নারায়ণগঞ্জঃ

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক হাসিনা রহমান সিমু। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেও তার নানা ছিলেন জামায়াতের নেতা। তার নানা জাফর সাদেক ভূঁইয়া ছিলেন বন্দর থানা জামায়াতের আমির।

জামায়াত নেতার নাতনি হয়েও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন হাসিনা রহমান সিমু। জেলা শ্রমিক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদকের পদে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এদিকে সপরিবারে থাকেনও নানাবাড়িতে। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি একাধিক সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন অটিজম শিশুদের নিয়ে একটি স্কুল। আরও প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘সিমু আনন্দধাম বৃদ্ধাশ্রম’।

সিমু নিজের পরিচয় গোপন রেখে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। জেলা শ্রমিক লীগের গুরুত্বপূর্ণ একটি পদেও রয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানা যায়, বছরখানেক আগে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, যুদ্ধাপরাধী কেউ বা জামায়াতে ইসলামীর কেউ যেন তাদের দলে যোগ দিতে না পারে। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন কোনো নেতার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী লীগের যোগদানের বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা থাকে। বারবার এসব সুবিধাবাদীর সম্পর্কে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনাও দেয়া হয়।

২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিএনপি-জামায়াত থেকে কাউকে দলে নিতে নিষেধও করেন। প্রায় ১০ বছর আগে মারা যান বন্দরের কদম রসুল এলাকার জাফর সাদেক ভূঁইয়া। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার বাড়িতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও জেলাপর্যায়ের নেতাদের নিয়মিত মিটিং হতো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সামাজিক সংগঠন আনন্দধামের নির্বাহী চেয়ারম্যান হাসিনা রহমান সিমু। হাসিনা অটিজম চাইল্ড কেয়ার নামে একটি স্কুলও চালান। মূলত সমাজসেবী হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। আওয়ামী লীগের জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে সখ্যতার কারণে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে উপস্থিত থাকেন।

চার বছর আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের হাত ধরে শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।

গত বছরের ১৫ জানুয়ারি জেলা শ্রমিক লীগের নতুন কমিটিতে মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেন। এ কমিটির সভাপতি কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক মাঈনুদ্দিন আহমেদ বাবুল।

জাফর সাদেক ভূঁইয়া জামায়াত নেতা ছিলেন বিষয়টি স্বীকার করে জেলা ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ বলেন, ‘জাফর সাদেক জামায়াত নেতা ছিলেন এটি ঠিক। আমি যদি মুক্তিযোদ্ধা হই কিন্তু আমার বাপে যদি রাজাকার হয় সে ক্ষেত্রে তো তুলনা দিলে চলবে না।

জামায়াতের রাজনীতির কাউকে দলে নেয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে শুক্কুর মাহমুদ বলেন, ‘আমি একটা মিটিংয়ে আছি। এ বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারব না।

এ বিষয়ে হাসিনা রহমান সিমু বলেন, আমার নানা জামায়াতের নেতা ছিলেন, আমি নই। কোন স্বার্থান্বেষীমহল ভুল তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ লেখাচ্ছে। আমাকে হয়রানি করতেই এ অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে আমি মনে করি।

তিনি আরও বলেন, আমি যখন বুঝতে শিখেছি, তখন থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসি। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আমাকে পাগল করেছে, তাই আমি আওয়ামী লীগ করি। বঙ্গবন্ধু দেশবাসীর মঙ্গলে নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন। আমিও বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করে সমাজসেবামূলক কাজ করি।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here