রামের মো. হামিদ মোড়লের ছেলে।

শফিকুলের স্ত্রী শিল্পী বেগম বলছেন, ‘আমার সাথে আট বছর আগে শফিকুলের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে আমার স্বামী মালয়েশিয়া চলে যায়। তারপর মাঝে-মধ্যে দেশে আসে। আমাদের ছয় বছরের একটা ছেলে রয়েছে। আমার সন্তানকে নিয়ে আমি আমার বাপের বাড়িতে থাকি। পাঁচ মাস আগে আমার স্বামী দেশে ফিরে আসে। ঈদের পরের দিন আমাদের বাড়িতে এসেছিল। আমি তাকে এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করার কথা বলি। কিন্তু সে তার বাড়িতে চলে যেতে চায়। এনিয়ে আমাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। গতকাল রাতে আমরা যখন ঘুমিয়ে পড়েছি তখন আমার স্বামী ঘরের আড়ার সাথে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সকালে টের পেয়ে আমি তাকে নামাই এবং দেখি সে মারা গেছে।’

তবে এলাকাবাসী ভিন্ন কথা বলছেন। তাদের ভাষ্য, স্বামী বিদেশে থাকায় শিল্পী বাবার বাড়িতে থাকেন। ১৩ বছরের প্রবাস জীবনে শরিফুল দশ ভরি সোনা পাঠান স্ত্রী শিল্পীর কাছে। অনেক টাকাপয়সাও পাঠান। দেশে আসার পর সোনা ও টাকার হিসাব চান শফিকুল। এখান থেকে শুরু হয় দুইজনের মধ্যে মনোমানিল্য।

একই গ্রামের বাসিন্দা রাসেল শেখ বলেন, ‘রাতে মারা গেল, অথচ সকাল আটটায় আশপাশের লোকজন জানতে পারে। বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায়, লাশ বিছানায় রয়েছে। কিন্তু মৃতের শ্বশুর, শ্যালক বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। তাছাড়া এই পরিবারের নামে বিভিন্ন ধরনের অপবাদ ও অভিযোগ রয়েছে। আমাদের কাছে বিষয়টি আত্মহত্যা নয়, হত্যা বলে মনে হয়েছে।’

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এই মৃত্যুর ঘটনা রহস্যজনক মনে হচ্ছে। আমি মনে করি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাক।’

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শামীম হাসান বলেন, ‘সকালে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যেয়ে দেখি মৃতদেহ বিছানায় শোয়ানো অবস্থায় আছে। তবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বলা যাবে না।’

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here